Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
BJP

কুনারকে ‘ওয়াই’  নিরাপত্তার সুপারিশ

সম্প্রতি কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা দফতরের তরফে এক রিপোর্টে স্পষ্ট করে দেওয়া হয়েছে, ঝাড়গ্রামের সাংসদের নিরাপত্তা ব্যবস্থা খুবই সাদামাঠা। রাজ্যের দেওয়া সেই নিরাপত্তায় সন্তুষ্ট নন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা।

এখন এ ভাবেই থাকেন বিজেপি সাংসদ। নিজস্ব চিত্র।

এখন এ ভাবেই থাকেন বিজেপি সাংসদ। নিজস্ব চিত্র।

কিংশুক গুপ্ত
 ঝাড়গ্রাম শেষ আপডেট: ২৫ জানুয়ারি ২০২১ ০৫:৪৯
Share: Save:

সাংসদ হওয়ার পরে রাজ্য সরকারের থেকে ‘নিয়মরক্ষার নিরাপত্তা’ পান ঝাড়গ্রামের বিজেপি সাংসদ কুনার হেমব্রম। বুধবার ঝাড়গ্রাম শহরে জঙ্গলমহল উৎসবের ভরা মাঠেও কুনার এসেছিলেন মাত্র একজন নিরাপত্তা রক্ষী নিয়ে। তবে ‘হিডেন আর্মস’-এ সাদা পোশাকের দু’জন মাত্র কনস্টেবল জঙ্গলমহল এলাকার সাংসদের সুরক্ষায় যথেষ্ট নয় বলেই মনে করছে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা দফতর। তাই তাঁকে কেন্দ্রের ‘ওয়াই ক্যাটাগরি’র নিরাপত্তা দিতে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা দফতরের তরফে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকে সুপারিশ করা হয়েছে।

সম্প্রতি কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা দফতরের তরফে এক রিপোর্টে স্পষ্ট করে দেওয়া হয়েছে, ঝাড়গ্রামের সাংসদের নিরাপত্তা ব্যবস্থা খুবই সাদামাঠা। রাজ্যের দেওয়া সেই নিরাপত্তায় সন্তুষ্ট নন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা। তাঁরা মনে করেন, বিধানসভা ভোটের আগে সাংসদকে কেন্দ্রের ‘ওয়াই ক্যাটাগরি’ নিরাপত্তা দেওয়া প্রয়োজন। সূত্রের খবর, কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা দফতরের প্রস্তাব পাওয়ার পরে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক এ বিষয়ে পর্যালোচনা শুরু করেছে। কুনারের পাশাপাশি, ঝাড়গ্রাম জেলা বিজেপির সভাপতি সুখময় শতপথী ও জেলা সাধারণ সম্পাদক অবনী ঘোষকেও কেন্দ্রীয় বাহিনীর ‘এক্স ক্যাটাগরি’র নিরাপত্তা দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা দফতর। কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা দফতরের রিপোর্টে বলা হয়েছে, ঝাড়গ্রামের সাংসদ ও জেলার দুই বিজেপি নেতার ‘লাইফ থ্রেট’ রয়েছে।

বিজেপির সাংসদ হওয়ার পরে দিলীপ ঘোষ (মেদিনীপুর), সৌমিত্র খাঁ (বিষ্ণুপুর), জ্যোর্তিময় সিং মাহাতোরা (পুরুলিয়া) কেন্দ্রীয় বাহিনীর নিরাপত্তা নিয়েছেন। কুনার অবশ্য কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা নেননি। মাওবাদী প্রভাবিত এলাকায় সাধারণত রাজ্য গোয়েন্দা-রিপোর্টের ভিত্তিতে রাজনৈতিক দলের নেতা ও জনপ্রতিনিধিদের নিরাপত্তা দেওয়া হয়। ২০১৯-এ কুনার সাংসদ হওয়ার মাস তিনেক পরে রাজ্যের তরফে তাঁর জন্য দু’জন সাদা পোশাকের কনস্টেবল বহাল করা হয়। সাংসদের সঙ্গে থাকাকালীন ওই দুই নিরাপত্তা কর্মী গোপনে ছোট আগ্নেয়াস্ত্র সঙ্গে রাখেন। এ ছাড়া ঝাড়গ্রাম শহর লাগোয়া গ্রামীণ এলাকার কন্যাডোবায় সাংসদের বাড়িতে দু’জন করে আট ঘন্টা অন্তর ছ’জন সিভিক ভলান্টিয়ার মোতায়েন থাকে। সুখময় ও অবনীর অবশ্য কোনও নিরাপত্তা রক্ষী নেই।

স্বরাষ্ট্র দফতর থেকে কুনারকে ইতিমধ্যে নিরাপত্তার বিষয়টি জানানো হয়েছে। সাংসদ বলেন, ‘‘কেন্দ্রীয় বাহিনীর নিরাপত্তা দেওয়ার বিষয়টি ‘আন্ডার প্রসেস’ রয়েছে বলে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র দফতর থেকে আমাকে চিঠি দিয়ে জানানো হয়েছে।’’ এ বিষয়ে রাজ্য পুলিশের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘রাজ্যের গোয়েন্দা রিপোর্টের ভিত্তিতে সাংসদের জন্য দু’জন নিরাপত্তা কর্মী বহাল রয়েছে। নিরাপত্তা কর্মী বাড়ানোর জন্য সাংসদের তরফে আমাদের কাছে কোনও প্রস্তাব আসেনি।’’

সাংসদের কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা নিয়ে রাজনৈতিক চাপানউতোরও শুরু হয়েছে। জেলা তৃণমূলের কো-অর্ডিনেটর অজিত মাহাতোর কটাক্ষ, ‘‘বিজেপি-র নেতা-জনপ্রতিনিধিরা ভোটের আগে নানা ষড়যন্ত্র করছেন। এলাকায় কালো টাকা ঢোকানোর চেষ্টা করছেন। সে সব আড়াল করতেই তাঁরা কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা চাইছেন।’’ অভিযোগ উড়িয়ে বিজেপি-র জেলা সভাপতি সুখময় বলেন, ‘‘রাজ্য পুলিশে আম জনতারই ভরসা নেই। আর কুনারবাবুর সংসদীয় ক্ষেত্রের মধ্যে মাওবাদী প্রভাবিত এলাকা রয়েছে। তা-ও তাঁকে রাজ্য থেকে উপযুক্ত নিরাপত্তা দেওয়া হয়নি। অথচ তৃণমূলের মেজো-সেজো-ছোট নেতারাও পুলিশের এসকর্ট পান। এটা তো দ্বিচারিতা।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

BJP Jhargram
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE