যাতায়াতে ভরসা সেই ট্রেকারই, তমলুকে।
ট্রেকার, ম্যাজিক ভ্যানে অতিরিক্ত যাত্রী বোঝাই ও ছাদে মালপত্র নিয়ে যাতায়াত এবং এর জেরে দুর্ঘটনা নতুন নয়। এমন পরিস্থিতি সামলাতে অবশেষে নড়েচড়ে বসেছে পূর্ব মেদিনীপুর জেলা প্রশাসন। জেলা পরিবহণ দফতরের তরফে শুরু হয়েছে ধরপাকড় অভিযান। গত কয়েক দিনের অভিযানে ২৭টি ট্রেকারের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়েছে।
পূর্ব মেদিনীপুরের জেলাশাসক অন্তরা আচার্য বলেন, “ট্রেকার-সহ বিভিন্ন গাড়িতে অতিরিক্ত যাত্রীবহনের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। কোনও গাড়িতেই অতিরিক্ত যাত্রীবহন করতে দেওয়া হবে না। যাত্রীদের স্বার্থে প্রয়োজনে নতুন করে ট্রেকারের পারমিট দেওয়া হবে।” তিনি জানান, এ বিষয়ে আলোচনার জন্য আগামী ৪ জুলাই বাস ও ট্রেকার মালিকদের প্রতিনিধিদের নিয়ে বৈঠক ডাকা হয়েছে।
জেলার আঞ্চলিক পরিবহণ আধিকারিক আরিফউদ্দিন খান জানিয়েছেন, অভিযানের পাশাপাশি ট্রেকার চালক, মালিকদের সচতেন করতে জোরদার প্রচার চালানো হচ্ছে। সরকারি নিয়মানুযায়ী, একটি ট্রেকারের চালক-সহ আসন সংখ্যা ১০ থেকে সর্বাধিক ১৩টি। অভিযোগ ময়না, পাঁশকুড়া, কোলাঘাট, নন্দীগ্রাম, খেজুরি, পটাশপুর, ভগবানপুরের গ্রামীণ এলাকা থেকে স্থানীয় বাজার, ব্লক, মহকুমা সদর, এমনকি জেলার সদর তমলুকে যাতায়াত করা ট্রেকার, ম্যাজিকভ্যানগুলিতে দিনের পর দিন এর দ্বিগুণ, তিনগুণ যাত্রী পরিবহণ করা হচ্ছে। কিন্তু, এত দিন প্রশাসনের তরফে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
এর মধ্যে শুরু হয়েছে বাস-ট্রেকার কাজিয়াও। বাসমালিক সংগঠনগুলি বহুদিন ধরেই ট্রেকার, ম্যাজিক ভ্যান চলাচল নিয়ন্ত্রণের জন্য রাজ্য বা জাতীয় সড়কের বাসরুটে ট্রেকার, ম্যাজিক ভ্যান চলাচল বন্ধ করার জন্য দাবি জানিয়ে আসছে। দিনদিন তা বাড়ছে বলেও অভিযোগ। বাসমালিকদের সংগঠন পূর্ব মেদিনীপুর ডিস্ট্রিক্ট বাস অনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক সুকুমার বেরার অভিযোগ, “ক্ষতির মুখে অনেকেই বাস চালানো বন্ধ করে দিয়েছেন। এই সমস্যার বিষয়ে জেলা প্রশাসন ও পরিবহণ দফতরের কাছে আগে একাধিকবার অভিযোগ জানানো হলেও কোনও প্রতিকার হয়নি।” ট্রেকার মালিকদের পাল্টা অভিযোগ, যেখানে বাস পরিষেবা নেই, সেখানে তাঁরাই যাত্রীদের অন্যতম ভরসা। অথচ জেলা পরিবহণ দফতর এক তরফা ভাবে শুধু তাঁদের বিরুদ্ধেই পদক্ষেপ নিচ্ছে। তাঁদের দাবি, বাসগুলিও অতিরিক্ত যাত্রী তোলে, এমনকী ছাদে নানা জিনিস পরিবহণ করে।
পরিস্থিতিতে সামনে এসেছে অভিযান চালানোর মতো পরিবহণ দফতরের আধিকারিক কিংবা কর্মীসঙ্কটও। এক পদস্থ আধিকারিক জানান, জেলায় পরিবহণ দফতরের তিন জন পরিদর্শক রয়েছেন। এত অল্প সংখ্যক পরিদর্শক দিয়ে সারা জেলায় নিয়মিত অভিযান চালানো সম্ভব নয়। তিনি জানান, পরিস্থিতি সামাল দিতে পুলিশের সাহায্যে অভিযান চলছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy