দীর্ঘ টানাপড়েনের পরে বাসস্ট্যান্ডের উদ্বোধন হয়েছে। তারপরে পেরিয়ে গিয়েছে তিন মাস সময়। কিন্তু এখনও বাস ঢুকছে না কেশিয়াড়ির নবনির্মিত বাসস্ট্যান্ডে। কেশিয়াড়ি থেকে বেলদা যাওয়ার পথে কদমকুড়িতে ওই বাসস্ট্যান্ডে বাস পরিষেবা চালু না হওয়ায় উদ্বেগে ব্লক প্রশাসন কর্তারা। বৃহস্পতিবার বাস মালিক সংগঠন ও সব রাজনৈতিক দলকে নিয়ে বৈঠক ডাকেন বিডিও অসীমকুমার নিয়োগী। এ দিন অবশ্য বাস মালিক সংগঠনের কেউ আসেননি। কেন? বাস মালিক সংগঠন সূত্রে খবর, কেশিয়াড়ি মোড় থেকে প্রায় দেড় কিলোমিটার দূরে ওই স্ট্যান্ডে যাত্রী না পাওয়ার আশঙ্কাতেই এই বাসমালিকদের এই অনীহা।
কেশিয়াড়ির উপর দিয়ে খড়িকা, মেদিনীপুর, দিঘা, সোনাকানিয়া, বালিগেড়িয়া, ঝাড়গ্রাম-সহ বেশ কিছু রুটের প্রায় ৭৫টি বাস যাতায়াত করে। এর আগে কেশিয়াড়িতে কোনও নির্দিষ্ট বাসস্ট্যান্ড ছিল না। ফলে বাসস্ট্যান্ডের দাবি জোরালো হয়। ২০০৭-০৮ অর্থবর্ষে বাম পরিচালিত পঞ্চায়েত সমিতির উদ্যোগে ওই বাসস্ট্যান্ড গড়ার সিদ্ধান্ত হয়। পরে প্রস্তাবিত ওই স্ট্যান্ডটি এলাকার কেশিয়াড়ি-বেলদা সড়কের ধারে একটি প্রায় দেড় একর সরকারি খাস জমিতে ২৫ লক্ষ টাকা ব্যয়ে গড়ার পরিকল্পনা হয়। ২০১০ সাল থেকে স্ট্যান্ডের নির্মাণ কাজও এগোয়। তবে ২০১১ সালে বিধানসভা নির্বাচনের পর থেকেই স্ট্যান্ড গড়ার কাজ গতি হারায়। উদ্যোগের অভাব দেখা যায় বাম পরিচালিত পঞ্চায়েত সমিতির পক্ষ থেকেও।
এ দিকে টাকা খরচ করেও বাসস্ট্যান্ড চালু না হওয়ায় সাধারণ মানুষের মধ্যে ক্ষোভ বাড়ছিল। এ দিন পরিস্থিতির পর্যালোচনা করতে এ দিন বৈঠক ডাকেন বিডিও। সর্বদলীয় ওই বৈঠকে সিপিএম ও বাস মালিক সংগঠনের প্রতিনিধিরা বাদে সকলেই এসেছিলেন। সিপিএমের কেশিয়াড়ি জোনাল সম্পাদক ভবানী গিরির দায়সারা জাবাব, “শাসকদল ও প্রশাসন দেখুক কী ভাবে স্ট্যান্ডে বাসগুলিকে নিয়ে যাওয়া যায়।” কেশিয়াড়ি বাস মালিক সংগঠনের সম্পাদক গজেন দাস বলেন, “দেড় কিলোমিটার দূরে যাত্রীরা যেতে চাইছেন না। সেখানে কোনও দোকানপাটও নেই। তাঁরা কাছের একটি মোড়ে দাঁড়াচ্ছেন। তাই অতিরিক্ত পথে বাস নিয়ে অনেকে যেতে চাইছে না। তবে আমি নিজে মনে করি, বাস যাওয়া উচিত। কিন্তু কাজে ছিলাম তাই যেতে পারিনি।”
এ দিন বৈঠক থেকে বেরিয়ে তৃণমূলের ব্লক সভাপতি জগদীশ দাস বলেন, “সব বাসকে ওই বাসস্ট্যান্ডে ঢুকতে হবে বলেই সকলে সম্মতি জানিয়েছে। সমস্ত বাস যাওয়া শুরু হলেই তো এলাকা জমজমাট হবে। আমরা তাই প্রশাসনের সঙ্গে সহযোগিতা করব।”
আর বিডিও অসীমকুমার নিয়োগীও বলেন, “এ দিন সবাইকে বৈঠকে ডাকা হয়েছিল। একটি রাজনৈতিক দল ও কোনও বাস মালিক সংগঠনের প্রতিনিধিরা আসেননি। কিন্তু সাত দিন সময় দিয়েছি, তারপরেও বাস স্ট্যান্ডে না গেলে পুলিশি ব্যবস্থা নেব।”