পটাশপুর থানায় জখম নেতা তরুণ রায়ের সঙ্গে বিরোধী দলনেতা সূর্যকান্ত মিশ্র। ছবি: কৌশিক মিশ্র।
সিপিএমের কৃষক জাঠায় হামলা চালানোর অভিযোগ উঠল তৃণমূল কর্মী-সমর্থকদের বিরুদ্ধে। লাঠির ঘায়ে মাথা ফাটে সংগঠনের প্রবীণ নেতা তরুণ রায়ের। শনিবার দুপুরে পূর্ব মেদিনীপুরের পটাশপুরে ওই ঘটনায় আহত তরুণবাবুকে মেদিনীপুর মেডিক্যালে ভর্তি করানো হয়েছে। তরুণবাবু ছাড়াও জখম হন সিপিএমের জনা দশেক নেতা-কর্মী।
কৃষক জাঠায় যোগ দিতে এ দিন পূর্ব মেদিনীপুরে যান সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য তথা রাজ্যের বিরোধী দলনেতা সূর্যকান্ত মিশ্র। খবর পেয়ে তিনি পটাশপুর থানার সামনে প্রতিবাদসভা করে অভিযুক্তদের গ্রেফতারের দাবি জানান। রাতে তরুণবাবুকে দেখতে মেদিনীপুর মেডিক্যালে যান তিনি। তাঁর অভিযোগ, “তৃণমূল ভয় পেয়েছে বলেই আমাদের মিছিলের উপরে আক্রমণ করছে। কিন্তু এ ভাবে আমাদের রোখা যাবে না।”
এই ঘটনায় সিপিএমের তরফে তৃণমূলের গোপালপুর অঞ্চল প্রধান প্রভুরাম দাস-সহ ১৯ জন দলীয় কর্মী-সমর্থকের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। পুলিশের বিরুদ্ধেও অসহযোগিতার অভিযোগ করছে সিপিএম। কৃষকসভার পূর্ব মেদিনীপুর জেলা সম্পাদক নিরঞ্জন সিহির বক্তব্য, “জাঠায় রাজ্য নেতৃত্বের আসার কথা পুলিশকে জানানো হয়েছিল। কিন্তু নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়নি।” পূর্ব মেদিনীপুরের এসপি সুকেশকুমার জৈনের বক্তব্য, খবর পেয়েই পুলিশ যায়। অভিযুক্তদের খোঁজ চলছে।
হামলার কথা অস্বীকার করে তৃণমূলের পটাশপুর-১ ব্লক সভাপতি তাপস মাজির পাল্টা অভিযোগ, “সিপিএমের জাঠায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নামে কটূক্তি করা হচ্ছিল। স্থানীয়রা তার প্রতিবাদ করেছেন। মারধরের ঘটনা ঘটেনি।” আর হামলায় অভিযুক্ত প্রভুরামের দাবি, “ঘটনার সময় এলাকাতেই ছিলাম না। খবর পেয়ে পরে যাই।”
কৃষকদের দাবিদাওয়া আদায়ে এবং সারদা কেলেঙ্কারি-সহ বিভিন্ন ঘটনায় রাজ্য সরকারের ভূমিকার প্রতিবাদে ১৫ অক্টোবর থেকে রাজ্য জুড়ে জাঠা কর্মসূচি নিয়েছে সিপিএমের কৃষক সংগঠন। শনিবার পূর্ব মেদিনীপুরের বিভিন্ন এলাকায় এই মিছিল হয়। সূর্যকান্তবাবুর নেতৃত্বে সকাল সাড়ে ৮টায় জেলার মূল মিছিলটি হয় খেজুরির হেঁড়িয়ায়। দীর্ঘ আড়াই বছর পরে এই এলাকায় সিপিএমের কর্মসূচি হল। কৃষকসভার রাজ্য সহ-সভাপতি পশ্চিম মেদিনীপুরের নেতা, বছর পঁয়ষট্টির তরুণবাবুও হেঁড়িয়ায় যান। সেখানে তিনি পটাশপুর ১ ব্লকের গোপালপুর পঞ্চায়েত এলাকার মিছিলে যান।
বেলা সাড়ে ১২টা নাগাদ প্রায় দেড়শো জনের মিছিল সিংলাই মোড়ে পৌঁছলে তৃণমূলের জনা কুড়ি কর্মী-সমর্থক লাঠি নিয়ে চড়াও হয় বলে অভিযোগ। তরুণবাবুর অভিযোগ, “আচমকাই তৃণমূলের লোকজন এলোপাথাড়ি লাঠি চালায়।মাথায় চোট লাগে।” সিপিএম কর্মী-সমর্থকেরাই প্রাথমিক ভাবে তরুণবাবুদের উদ্ধার করেন। পরে পুলিশ তাঁদের পটাশপুর ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যায়। সেখানে চিকিৎসার পরে বাকিদের ছাড়া হলেও অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তরুণবাবুকে মেদিনীপুর মেডিক্যালে সরানো হয়। চিকিৎসকেরা জানান, তাঁর অবস্থা স্থিতিশীল।
পটাশপুরের ঘটনার প্রতিবাদে আজ, রবিবার রাজ্যের প্রতিটি ব্লকে ধিক্কার দিবস পালন করবে কৃষকসভা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy