Advertisement
১৯ মে ২০২৪

কেশপুরে ফের সংঘর্ষ, ধৃত সিপিএমের ২৭ জন

ফের সিপিএম-তৃণমূল সংঘর্ষ বাধল কেশপুরে। এ বার ঘটনাস্থল ব্লক সদর থেকে দু’কিলোমিটার দূরের গরগজপোতা। বৃহস্পতিবার রাতের এই সংঘর্ষে দু’পক্ষেরই কয়েকজন জখম হন।

গোলমালের পরে কেশপুরে সন্তোষ রাণা ও রামেশ্বর দোলুই

গোলমালের পরে কেশপুরে সন্তোষ রাণা ও রামেশ্বর দোলুই

নিজস্ব সংবাদদাতা
কেশপুর শেষ আপডেট: ১৫ মার্চ ২০১৪ ০২:০০
Share: Save:

ফের সিপিএম-তৃণমূল সংঘর্ষ বাধল কেশপুরে। এ বার ঘটনাস্থল ব্লক সদর থেকে দু’কিলোমিটার দূরের গরগজপোতা। বৃহস্পতিবার রাতের এই সংঘর্ষে দু’পক্ষেরই কয়েকজন জখম হন। গোলমালে জড়িতদের খোঁজে এসে সিপিএমের কেশপুর জোনাল কমিটির কার্যালয় ‘জামশেদ ভবন’ থেকে ২৭ জন নেতা- কর্মীকে গ্রেফতার করে পুলিশ। লোকসভা নির্বাচনের মুখে এই ঘটনায় ফের উত্তেজনা ছড়িয়েছে কেশপুরে।

বামেদের অভিযোগ, প্রচারে বাধা দিতেই তৃণমূলের ষড়যন্ত্রে এই ধরপাকড়। কেশপুরের সিপিএম বিধায়ক রামেশ্বর দোলুই বলেন, “শুক্রবার বিভিন্ন এলাকায় আমাদের মিছিল করার কথা ছিল। আমরা যাতে রাজনৈতিক কর্মসূচি করতে না পারি, সে জন্যই তৃণমূলের লোকজন সন্ত্রাস শুরু করেছে।” শুক্রবার সকালে কেশপুর থানায় আসেন ঘাটাল কেন্দ্রের বামপ্রার্থী সন্তোষ রাণা। সঙ্গে রামেশ্বর দোলুই-সহ আরও কয়েকজন। তাঁরা পুলিশ অফিসারদের অভিযোগ জানান। এ দিন সকালে থানায় এসেছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (খড়্গপুর) বরুণচন্দ্র শেখর, ডিএসপি (অ্যাডমিনিস্ট্রেশন) মনোরঞ্জন ঘোষও। ছিলেন কেশপুর থানার ওসি দয়াময় মাঝিও। তিন পুলিশ অফিসারের কাছেই নিজেদের অভিযোগ জানান বাম প্রার্থী এবং বিধায়ক।

পরে সিপিআইয়ের জেলা সম্পাদক সন্তোষবাবু অভিযোগ করেন, “বৃহস্পতিবার রাতে গরগজপোতা গ্রামে হামলা চালায় তৃণমূল। শুক্রবার ওখানে আমাদের মিছিল হওয়ার কথা ছিল। মিছিল ভেস্তে দিতেই ওদের এই আক্রমণ। গ্রামবাসীরা প্রতিরোধ করলে ওরা বাইরে থেকে লোকজন এনে ফের আক্রমণ করে।” পুলিশকে কী বললেন? সন্তোষবাবুর কথায়, “গোলমাল হল গরগজপোতায়। আর পুলিশ জামশেদ ভবনে এসে কমরেডদের তুলে নিয়ে যায়।”

তৃণমূলের কেশপুর ব্লক সভাপতি সঞ্জয় পানের পাল্টা অভিযোগ, “সিপিএমের লোকজন আচমকাই ওই গ্রামে আক্রমণ করে। পরে গ্রামবাসীদের তাড়া খেয়ে সকলে দৌড়ে জামশেদ ভবনে চলে আসে।” তৃণমূলের জেলা কার্যকরী সভাপতি প্রদ্যোৎ ঘোষের বক্তব্য, “দীর্ঘদিন পর কেশপুরে শান্তি ফিরেছে। উন্নয়ন শুরু হয়েছে। সিপিএম তাই নতুন করে অশান্তি করছে।”

ক’দিন ধরেই তেতে রয়েছে কেশপুর। সম্প্রতি সর্বদল বৈঠকে সিপিএম ও তৃণমূল নেতাদের মধ্যে বচসা হয়। সিপিএম অভিযোগ করে, ভোটের আগে পার্টি অফিস খুলতে বাধা দেওয়া হচ্ছে। বৃহস্পতিবার কেশপুরের চরকা গ্রামে দু’পক্ষের সংঘর্ষ হয়। তারপর রাতে গোলমাল বাধে গরগজপোতায়। গত মাসের শেষের দিকে কৃষকসভার সভা ঘিরেও এখানে অশান্তি হয়েছিল। শুক্রবার সকালে গরগজপোতায় গিয়ে দেখা যায়, গ্রামে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে পড়ে রয়েছে বোমার দড়ি। স্থানীয়রা জানান, বৃহস্পতিবার রাত ১১টা নাগাদ ব্যাপক বোমাবাজি হয়। অনেকে ভয়ে বাড়ি থেকেই বেরোননি। গোলমালে জড়িতদের খোঁজে এসে সিপিএমের কেশপুর জোনাল কমিটির কার্যালয় ‘জামশেদ ভবন’ থেকে শুরুতে পুলিশ ৪৬ জন নেতা-কর্মীকে তুলে নিয়ে যায়। তাঁদের মধ্যে ২৭ জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ধৃতদের মধ্যে আছেন কেশপুর জোনাল কমিটির সদস্য শেখ নিয়ামৎ হোসেন। ধৃতদের ১৪ দিন জেল হেফাজত হয়েছে।

সংঘর্ষের পর এলাকায় নজরদারি আরও বাড়ানো হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। জেলা পুলিশ সুপার ভারতী ঘোষ বলেন, “গরগজপোতার ঘটনায় নির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতেই ২৭ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তদন্তে সব দিকই খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

keshpur cpm tmc
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE