Advertisement
১৯ মে ২০২৪

অরবিন্দের জেল হেফাজতের নির্দেশ

মাওবাদী তাত্ত্বিক নেতা অরবিন্দ বাছাড়কে ১২ দিনের জন্য জেল হেফাজতের নির্দেশ দিল ঝাড়গ্রাম এসিজেএম আদালত। বুধবার পশ্চিম মেদিনীপুরের নয়াগ্রাম থানার একটি দেশদ্রোহ ও সশস্ত্র হামলার মামলায় অরবিন্দকে ঝাড়গ্রাম আদালতে তোলা হয়। ঝাড়গ্রাম এসিজেএম আদালতের বিচারক কৃষ্ণমুরারিপ্রসাদ গুপ্ত অরবিন্দের জামিনের আবেদন খারিজ করে তাঁকে জেল হাজতে পাঠান।

নিজস্ব সংবাদদাতা
ঝাড়গ্রাম শেষ আপডেট: ৩১ জুলাই ২০১৪ ০০:২৯
Share: Save:

মাওবাদী তাত্ত্বিক নেতা অরবিন্দ বাছাড়কে ১২ দিনের জন্য জেল হেফাজতের নির্দেশ দিল ঝাড়গ্রাম এসিজেএম আদালত। বুধবার পশ্চিম মেদিনীপুরের নয়াগ্রাম থানার একটি দেশদ্রোহ ও সশস্ত্র হামলার মামলায় অরবিন্দকে ঝাড়গ্রাম আদালতে তোলা হয়। ঝাড়গ্রাম এসিজেএম আদালতের বিচারক কৃষ্ণমুরারিপ্রসাদ গুপ্ত অরবিন্দের জামিনের আবেদন খারিজ করে তাঁকে জেল হাজতে পাঠান। গত রবিবার উত্তর চব্বিশ পরগনার বাদুড়িয়ায় রুদ্রপুরের বাড়ি থেকে বছর আটচল্লিশের অরবিন্দকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ওই দিনই তাঁকে বসিরহাট আদালতে তোলা হলে ৩০ জুলাইয়ের মধ্যে ঝাড়গ্রাম এসিজেএম আদালতে তোলার নির্দেশ হয়।

বুধবার অভিযুক্তের আইনজীবী কৌশিক সিংহ ঝাড়গ্রাম আদালতে সওয়াল পর্বে প্রশ্ন তোলেন, “মূল এফআইআর-এ অরবিন্দের নাম ছিল না। পরে পুলিশ তদন্ত করে তাঁর নাম পাওয়া গিয়েছে বলে দাবি করে। তদন্ত চলাকালীন ফৌজদারি কার্যবিধি আইনের ১৬১ ধারায় ৬ জন প্রত্যক্ষদর্শীর বয়ান নেয় পুলিশ। কিন্তু আদালতে দাখিল করা পুলিশের নথিতে ওই ছয় জনের বয়ানে অভিযুক্ত হিসেবে অরবিন্দের নাম নেই। ভিত্তিহীন ভাবে অরবিন্দকে দেশদ্রোহ-হামলা-নাশকতার এই মামলায় অভিযুক্ত করা হয়েছে?” সরকারি কৌঁসুলি অবশ্য দাবি করেন, যথেষ্ট তথ্য প্রমাণের ভিত্তিতেই অরবিন্দকে অভিযুক্ত করেছে পুলিশ।

আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০০৯ সালের ২৮ ডিসেম্বর নয়াগ্রামের দেউলবাড় গ্রামে এক ঠিকাদারের বাড়িতে সশস্ত্র হামলা চালায় সন্দেহভাজন মাওবাদীরা। বাড়িতে ভাঙচুর চালিয়ে আসবাবপত্র পুড়িয়ে দেওয়া হয়। একমাস পরে ২০১০ সালের ৩১ জানুয়ারি ওই ঘটনায় অভিযোগ দায়ের হয় নয়াগ্রাম থানায়। দেশদ্রোহ, নাশকতা ও অস্ত্র আইনে মামলা রুজু করে পুলিশ। তদন্ত চলাকালীন পাঁচ অভিযুক্তের নাম পাওয়া যায় বলে পুলিশের দাবি। এদের মধ্যে মাওবাদী নেতা রঞ্জন মুণ্ডা-সহ তিনজন গ্রেফতার হয়। গত ১২ এপ্রিল পাঁচ অভিযুক্তের বিরুদ্ধে ঝাড়গ্রাম এসিজেএম আদালতে চার্জশিট দাখিল করে পুলিশ। ওই পাঁচ অভিযুক্তের অন্যতম হলেন অরবিন্দ। এরপরই অরবিন্দের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে ঝাড়গ্রাম এসিজেএম আদালত। রবিবার তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। এই নিয়ে এই মামলায় চারজন গ্রেফতার হল। এক অভিযুক্ত এখনও পলাতক।

অরবিন্দের গ্রেফতারি এই প্রথম নয়। ২০০৮ সালে ওড়িশার ময়ূরভঞ্জে একটি মাওবাদী হামলায় একাধিক ব্যক্তির প্রাণহানির ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে অরবিন্দের বিরুদ্ধে মামলা রুজু হয়। লালগড় আন্দোলনকে কেন্দ্র করে বছর চারেক আগে এ রাজ্যের জঙ্গলমহলের পরস্থিতি যখন উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল, তখন ওই সব এলাকায় নিয়মিত যেতেন অরবিন্দ। ২০১০ সালে গোপীবল্লভপুর থেকে তাঁকে গ্রেফতার করে কলকাতা পুলিশের স্পেশাল টাস্ক ফোর্স। পরে তাঁকে ওড়িশা পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়। বছর চারেক ওড়িশার বারিপদা সেন্ট্রাল জেলে ছিলেন। তারপরে জেল থেকে ছাড়া পেয়ে কয়েকটি গোপন ডেরায় কিছুদিন কাটানোর পর গত ২৩ মে বাদুড়িয়ার বাড়িতে ফেরেন অরবিন্দ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

jail custody arvind bachar moist leader
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE