Advertisement
০১ মে ২০২৪

খোঁজ মিলল ম্যাথুর, স্বস্তি জর্জ পরিবারে

যাবতীয় উৎকণ্ঠার অবসান হল। অ্যাসেম্বলি অফ গড চার্চের হলদিয়া শাখার নিখোঁজ ছাত্র ম্যাথু জর্জের খোঁজ মিলল অন্ধ্রপ্রদেশে। আজ, মঙ্গলবার ভোরে অন্ধ্রপ্রদেশের বিশাখাপত্তনমের কাছে আলিপুরম থেকে হলদিয়া টাউনশিপের সেক্টর-৬ এর বাড়িতে ম্যাথুকে নিয়ে ফেরার কথা বাবা কে এম জর্জের। নিখোঁজ ছেলেকে উদ্ধারের খবরে খুশির হাওয়া জর্জ পরিবারে। মা রিনি জর্জ বলেন, “ম্যাথু খুব অভিমানী। চাপা স্বভাবের। কিছুই ও বুঝতে দেয়নি।”

নিজস্ব সংবাদদাতা
হলদিয়া শেষ আপডেট: ১২ অগস্ট ২০১৪ ০১:২০
Share: Save:

যাবতীয় উৎকণ্ঠার অবসান হল। অ্যাসেম্বলি অফ গড চার্চের হলদিয়া শাখার নিখোঁজ ছাত্র ম্যাথু জর্জের খোঁজ মিলল অন্ধ্রপ্রদেশে। আজ, মঙ্গলবার ভোরে অন্ধ্রপ্রদেশের বিশাখাপত্তনমের কাছে আলিপুরম থেকে হলদিয়া টাউনশিপের সেক্টর-৬ এর বাড়িতে ম্যাথুকে নিয়ে ফেরার কথা বাবা কে এম জর্জের। নিখোঁজ ছেলেকে উদ্ধারের খবরে খুশির হাওয়া জর্জ পরিবারে। মা রিনি জর্জ বলেন, “ম্যাথু খুব অভিমানী। চাপা স্বভাবের। কিছুই ও বুঝতে দেয়নি।”

গত ৪ অগস্ট সকালে স্কুলে যাওয়ার জন্য বাড়ি থেকে বেরিয়ে নিখোঁজ হয়ে যায় ম্যাথু। ম্যাথুর বাবা কে এম জর্জ গড চার্চ স্কুলের অধ্যক্ষ। মা-ও ওই স্কুলেরই শিক্ষিকা। ছেলের খোঁজ না-পেয়ে হলদিয়া থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করেন কে এম জর্জ। নিখোঁজ হওয়ার পিছনে অপহরণের সম্ভাবনাকে মাথায় রেখে পুলিশ তদন্তে জানতে পারে স্বেচ্ছায় বাড়ি ছেড়েছে ম্যাথু। কারণ, নিখোঁজ হওয়ার দিনেই ওড়িশার বালেশ্বরে স্থানীয় এক ব্যক্তি ম্যাথুকে জিজ্ঞাসাবাদে জেনেছিলেন সে ভুবনেশ্বর যেতে চায়। খবর পাওয়া মাত্র পুলিশ এবং পরিবারের পক্ষ থেকে দ্রুত ঘটনাস্থলে গেলেও ম্যাথুর দেখা মেলেনি। পুলিশের ধারণা ছিল, যেহেতু জর্জ পরিবারের আদি বাড়ি কেরালায় এবং এখনও সেখানে আত্মীয়েরা থাকেন, তাই সেখানেই গিয়েছে ম্যাথু। তদন্তে পুলিশ এ-ও জেনেছিল, পড়াশুনো ও অন্য ক্ষেত্রে বাবা-মায়ের প্রত্যাশা পূরণ করতে না-পারার যন্ত্রণা থেকে নিজেকে অন্তরালে সরিয়ে নেয় ম্যাথু।

৭ অগস্ট পুলিশ ম্যাথু-অর্ন্তধান রহস্যে কিছুটা স্বস্তির খবর দেয়। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, বাড়িতে নিজের সিম ফেলে গেলেও যে মোবাইলটি নিয়ে গিয়েছিল ম্যাথু তাতে সে একটি সিম ঢোকায়। সেই সূত্র ধরে পুলিশ তার অবস্থান জেনে প্রযুক্তির সাহায্যে নিশ্চিত হয় তার অবস্থান সম্পর্কে। সেই মতো, বৃহস্পতিবার রাতেই আলিপুরমের উদ্দেশে রওনা হয় ম্যাথুর বাবা ও এক আত্মীয়। অন্ধ্রপ্রদেশের পুলিশও তাকে খুঁজে বের করতে সাহায্য করে বলে খবর।

এ দিকে, উদ্দেশ্যহীন ভাবে ঘোরাঘুরি করতে গিয়ে ক’দিনেই হাতের টাকা শেষ হয়ে গিয়েছিল ম্যাথুর। নোংরা হয়ে যায় পোষাকও। খাওয়া-ঘুম ঠিক না হওয়া এবং মানসিক যন্ত্রণায় সে দুর্বল হয়ে যায়। পুলিশের দাবি, এতে ক্রমশ মানসিক ভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ছিল একাদশ শ্রেণির ওই ছাত্র। তদন্তে পুলিশ জেনেছে, এক সময় মনের জোর হারিয়ে সে অনাথ আশ্রমে থাকার সিদ্ধান্ত নেয়। রবিবার সকালে আলিপুরমের অটোস্ট্যান্ডে এক অটোচালকের কাছে সে অনাথ আশ্রমে নিয়ে যাওয়ার কথা বলে।

স্কুলের পোশাকে ম্যাথুকে ওই অবস্থায় দেখে অটো চালকের সন্দেহ হওয়ায়, তিনি স্থানীয় থানায় খবর দেন। এ দিকে ছেলের খোঁজে ততক্ষণে আলিপুরমে পৌঁছে গিয়েছিলেন কে এম জজর্। তারপর অটোস্ট্যান্ডে এসে ম্যাথুকে দেখে তাঁরা নিশ্চিত হন। পুলিশ ও জর্জ পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, একে অপরকে দেখে কান্নায় ভেঙে পড়ে বাবা-ছেলে। ম্যাথু ফোনে কথাও বলে মা, দিদি, দাদু, দিদার সঙ্গে। রাতেই তাঁরা রওনা দেন বাড়ির উদ্দেশে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE