তৃণমূল নেতা উত্তম দিকপতিকে গলার নলি কেটে খুনের চেষ্টার অভিযোগে এ বার তাঁরই স্ত্রী তথা অভিযোগকারিনীর বিরুদ্ধেই মামলা শুরু করল পুলিশ। সম্প্রতি ঘাটাল থানার কুরান সংলগ্ন এনায়েতপুরের ওই ঘটনায় মূল অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে ঘাটাল থানার পুলিশ। ধৃতকে জেরা করেই উত্তম দিকপতির স্ত্রী তথা তৃণমূলের মহিলা সংগঠনের এনায়েত বুথের সভানেত্রী কমলা দিকপতির নাম জানতে পারে পুলিশ। উত্তমবাবুর স্ত্রীর বিরুদ্ধেও খুনের চেষ্টা, প্ররোচনা, ষড়যন্ত্র-সহ একাধিক জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা শুরু করে পুলিশ। তবে এখনও পর্যন্ত ওই মহিলার হদিস পায়নি পুলিশ।
এই ঘটনার কথা জানাজানি হতেই শাসক দল তথা তৃণমূল শিবির অস্বস্তিতে পড়েছে। কেননা, ঘটনার রাতে কমলা দিকপতি নিজে ঘাটাল থানায় একাধিক সিপিএম ও বিজেপি কর্মীর নামে থানায় মামলা করেন। কিন্তু ঘটনার মূল অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে জেরার পরই প্রকৃত বিষয়টি সামনে আসে, এমনটাই দাবি পুলিশের। তবে তৃণমূল সূত্রে খবর, এ ব্যাপারে দল কমলা দিকপতির পাশে না দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তৃণমূলের ঘাটাল ব্লকের সাধারণ সম্পাদক পঞ্চানন মণ্ডলের সাফ কথা, “পুলিশ যদি মনে করে ঘটনায় কমলা দিকপতি যুক্ত, তা হলে তাঁকে পুলিশ গ্রেফতার করুক। আমারও সাহায্য করব।” দল থেকেও তাঁকে অবিলম্বে বাদ দেওয়া হবে বলে তিনি জানান।
পুজোর ঠিক আগে ঘাটাল থানার এনায়েতপুরে বাড়ি সংলগ্ন একটি পাম্প ঘর থেকে অচৈতন্য ও গলার নলি কাটা অবস্থায় উত্তম দিকপতিকে উদ্ধার করে পুলিশ। তারপরই তাঁকে ভর্তি করানো হয় ঘাটাল মহকুমা হাসপাতালে। পরে কলকাতায় স্থানান্তর করা হয়। হাসপাতাল সূত্রে খবর, এখনও বিপন্মুক্ত নন তিনি। ঘটনার পরই তাঁর স্ত্রী ঘাটাল থানায় স্থানীয় একাধিক বিজেপি ও সিপিএম কর্মীর নামে মামলা করেন। তদন্তে নামে পুলিশ। বাড়ির অদূরেই শাসক দলের এক সক্রিয় সদস্যের এমন পরিণতিতে দলের কর্মীরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। উদ্বেগ বাড়িয়েছিল এই ঘটনার ক’দিন আগে ঘাটাল থানার অদূরেই টহলরত অবস্থায় দুষ্কৃতীদের ছোঁড়া গুলিতে হোমগার্ডের মৃত্যু। তার রেশ কাটার আগেই তৃণমূল নেতার আক্রান্ত হওয়ার ঘটনায় সাধারণ মানুষ উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন।
উত্তমবাবু আক্রান্ত হওয়ার দিন দু’য়েক পরেই মূল অভিযুক্ত ঘাটাল থানার বালিডাঙার বাসিন্দা শঙ্কর পাঁজাকে ধরে পুলিশ। তাঁকে জেরা করে ওই গ্রামেরই সমীর কুলসী নামে আরও এক যুবককে পুলিশ পাকড়াও করে। তাঁদের জেরা করে কমলা দিকপতির প্রত্যক্ষ ভাবে যুক্ত থাকার প্রমাণ মেলে। তারপরই কমলাদেবীর সন্ধানে পুলিশ তাঁর বাড়িতে অভিযান চালায়। কিন্তু শঙ্কর পাঁজাকে ধরার পর থেকেই তিনি বেপাত্তা বলে পুলিশ জেনেছে। মোবাইলও বন্ধ। তারপর পুলিশ কমলা দিকপতির নামেও মামলা শুরু করে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy