বিভ্রান্তিকর: দেওয়ালে লেখা আবর্জনা ফেলিবেন। তবে তির চিহ্ন যে দিকে, সেই ভ্যাটে নয়, জঞ্জাল ফেলা হচ্ছে রাস্তায়। নিজস্ব চিত্র
পূর্ত দফতরের একটি সরকারি পাঁচিলের গায়ে জ্বলজ্বল করছে বিজ্ঞপ্তি ‘আবর্জনা ফেলিবেন’! কিন্তু ওই বিজ্ঞপ্তির সামনে কোনও ভ্যাট বা জঞ্জাল ফেলার জায়গা কিন্তু নেই। অথচ জঞ্জাল পড়ে রয়েছে। কয়েকমাস আগে কিছুটা দূরে একটি বড় ভ্যাট তৈরি করেছে পূর্ত দফতর। রাস্তার দিকে মুখ খোলা ওই ভ্যাটের নোংরা আবর্জনা রাস্তার মাঝ বরাবর ছড়িয়ে পড়েছে। দুর্গন্ধে চলা দায়। যানবাহন চলাচলেও সমস্যা হচ্ছে। অথচ পুর-প্রশাসনের কোনও হেলদোল নেই। মেদিনীপুর শহরের বাসস্ট্যান্ড থেকে উত্তর দিকে পুলিশ লাইন যাওয়ার ওই রাস্তার ধারে আগে জঞ্জাল ফেলা হত। পূর্ত দফতরের পাঁচিলের গায়ে জঞ্জাল ফেলার নির্দিষ্ট জায়গায় আবর্জনা ফেলতে বলার লেখাটি অনেক আগে থেকেই রয়েছে। ওই দেওয়ালের কয়েক জায়গায় আবার লেখা রয়েছে, ‘আবর্জনা ফেলিবেন না।’ কয়েক মাস আগে রাস্তাটি সংস্কার করে ফুটপাথ তৈরি হয়েছে। পুরনো আবর্জনা ফেলার জায়গাটি এখন ফুটপাথ হয়ে গিয়েছে। প্রায় পঁচিশ ফুট দূরে নোংরা ফেলার জন্য নতুন কংক্রিটের ভ্যাটটি তৈরি হয়েছে। পুরনো লেখাটি না মোছার ফলে বিভ্রান্তি চরমে। এর ফলে ভ্যাটের পরিধি ছাড়িয়ে যেখানে সেখানে জঞ্জাল ফেলা হচ্ছে বলে অভিযোগ। এমনকী ‘আবর্জনা ফেলিবেন’ লেখা দেখে ফুটপাথেও জঞ্জাল ফেলে দিয়ে যাচ্ছেন কেউ কেউ।
পুরসভার তিন নম্বর ওয়ার্ডের ওই ভ্যাটের কাছেই রয়েছে পুলিশ সুপার, মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক-সহ প্রশাসনের একাধিক কর্তা-ব্যক্তিদের আবাসন। পুর কর্তৃপক্ষের অবশ্য দাবি, জঞ্জাল ফেলার আগের জায়গায় আবর্জনা ফেলতে বলার লেখাটি স্থানীয় ভাবে কেউ লিখে থাকতে পারেন। তবে ভ্যাটটি সরে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পুরনো লেখাটি মুছে দেওয়া উচিত ছিল। পুরসভা সূত্রের খবর, শহরের স্থানীয় কয়েকটি এলাকার জঞ্জাল সংগ্রহ করে ওই ভ্যাটে ফেলেন পুরসভার সাফাই কর্মীরা। তারপর কয়েক দিন অন্তর পুরসভার গাড়িতে করে জঞ্জাল তুলে নিয়ে গিয়ে ফেলা হয় শহরের অদূরে ডাম্পিং গ্রাউন্ডে। স্থানীয়দের অবশ্য অভিযোগ, নিয়মিত ভ্যাটের জঞ্জাল সাফ করা হয় না। সেই কারণে রাস্তা জুড়ে নরক কুণ্ডের চেহারা। পুর কর্তৃপক্ষের পাল্টা দাবি, শহরের বাড়ি-বাড়ি জঞ্জাল সংগ্রহ করে ওই ভ্যাটে ফেলা হয়। নিয়মিত ভ্যাট পরিষ্কারও করা হয়। কিছু বাসিন্দা নিয়মিত ভ্যাট সংলগ্ন রাস্তায় ও ফুটপাথে আবর্জনা ফেলে দিয়ে চলে যাচ্ছেন বলে সমস্যা হচ্ছে।
ফুটপাথের লাগোয়া সরকারি দেওয়ালে আবর্জনা ফেলতে বলার পুরনো লেখাটি না মোছার ফলে বিভ্রান্তি দেখা দিয়েছে বলে মানছেন স্থানীয় ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সিপিএম পুরপিতা জয়ন্ত মজুমদার। তিনি বলেন, “পুরসভাকে নিয়মিত ভ্যট পরিষ্কার করতে হবে। শহরকে পরিচ্ছন্ন রাখতে হলে নাগরিকদেরও সচেতন হতে হবে। নির্দিষ্ট জায়গায় আবর্জনা ফেলা উচিত।”
মেদিনীপুরের পুরপ্রধান প্রণব বসু বলেন, “লেখা-বিভ্রান্তির দায় আমাদের নয়, স্থানীয়ভাবে কউ লিখে থাকতে পারে। সমস্যা মেটাতে পদক্ষেপ করব।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy