Advertisement
E-Paper

হাতি-মানুষ সংঘাত এড়ানোর পথ খুঁজতে কর্মশালা

হাতি-মানুষে সংঘাতে ক্ষতিও হয় প্রচুর। সমস্যা সমাধানের পথ খুঁজতে ডব্লুডব্লুএফ এবং বন দফতরের যৌথ উদ্যোগে দু’দিনের এক কর্মশালা শুরু হল মেদিনীপুরে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৩ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০৮:৩০
লোকালয়ে হাতির তাণ্ডব। —ফাইল ছবি

লোকালয়ে হাতির তাণ্ডব। —ফাইল ছবি

কখনও দাঁতালের হামলায় মানুষের মৃত্যু হচ্ছে। আবার কখনও পাল্টা আক্রমণে প্রাণ যাচ্ছে হাতিরও।

হাতি-মানুষে সংঘাতে ক্ষতিও হয় প্রচুর। সমস্যা সমাধানের পথ খুঁজতে ডব্লুডব্লুএফ এবং বন দফতরের যৌথ উদ্যোগে দু’দিনের এক কর্মশালা শুরু হল মেদিনীপুরে। বুধবার গোপগড় ইকোপার্কের সভাঘরে আয়োজিত ‘সেফ’ শীর্ষক কর্মশালার সূচনায় ছিলেন সন্দীপ সুন্দ্রিয়াল, শক্তিশঙ্কর দে প্রমুখ শীর্ষ বনকর্তা। ছিলেন অ্যাশলে ব্রুকস, নিতিন শেখর প্রমুখ শীর্ষ ডব্লুডব্লুএফ-এর কর্তা।

সন্দীপ সুন্দ্রিয়ালের কথায়, “হাতি খুব বুদ্ধিমান। সংঘাত এড়াতে হলে সঠিক পরিকল্পনা প্রয়োজন। আগামী দিনের জন্যই এটা জরুরি।” শক্তিশঙ্কর দে বলছিলেন, “সঙ্ঘাতটা জ্বলন্ত সমস্যা। বিশেষ করে এই অঞ্চলে। বছরের ৩৬৫ দিনের মধ্যে ৩০০ দিনই এই সমস্যা দেখা দেয় এখানে।’’ তাঁর কথায়, ‘‘এক সময় খাবারের খোঁজে দলমা থেকে এখানে হাতির দল আসত। এখন হাতিগুলোকে আর দলমার হাতি বলা যাবে না। ওগুলো বাংলার হাতি হয়ে যাচ্ছে। কারণ, হাতিগুলোর অনেকদিন এখানে থাকছে।” কর্মশালা থেকে উদ্যোক্তাদের বার্তা, ‘সেফ সিস্টেম, সেফ এলিফেন্ট’।

সমস্যা সমাধানে কী কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে এখনও পর্যন্ত? বন দফতর সূত্রে খবর, মূলত পাঁচটি ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এক, হাতিদের দূর থেকে লক্ষ্য করার জন্য কিছু নজরমিনার তৈরি হয়েছে। দুই, ধান খেত রক্ষার জন্য সৌরচালিত বৈদ্যুতিক বেড়া তৈরি করা হয়েছে। তিন, ওই একই উদ্দেশে কিছু এলাকায় পরিখা তৈরি করা হয়েছে। চার, খড় এবং লঙ্কা গুঁড়ো মিশ্রণ জ্বালিয়ে হাতিদের দূরে রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছে। পাঁচ, এসএমএস-এর মাধ্যমে গ্রামবাসীদের সতর্কীকরণের ব্যবস্থা করা হয়েছে কিছু এলাকায়। মেদিনীপুরের ডিএফও রবীন্দ্রনাথ সাহার কথায়, “হাতি-মানুষ সঙ্ঘাত এড়াতে নানা প্রচার চালানো হয়। আগামী দিনে আরও বেশি প্রচার চালানো হবে। প্রচারে জোর আনতে গ্রামবাসীদের সাহায্য নেওয়া হবে।” দফতর সূত্রে খবর, হাতি কোথাও থাকলে কী করা উচিত, কী করা উচিত নয়, সেটিই হবে প্রচার অভিযানের মূল বিষয়। ডব্লুডব্লুএফ- এর কর্তা রাতুল সাহা বলেন, “হাতি- মানুষে সংঘর্ষ কমানোর জন্য পরিকল্পনা প্রয়োজন। সেই জন্যই এই কর্মশালা।” কেন দলমার পাল এসে বেশি দিন থেকে যাচ্ছে? বন দফতরের এক সূত্রের ব্যাখ্যা, এর পিছনে কয়েকটি কারণ রয়েছে। যেমন এক, জঙ্গলে হাতির বাস করার মতো পছন্দসই পরিবেশের সার্বিক উন্নতি হয়েছে। দুই, অফুরন্ত খাদ্যের জোগান। জঙ্গল ও পাশ্ববর্তী চাষাবাদের অঞ্চল থেকে জলের পর্যাপ্ত জোগান মিলছে। তিন, জঙ্গল নিকটবর্তী লোকালয়ে অসংখ্য দেশিয় মদের ভাটি। যা খুব সহজেই বুনো হাতির দলকে আকৃষ্ট করছে।

মেদিনীপুরের এক বনকর্তার স্বীকারোক্তি, “শুধু মানুষের মৃত্যু বা জখম হওয়া নয়। হাতির হানায় গবাদি পশুর মৃত্যু, ঘরবাড়ির ক্ষতি, ফসলের ক্ষতি ঘটছে। এটা চিন্তারই। সমাধানে যেমন আগের অবস্থা দেখতে হবে, তেমন আগামী দিনে কী হতে চলেছে তাও দেখতে হবে। আসলে হাতির সংখ্যা এবং তাদের স্থায়িত্বকালটা বড় সমস্যা।”

Workshop Erlephant Man Conflict Midnapore
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy