Advertisement
E-Paper

গানে, প্রদর্শনীতে রেলশহর মাতোয়ারা বিশ্বকর্মা পুজোয়

কোথাও সাউন্ড বক্সে ‘আ আন্টে আমলা-পুরো’ তেলগু গানের ছন্দে নৃত্যে মাতোয়ারা রেলকর্মীরা। আবার কোথাও মঞ্চ বেঁধে চলছে রিয়্যালিটি শো’র সঙ্গীতশিল্পীদের অনুষ্ঠান। বুধবার দিনভর এ ভাবেই বিশ্বকর্মার বন্দনায় মাতল রেলশহর।

দেবমাল্য বাগচি

শেষ আপডেট: ১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০১:১১
রেল কারখানায় মডেল ট্রেনের প্রদর্শনী। ছবি: রামপ্রসাদ সাউ।

রেল কারখানায় মডেল ট্রেনের প্রদর্শনী। ছবি: রামপ্রসাদ সাউ।

কোথাও সাউন্ড বক্সে ‘আ আন্টে আমলা-পুরো’ তেলগু গানের ছন্দে নৃত্যে মাতোয়ারা রেলকর্মীরা। আবার কোথাও মঞ্চ বেঁধে চলছে রিয়্যালিটি শো’র সঙ্গীতশিল্পীদের অনুষ্ঠান।

বুধবার দিনভর এ ভাবেই বিশ্বকর্মার বন্দনায় মাতল রেলশহর। ভাদ্রের কড়া রোদ উপেক্ষা করে থিমের বাহুল্য বর্জিত পুজো মণ্ডপগুলিতে দিনের শুরু থেকেই ছিল ঢল। ব্রিটিশ জমানায় বেঙ্গল-নাগপুর রেলের অধীনে এই খড়্গপুর স্টেশন গড়ে ওঠে। বিশ্বের অন্যতম দীর্ঘ জংশন স্টেশন হিসেবে পরিচিত খড়্গপুরকে কেন্দ্র করে ১৮৯৮ সাল থেকে এশিয়ার বৃহত্তম রেল কারখানার বিস্তার ঘটতে থাকে। সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়তে থাকে শহরের জনসংখ্যাও। ভারত স্বাধীন হওয়ার পর থেকে কারখানাগুলিতে বিশ্বকর্মা পুজো শুরু হয়। সারাবছর সাধারণের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা থাকলেও এ দিন কারখানাগুলিতে সকলেই অবাধে প্রবেশ করতে পারেন। বোগদা, পুরাতন বাজারে রেলের একাধিক বিভাগ থেকে শুরু করে টেলিফোন বিভাগ, সাহাচকের শিল্পতালুকের বিভিন্ন শিল্পসংস্থা, ইন্দার বিভিন্ন গাড়ির গ্যারাজ-সহ পুজো হয় শহরের সর্বত্রই।

রেল ওয়ার্কশপের বিশাল এলাকার ভিতরে ডিজেল পিওএইচ শপ, ইএমইউ মোটর কোচ পিওএইচ শপ, ডিজেল লোকোমোটিভ শপ, ইলেকট্রিক লোকোমোটিভ শপে পুজো দেখতে ভিড় জমান দর্শণার্থীরা। তবে আকর্ষণের কেন্দ্রে ছিল ইএমইউ পিওএইচ শপের পুজো। ২৫ তম বর্ষ উপলক্ষে এই পুজোর এ বার একটি জনপ্রিয় রিয়্যালিটি শো-র সঙ্গীত শিল্পীদের নিয়ে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয়। পুজোর কর্মকর্তা তথা বিভাগীয় কর্মী অমিতাভ মজুমদার, অসীম মুখোপাধ্যায়, পৃথা বিশ্বাসেরা বলেন, “আমাদের এই পুজো একদিনের। রাত পেরোলেই ফের গতানুগতিক কাজ। এই দিনটায় চুটিয়ে আনন্দ করি।”

একই ভাবে, এ দিন পেন্ট শপের পুজোতেও ছিল জলসার আয়োজন। এখানে দেব-কারিগর দাঁড়িয়ে রয়েছেন দিল্লির লালকেল্লার আদলে তৈরি মণ্ডপের সামনে। কারখানার লোকো টুল বিভাগের শপে এবারের আকর্ষণ নয়া প্রযুক্তির ট্রেনের মডেল। মেদিনীপুর স্টেশন থেকে ট্রেন ছাড়ছে, আর ঘাটশিলার পাহাড় ঘেঁষে বেরিয়ে আসছে সেই ট্রেন। প্রতিবছরই এই বিভাগের কর্মীরা নানা ধরনের চলন্ত ট্রেনের মডেল তৈরি করেন। গত বছর কয়লা চালিত ইঞ্জিনের মডেলও দর্শকদের নজর কেড়েছিল। ট্রেনগুলির মডেলের কারিগর তথা ওই বিভাগের কর্মী বি বিজয় কুমার, বিপুলকুমার জোয়াদ্দারেরা বলেন, “সারা বছর যে কাজগুলি আমাদের এই কারখানায় হয় তার ফসল হল একটি ট্রেন। তাই সেই ফসলের বিভিন্ন মডেল বানিয়ে আমরা মানুষকে আনন্দ দেওয়ার চেষ্টা করি।” রেলের কারখানায় মেয়েকে কোলে নিয়ে পুজো দেখতে আসা অঞ্জনা বর্মন বলেন, “আমার স্বামী এই কারখানায় কাজ করেন। ওঁদের পুজো দেখতে এসেছি।”

অন্য দিকে, রেলের ট্র্যাকশন মেরামত কেন্দ্র, উপরিবিভাগ সরঞ্জাম অনুরক্ষণ কেন্দ্র, বরিষ্ঠ অনুভাগ ইঞ্জিনিয়ার (বিদ্যুত্‌), সিগন্যাল ব্যবস্থা-সহ বিভিন্ন বিভাগে পুজোর জৌলুস ছিল চোখে পড়ার মতো। রেলের উপরিবিভাগ সরঞ্জাম অনুরক্ষণ কেন্দ্রের পুজোয় থার্মোকলের মডেলে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে খড়্গপুরের পুরনো ও নতুন স্টেশনের চেহারা। ওই পুজো কমিটির সম্পাদক এ এল রাও, সভাপতি সুজিত কুমারেরা বলেন, “পুরনো খড়্গপুরকে চেনাতেই এই ভাবনা।”

কিছু দূরেই রেলের ট্র্যাকশন সরঞ্জাম মেরামত বিভাগে, ট্রেন চলাচলে বৈদুতিন তারের ট্র্যাকশনের ভূমিকা দেখাতে আস্ত একটি ছোট ট্রেনের মডেল তৈরি করা হয়েছে। এ দিন পুজো দেখতে সস্ত্রীক বেড়িয়ে পড়েন রেলের খড়্গপুর বিভাগের ডিআরএম গৌতম বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, “প্রায় সমস্ত বিভাগ ঘুরে দেখছি। আমাদের রেল ব্যবস্থা সচল রাখতে সকলকে সর্বদা সতর্ক থাকতে হয়। কর্মীরা অন্য দিনের তুলনায় একটু আলাদাভাবে দিনটা কাটাচ্ছেন। ওঁদের কাজ তুলে ধরছেন দেখে খুব ভাল অভিজ্ঞতা হল।”

biswakarma puja kharagpur debmalya bagchi
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy