ঢলবাঁধে জলাশয়ের ধারে এ ভাবেই মদের বোতল পড়ে থাকতে দেখা গেল। নিজস্ব চিত্র
বিপত্তির শুরু বড়দিনেই। চড়ুইভাতি করতে এসে জলে ডুবে মৃত্যু হল এক যুবকের। ঘটনাস্থল চন্দ্রকোনার ঢলবাঁধ।
চন্দ্রকোনা শহর লাগোয়া ঢলবাঁধে ঘন জঙ্গলের মাঝেই রয়েছে বড় একটি জলাশয়। সেখানে বড়দিন-বর্ষশেষের সময়টায় প্রতি বারই পিকনিক পার্টির ভিড় জমে। স্থানীয় পেকালা গ্রামের জনা দশেক যুবক মঙ্গলবার সেখানেই বনভোজন করতে গিয়েছিলেন। বন্ধুদের সঙ্গে পাড়ে রান্নার কাজে ব্যস্ত ছিলেন হারু মণ্ডল (২৬)। স্থানীয় সূত্রে খবর, রান্নাবান্নার ফাঁকেই চলছিল মদ্যপান। অভিযোগ, মদ্যপ অবস্থাতেই জলাশয়ে নেমেছিলেন হারু। পরে তলিয়ে যান। কর্তব্যরত সিভিক ভলান্টিয়াররা ওই যুবককে উদ্ধার করে চন্দ্রকোনা গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যান। তবে ততক্ষণে হারুর মৃত্যু হয়েছে। দেহ ময়নাতদন্তে পাঠিয়েছে পুলিশ। পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলা পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়া বলেন, “মদ্যপ অবস্থায় স্নানে নেমে এক যুবক তলিয়ে গিয়েছিলেন। সিভিক ভলান্টিয়াররা পরে তাঁর দেহ উদ্ধার করে। ওই এলাকায় নজরদারি আরও বাড়ানো হবে।”
শীতের মরসুমে জেলার পিকনিক স্পটগুলিতে অবাধে মদ্যপান ও তার জেরে আশপাশের পরিবেশ নষ্ট হওয়া এবং নিরাপত্তাহীনতার অভিযোগ বহু দিন ধরেই রয়েছে। সেই মদ্যপানের জেরেই বড়দিনে এক যুবকের মৃত্যু ঘিরে শোরগোল পড়েছে।
এ দিন সকাল দশটার পর থেকেই ঢলবাঁধের বড় জলাশয়ের আশপাশে পযর্টকদের ভিড় জমছিল। অনেকেই এসেছিলেন সপরিবার। হইহুল্লোড় চলছিল। বাচ্চারাও স্নান করছিল। তারই মধ্যে ঘটে যায় এই ঘটনা। প্রত্যক্ষদর্শী শ্যামল সরকার বলেন, “আচমকাই ওই যুবক পুকুরের মাঝে চলে যান। তারপর দেখি ছটফট করতে করতে ডুবে যাচ্ছেন। একসময় তলিয়েই যান।” হারুর এক বন্ধুর কথায়, “পিকনিকে আসা নিয়ে হারুর উৎসাহের অন্ত ছিল না। মাংস কেনা থেকে বাজার করা, সব কাজেই ও ছিল। কোত্থেকে যে কী হয়ে গেল!’’
পুলিশ-প্রশাসন জানিয়েছে, জেলার পিকনিক স্পটগুলিতে প্রকাশ্যে মদ্যপান নিষিদ্ধ করা হয়েছে। কিন্তু সে নির্দেশ যে খাতায়কলেই আটকে রয়েছে, এ দিনের ঘটনা তার প্রমাণ। অভিযোগ, বহু ক্ষেত্রে নজরদারি নেই। অনেক জায়গায় নজরদারির তোয়াক্কা না করেই পিকনিকের আসরে দেদার মদ্যপান চলছে। আড়ালে নয়, চন্দ্রকোনার ঢলবাঁধ, ধামকুড়িয়া, ঘাটালের হরিসিংহপুর পার্ক, গড়বেতার গনগনি, পরিমলকানন-সহ জেলার ছথোট-বড় সব পিকনিক স্পটেই প্রকাশ্যে বসছে মদের আসর। মদ্যপ অবস্থায় বাইক চালিয়ে হুল্লোড় থেকে স্নানে নেমে বিপত্তি, ঘটছে সবই।
ঢলবাঁধের ঘটনার পরে মৃত যুবকের এক বন্ধুর উপলব্ধি, “পিকনিকে মদ্যপান সত্যিই বন্ধ হওয়া দরকার। না হলে এমন দুর্ঘটনা বাড়তেই থাকবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy