এক তরুণীকে খুনের অভিযোগ উঠল শ্বশুরবাড়ির লোকজনের বিরুদ্ধে। চন্দ্রকোনা থানার গোঁসাইবাজারের এই ঘটনায় নিহতের নাম পুজা পান্ডে (২০)। নিহতের বাবার অভিযোগের ভিত্তিতে পূজার স্বামী, শ্বশুর এবং শাশুড়িকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, বছর দুয়েক আগে চন্দ্রকোনা থানার ঘনরামপুরের বাসিন্দা গুরুপদ চক্রবর্তীর মেয়ে পূজার সঙ্গে চন্দ্রকোনা শহরের গোঁসাইবাজারের যুবক পেশায় ব্যবসায়ী দেবাশিস পান্ডের বিয়ে হয়। গুরুপদবাবুর অভিযোগ, বিয়ের পর থেকেই পণের দাবি-সহ নানা কারণে পূজার উপর নির্যাতন চালাত শ্বশুরবাড়ির লোকেরা। বাপের বাড়ি যেতে দেওয়া হত না, প্রতিবেশীদের সঙ্গে কথা বলতেও দেওয়া হত না। দেবাশিসের মদতেই এ সব চলছিল বলে গুরুপদবাবুর অভিযোগ। তিনি বলেন, “এ সব সহ্য করেই আমার মেয়ে শ্বশুরবাড়িতে ছিল। মাঝে মধ্যে আমি গিয়ে দেখা করে আসতাম। মেয়েকে ফোনেও কথা বলতে দেওয়া হত না।” গুরুপদবাবু জানান, শনিবার সকালে তিনি জানতে পারেন মেয়ে চন্দ্রকোনা হাসপাতালে মৃত অবস্থায় পড়ে রয়েছে। খবর পেয়েই তিনি হাসপাতালে পৌঁছন। তারপর পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করেন।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, শনিবার ভোরে পূজাকে মৃত অবস্থায় চন্দ্রকোনা গ্রামীণ হাসপাতালে ফেলে রেখে চলে যান স্বামী দেবাশিস-সহ শ্বশুরবাড়ির লোকেরা। পরে ঘটনার কথা জানাজানি হলে তাঁরা পালানোর ছক কষেন। ততক্ষণে অবশ্য স্থানীয় বাসিন্দারা এবং পূজার বাপের বাড়ির লোকজন বাড়ি ঘিরে ফেলে। বাড়ি লক্ষ করে ইট-পাটকেলও ছোড়ে ক্ষুব্ধ জনতা। ফলে, পূজার শ্বশুরবাড়ির কেউই পালাতে পারেননি। তবে তাঁরা সদর দরজায় তালা দিয়ে দেন। পরে পুলিশ এসে তালা ভেঙে পূজার স্বামী দেবাশিস, শ্বশুর অলোক এবং শাশুড়ি স্নেহলতাকে গ্রেফতার করে। শনিবারই ধৃতদের ঘাটাল আদালতে তোলা হয়। বিচারক ১৪ দিন জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন।
পুলিশ তদন্তে জানতে পেরেছে, শুক্রবার রাতে পূজার সঙ্গে চূড়ান্ত অশান্তি হয় শ্বশুরবাড়ির লোকেদের। তরুণী ওই বধূকে মারধরও করা হয়। কিন্তু কী ভাবে পূজাকে খুন করা হয়েছে, তা নিয়ে ধন্দে পুলিশ। পুলিশ জানিয়েছে, নিহতের শরীরে কোথাও আঘাতের চিহ্ন নেই। বিষক্রিয়ায় মৃত্যুরও প্রমাণ মেলেনি। পুলিশ জানিয়েছে, নিহতের বাবার অভিযোগের ভিত্তিতে খুনের মামলা শুরু করা হয়েছে। পূজার শ্বশুরবাড়িটি সিল করে দেওয়া হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy