Advertisement
০৪ মে ২০২৪

গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে, তৃণমূল প্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থা

দলের প্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থা আনলেন দলেরই সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যরা। সোমবার পশ্চিম মেদিনীপুরের দাসপুর-১ ব্লকের তৃণমূল পরিচালিত বাসুদেবপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের এই ঘটনায় ব্যাপক অস্বস্তিতে পড়েছে তৃণমূল। সোমবার তৃণমূলের প্রধান কোহিনুর খাতুনের বিরুদ্ধে ব্লকের বিডিওর কাছে দলের আটজন সদস্য অনাস্থা প্রস্তাব আনেন। ওই ব্লকের বিডিও রোশনি সরকার বলেন, “আমি অনাস্থার চিঠি পেয়েছি। নিয়মানুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

নিজস্ব সংবাদদাতা
ঘাটাল শেষ আপডেট: ২৮ মে ২০১৪ ০১:৪২
Share: Save:

দলের প্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থা আনলেন দলেরই সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যরা। সোমবার পশ্চিম মেদিনীপুরের দাসপুর-১ ব্লকের তৃণমূল পরিচালিত বাসুদেবপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের এই ঘটনায় ব্যাপক অস্বস্তিতে পড়েছে তৃণমূল। সোমবার তৃণমূলের প্রধান কোহিনুর খাতুনের বিরুদ্ধে ব্লকের বিডিওর কাছে দলের আটজন সদস্য অনাস্থা প্রস্তাব আনেন। ওই ব্লকের বিডিও রোশনি সরকার বলেন, “আমি অনাস্থার চিঠি পেয়েছি। নিয়মানুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

তৃণমূলের বিক্ষুব্ধ সদস্যদের অভিযোগ, বাসুদেবপুর পঞ্চায়েত প্রধান কোহিনুর খাতুন মাত্র জনা তিনেক সদস্যের সঙ্গে আলোচনা করেই পঞ্চায়েত চালাচ্ছেন। টেন্ডার না ডেকে একাধিক কাজ, একশো দিনের কাজের নানা বেনিয়ম, ঠিকাদারদের সঙ্গে গোপন আঁতাত সহ নানা অভিযোগ রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে। অনাস্থা পত্রে সই করেছেন পঞ্চায়েতের উপ-প্রধান গিরিশ দোলইও। তিনি বলেন, “দলের অনান্য সদস্যদের সঙ্গে আলোচনা না করে এলাকায় কাজ শুরু হয়ে যাচ্ছে। দলের একটি গোষ্ঠীর নেতৃত্বরা অফিসে এলে গোপন আলোচনা হয়ে নানা পরিকল্পনা চূড়ান্ত হয়ে যায়। তাই আমরা অনাস্থা এনেছি।” যদিও অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে প্রধান কোহিনুর খাতুন বলেন, “অনাস্থার বিষয়ে কোনও মন্তব্য করব না।” বিষয়টি নিয়ে তৃণমূলের দাসপুর-১ ব্লক সভাপতি সুকুমার পাত্রের সাফাই, “ভুল বোঝাবুঝিতে এই ঘটনা ঘটেছে। দলের মধ্যেই আলোচনা করছি।”

বাসুদেব গ্রাম পঞ্চায়েতে ১৯ টি আসন রয়েছে। তার মধ্যে ১২ জন তৃণমূলের এবং সাত জন বামেদের। প্রধানের আসনটি এ বার ওবিসি এবং মহিলা সংরক্ষিত। দলীয় সূত্রের খবর, তৃণমূলের নিবার্চিত বাকি সদস্যদের মধ্যে মহিলা ও ওবিসি কোনও সদস্য নেই। অনাস্থা সভায় যদি প্রধান আস্থা দেখাতে না পারেন-তাহলে নতুন প্রধান কে হবেন, তা নিয়েও উঠছে প্রশ্ন। ফলে অনাস্থা আনায় শেষ পযর্ন্ত দলেরই স্বার্থে বিক্ষুব্ধ সদস্যরা পিছু হটবেন-এই আশায় রয়েছেন দলেরই অপর গোষ্ঠী। ওই গোষ্ঠীর দাবি, তা না হলে বামেদের সাহায্য নিয়ে নতুন বোর্ড গড়তে হবে। তখন ওই সদস্যরা আরও ফাঁপড়ে পড়বেন। উল্লেখ্য, নিবার্চিত সাত বাম সদস্যদের মধ্যে ওবিসি মহিলা রয়েছেন। সোমবার অনাস্থা আনার পর দলের নেতৃত্বরা বিষয়টি নিয়ে বৈঠক করে ক্ষোভের নিষ্পত্তি করার চেষ্টা করেন। মঙ্গলবার আটজন দস্য-সহ দলের বিক্ষুব্ধদের নিয়ে বৈঠক করলেও কাজ হয়নি। উল্টে বৈঠক তপ্ত হয়ে ওঠে।

সদ্য লোকসভা ভোটের ফল বেরিয়েছে। রাজ্যে শাসকদল তৃণমূল ভাল ফল করলেও জাতীয় স্তরে বিজেপি একাই ম্যাজিক ফিগার পেয়েছে। ফলে বিজেপির প্রতি আগ্রহ দেখাচ্ছেন সাধারণ মানুষ সহ সমস্ত দলেরই বিক্ষুদ্ধরাই। এই পরিস্থিতিতেই শাসক দল তৃণমূলের নিবার্চিত সদস্যরা দলের প্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থা আনায় ফাঁপড়ে পড়ে গিয়েছেন দলীয় নেতৃত্বরা। স্থানীয় সূত্রে খবর, দাসপুরে বরাবরই তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব রয়েছে। কিন্ত সেই গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের মাত্রা যে কতটা, দলের প্রধানের বিরুদ্ধে আনা এই অনাস্থাই তা আরও স্পষ্ট করে দিল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

ghatal tmc group-clash
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE