Advertisement
১৬ মে ২০২৪

জামিনে জেলমুক্ত মাওবাদী নেতা অরবিন্দ

জামিনে মুক্তি পেলেন মাওবাদী তাত্ত্বিক নেতা অরবিন্দ বাছাড়। শুক্রবার বিকেলে ঝাড়গ্রাম উপ-সংশোধনাগার থেকে ছাড়া পান তিনি। গত ১২ এপ্রিল দেশদ্রোহের একটি পুরনো মামলায় অরবিন্দের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছিল ঝাড়গ্রাম এসিজেএম আদালত।

নিজস্ব সংবাদদাতা
ঝাড়গ্রাম শেষ আপডেট: ২৩ অগস্ট ২০১৪ ০০:৩১
Share: Save:

জামিনে মুক্তি পেলেন মাওবাদী তাত্ত্বিক নেতা অরবিন্দ বাছাড়। শুক্রবার বিকেলে ঝাড়গ্রাম উপ-সংশোধনাগার থেকে ছাড়া পান তিনি। গত ১২ এপ্রিল দেশদ্রোহের একটি পুরনো মামলায় অরবিন্দের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছিল ঝাড়গ্রাম এসিজেএম আদালত। গত ২৭ জুলাই উত্তর চব্বিশ পরগনার বাদুড়িয়া থানার মাগুরখালির বাড়ি থেকে বছর আটচল্লিশের অরবিন্দকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। এরপর ঝাড়গ্রাম আদালতে তোলা হলে জামিনের আর্জি খারিজ হয়ে ৩০ জুলাই থেকে অরবিন্দের ঠাঁই হয় ঝাড়গ্রাম উপ-সংশোধনাগারে। দু’বার অরবিন্দের জামিনের আর্জি খারিজ করে দিয়েছিল ঝাড়গ্রাম এসিজেএম আদালত। এরপর ঝাড়গ্রামের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা আদালতে অরবিন্দের জামিনের আবেদন করেন তাঁর আইনজীবী কৌশিক সিংহ। গত বুধবার ঝাড়গ্রামের প্রথম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা বিচারক পার্থসারথি চক্রবর্তী অরবিন্দের জামিন মঞ্জুর করেন। শুক্রবার আদালতে জামিননামা দাখিল হওয়ার পর উপ-সংশোধনাগার থেকে ছাড়া পান অরবিন্দ। এর আগে ওড়িশার ৬টি মামলায় বেকসুর খালাস পেয়েছেন এই মাওবাদী নেতা।

কেন জামিন পেলেন অরবিন্দ? অভিযুক্তের আইনজীবী কৌশিক সিংহ জানান, ২০০৯ সালের ২৮ ডিসেম্বর নয়াগ্রামের দেউলবাড় গ্রামে এক ঠিকাদারের বাড়িতে সন্দেহভাজন মাওবাদীরা সশস্ত্র হামলা চালায় বলে অভিযোগ। ওই মামলায় অরবিন্দকে অভিযুক্ত করা হয়। কিন্তু মূল এফআইআর-এ অরবিন্দ বাছাড়ের নাম ছিল না। পরে পুলিশ তদন্ত করে তাঁর নাম পাওয়া গিয়েছে বলে দাবি করে। তদন্ত চলাকালীন ফৌজদারি কার্যবিধি আইনের ১৬১ ধারায় ৬ জন প্রত্যক্ষদর্শীর বয়ান নেয় পুলিশ। কিন্তু আদালতে দাখিল করা পুলিশের নথিতে ওই ছয় জনের বয়ানে অভিযুক্ত হিসেবে অরবিন্দের নামটি কিন্তু নেই। চার্জশিট হওয়া ওই মামলায় এখনও কয়েকজন অভিযুক্ত পলাতক রয়েছে। তাই এই মুহূর্তে মামলাটির বিচার সম্ভব নয়। সেই কারণেই জামিন মঞ্জুর করেছে আদালত।

এ দিন ঝাড়গ্রাম উপ সংশোধনাগার থেকে বেরিয়ে অরবিন্দ বলেন, “আগের সরকারের চেয়েও বর্তমান সরকার মিথ্যা মামলায় ধরপাকড়ের ক্ষেত্রে আরও উগ্রতা দেখাচ্ছে। আমার আশঙ্কা, আমাকে আবার গ্রেফতার করা হতে পারে।” এ দিন অরবিন্দকে বাদুড়িয়ায় মাগুরখালির বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার জন্য এসেছিলেন তাঁর স্ত্রী অর্চনাদেবী। স্ত্রী সঙ্গে বাড়ি ফিরে যান অরবিন্দ।

অরবিন্দের গ্রেফতারি এই প্রথম নয়। ২০০৮ সালে ওড়িশার ময়ূরভঞ্জে একটি মাওবাদী হামলায় একাধিক ব্যক্তির প্রাণহানির ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে অরবিন্দের বিরুদ্ধে মামলা রুজু হয়। লালগড় আন্দোলনকে কেন্দ্র করে বছর চারেক আগে এ রাজ্যের জঙ্গলমহলের পরস্থিতি যখন উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল, তখন ওই সব এলাকায় নিয়মিত যেতেন অরবিন্দ। ২০১০ সালে গোপীবল্লভপুর থেকে তাঁকে গ্রেফতার করে কলকাতা পুলিশের স্পেশাল টাস্ক ফোর্স। পরে তাঁকে ওড়িশা পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়। বছর চারেক ওড়িশার বারিপদা সেন্ট্রাল জেলে ছিলেন। তারপরে জেল থেকে ছাড়া পেয়ে কয়েকটি গোপন ডেরায় কিছুদিন কাটানোর পর গত ২৩ মে বাদুড়িয়ার বাড়িতে ফেরেন অরবিন্দ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

maoist leader arabinda jhargram
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE