Advertisement
০৪ মে ২০২৪

চাকরির নামে প্রতারণা-চক্র, ধৃত শিক্ষক

দু’টি বেসরকারি হাসপাতালকে সামনে রেখে একটি প্রতারক চক্র হলদিয়া মহকুমা-সহ পূর্ব মেদিনীপুর জেলা থেকে কয়েক কোটি টাকা তুলেছে। এই মর্মে হলদিয়ার বিভিন্ন থানায় অভিযোগ দায়ের করেছিলেন প্রতারিত বেশ কিছু যুবক। তার ভিত্তিতে মহকুমা পুলিশ সুতাহাটা থানার বাসিন্দা এক যুবককে শুক্রবার রাতে কুকড়াহাটির লঞ্চঘাট থেকে গ্রেফতার করে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
হলদিয়া শেষ আপডেট: ২২ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০০:৫১
Share: Save:

দু’টি বেসরকারি হাসপাতালকে সামনে রেখে একটি প্রতারক চক্র হলদিয়া মহকুমা-সহ পূর্ব মেদিনীপুর জেলা থেকে কয়েক কোটি টাকা তুলেছে। এই মর্মে হলদিয়ার বিভিন্ন থানায় অভিযোগ দায়ের করেছিলেন প্রতারিত বেশ কিছু যুবক। তার ভিত্তিতে মহকুমা পুলিশ সুতাহাটা থানার বাসিন্দা এক যুবককে শুক্রবার রাতে কুকড়াহাটির লঞ্চঘাট থেকে গ্রেফতার করে। তাঁর নাম উদয় সাহু। তিনি পেশায় প্রাথমিক শিক্ষক। তাঁকে শনিবার হলদিয়া মহকুমা আদালতে হাজির করানো হলে বিচারক ওই শিক্ষককে সাত দিনের পুলিশ হেফজতের নির্দেশ দেন।

পূর্ব মেদিনীপুরের পুলিশ সুপার সুকেশ জৈন রবিবার জানান, চাকরির নাম করে একটি প্রতারণা চক্র জেলায় সক্রিয় ছিল। আমরা অভিযোগ পেয়ে তদন্তে এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছি। অন্য অভিযুক্তদেরও ধরা হবে।

হলদিয়া মহকুমা পুলিশের বক্তব্য, অভিযুক্তেরা চাকরি দেওয়ার নাম করে জেলায় প্রায় চার কোটি টাকা প্রতারণা করেছেন। প্রতারিত যুবকেরা সুতাহাটা থানায় তিনটি, মহিষাদল থানায় দু’টি, ভবানীপুর থানায় দুটি এবং হলদিয়া থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন। পুলিশ সূত্রের খবর, প্রতারিত হয়েছেন অন্তত দু’শো জন। পুলিশের বক্তব্য, মেচেদার কাছে অবস্থিত একটি বেসরকারি হাসপাতালে চাকরি দেওয়ার নাম করে টাকা তোলে চক্রটি। সুতাহাটার ওসি শীর্ষেন্দু দাস জানান, এক এক জনের কাছ থেকে অভিযুক্তেরা লক্ষাধিক টাকা নেয়। তিনি বলেন, “এই প্রতারণা চক্রের সঙ্গে হলদিয়ার বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজের এক চিকিৎসক যুক্ত বলে জানা গিয়েছে।” পুলিশ জেনেছে, কলকাতার বাসিন্দা এক ব্যক্তি চক্রের অন্যতম মাথা।

কী ভাবে চলত প্রতারণা? প্রতারকেরা কাগজে বিজ্ঞাপন দেয়, জেলার এক বেসরকারি হাসপাতাল কিনে তা মাল্টি স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে রূপান্তরিত করা হবে। এ জন্য প্রচুর লোক নেওয়া হবে। এরপরেই চক্রটি জাল বিছোয়। স্থানীয় সুতাহাটা, আনারপুর, কুকড়াহাটি, চৈতন্যপুর এলাকার বিভিন্ন যুবকের কাছ থেকে টাকা তোলে। মেচেদার এক বেসরকারি হাসপাতালে আগ্রহীদের ইন্টারভিউ হয়। কিন্তু, শেষে চাকরি দিতে না পারায় বিষয়টি পুলিশ-প্রশাসনের নজরে আসে। তখনই প্রতারণার মামলা রুজু হয়।

বিষয়টি জানাজানি হতে মেচেদার কাছে অবস্থিত ওই বেসরকারি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ নড়েচড়ে বসেন। তাঁরা পুলিশকে জানান, হাসপাতাল বিক্রি নিয়ে কোনও চুক্তি হয়নি। হাসপাতালের কর্ণধার কোরবান শাহ বলেন, “উদয় সাহুরা আমাদের জানায় তাঁরা হলদিয়ার লক্ষণ শেঠের হাসপাতাল কিনেছে। এই হাসপাতালও কিনতে চায়।” তিনি জানান, কিছু পরে আমাদের সন্দেহ হওয়ায় বিষয়টি পুলিশের নজরে আনা হয়। অভিযোগ, ইতিমধ্যে ওই সংস্থাটি কাগজে হাসপাতালটি বিক্রি হয়ে গেছে বলে ভুয়ো বিজ্ঞাপন দেয়। তিনি বলেন, “পরে আমাদের চাপে ওই সংস্থা সংবাদপত্রে সংশোধনীও দেয়।” কোরবান শাহেরও অভিযোগ, বেশ কিছু চিকিৎসক এই চক্রের সঙ্গে যুক্ত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

haldia imposter
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE