Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

দেখা মিলল না দেবের, হতাশ চন্দ্রকোনা রোড

“কর্মিসভা জিনিসটা কী, জানি না! আজ মেদিনীপুরে ওই সভা হবে। দেখা যাক কী হয়। তবে আস্তে আস্তে আমি সবটাই শিখব।” নতুন বাংলা ছবির শ্যুটিংয়ে চন্দ্রকোনা রোডের ফিল্মসিটিতে এসে পরিচালক-প্রযোজককে পাশে নিয়ে জিন্স, ডিপ নেভি ব্লু টি-শার্টে সাংবাদিক বৈঠকে এমনটাই বললেন ঘাটাল লোকসভা কেন্দ্রে তারকা তৃণমূল প্রার্থী দীপক অধিকারী ওরফে দেব।

ফিল্মসিটিতে তখন শ্যুটিং চলছে।

ফিল্মসিটিতে তখন শ্যুটিং চলছে।

অভিজিত্‌ চক্রবর্তী
চন্দ্রকোনা রোড শেষ আপডেট: ১৯ মার্চ ২০১৪ ০০:৩৭
Share: Save:

“কর্মিসভা জিনিসটা কী, জানি না! আজ মেদিনীপুরে ওই সভা হবে। দেখা যাক কী হয়। তবে আস্তে আস্তে আমি সবটাই শিখব।”

নতুন বাংলা ছবির শ্যুটিংয়ে চন্দ্রকোনা রোডের ফিল্মসিটিতে এসে পরিচালক-প্রযোজককে পাশে নিয়ে জিন্স, ডিপ নেভি ব্লু টি-শার্টে সাংবাদিক বৈঠকে এমনটাই বললেন ঘাটাল লোকসভা কেন্দ্রে তারকা তৃণমূল প্রার্থী দীপক অধিকারী ওরফে দেব। আগাগোড়া স্বভাব সুলভ খোশ মেজাজে ছিলেন এই জনপ্রিয় অভিনেতা। জেতার ব্যাপারে প্রত্যয়ী দেব সাংবাদিক বৈঠকে বলেন, “স্বচ্ছ চিন্তাভাবনা আর ইচ্ছা থাকলে, যে কোনও কাজই করা যায়। আমি জেতার ব্যাপারে আশাবাদী। জিতলে সিনেমা ও রাজনীতি দু’টোই করব। কোনওটাতেই সমস্যা হবে না।”

‘ঘরের ছেলে’ দেব মঙ্গলবার চন্দ্রকোনা রোডে আসবে এই খবর চাউর হতেই সকাল থেকেই ফিল্মসিটির আশেপাশে ছিল থিকথিকে ভিড়। ফিল্মসিটি সংলগ্ন ঢুকি, তুঁতবাড়ি, বরপাড়া, ভেলাইটিকারি-সহ বেশ ক’য়েকটি গ্রামের বাসিন্দারা সাগ্রহে অপেক্ষা করছিলেন কতক্ষণে তাঁদের প্রিয় নায়ক আসবেন। একের পর এক দামি গাড়ি ফিল্মসিটির কাছাকাছি আসতেই উপস্থিত আবালবৃদ্ধবনিতা ভাবছিলেন এই বুঝি ইচ্ছেপূরণ হল! তাঁরা জানতেন না ‘নিরাপত্তাজনিত কারণে’ দেব নির্ধারিত সময়েই আগেই ৭টা ১০ নাগাদ পৌঁছে গিয়েছেন ফিল্ম সিটিতে। কিন্তু, দেব ফিল্মসিটির মধ্যে ঢুকে গিয়েছেন এই সত্যিটা জানার পরও উপস্থিত জনতা বহুক্ষণ দাড়িয়ে ছিলেন প্রিয় নায়ককে কাছ থেকে শুধুমাত্র চোখের দেখা দেখবেন বলে! উল্লেখ্য, চন্দ্রকোনা রোড শালবনি বিধানসভা এবং ঝাড়গ্রাম লোকসভা এলাকার অর্ন্তভুক্ত। নিজেদের প্রার্থী নন জেনেও ভিড় জমিয়েছিলেন তাঁরা।

টিভিতে চোখ দেবের জেঠিমার, কেশপুরে।

বস্তুত, নতুন ছবির শুটিং ঘিরে আঁটোসাঁটো নিরাপত্তার বেষ্টনী ছিল ফিল্ম সিটি চত্বরে। কাউকেই কাছে ঘেঁষতে দেওয়া হয়নি। ভিড়ের মধ্যেই দাঁড়িয়ে ছিলেন বছর ষাটেকের বৃদ্ধ বিজয় ঘোষ, স্কুল শিক্ষক দেবায়ন ঘোষ, পেশায় কৃষক সলিল হাঁসদা, ঠিকাকর্মী বাবু মাহাতোরা। প্রত্যেকেরই প্রশ্ন, কখন হবে দেবদর্শন? তবে সাধ্য আছে এমন কিছু অত্যুত্‌সাহী আগেভাগেই ৫০০ টাকার টিকিট থেকে ঢুকে পড়েছিলেন ফিল্মসিটিতে। তবে তাঁরা যে হাতেগোনা ক’য়েক জন তা বলাইবাহুল্য। দেবদর্শনে আসা বিজয়বাবুর কথায়, “আমাদের তো আর টিকিট কেটে দেখার সাধ্য নেই। তাই রাস্তাতেই অপেক্ষা করছিলাম। বহুক্ষণ দাঁড়িয়ে ছিলাম। কিন্তু, দেখা পেলাম কই!” অপেক্ষাই সার, ব্যস্ত অভিনেতাকে কাছ থেকে দেখার সাধ এ যাত্রায় অপূর্ণই থেকে গিয়েছে।

নতুন ছবির প্রথম দিনের শুটিং শেষে সাংবাদিক বৈঠক করেন ঘাটালের তৃণমূল প্রার্থী দেব। সভায় আগাগোড়া স্বচ্ছন্দ্য ছিলেন এই তারকা অভিনেতা। অকপটে জানিয়েছেন কেন তিনি তৃণমূলের হয়ে দাঁড়ানোর প্রস্তাবকে উপেক্ষা করেননি, কেন ঘাটাল লোকসভা আসন, কেনইবা রাজনীতি। দেবের কথায়, “নতুন প্রজন্মকে রাজনীতিমুুখী করতেই রাজনীতিতে এসেছি।” কেন তৃণমূল, এর উত্তরে দেব বলেন, “অনেক সময় কারও কথা ফেলা যায় না। বিশেষ করে যাঁদের আমরা পছন্দ করি। দিদিকে আমি ভালবাসি। তাই দিদির প্রস্তাব উপেক্ষা করতে পারিনি।” নিজের লোকসভা কেন্দ্র সম্পর্কে তৃণমূল প্রার্থীর মত, “আমার দেশের বাড়ি, মামার বাড়ি, আত্মীয়-পরিজনরা এখানে থাকেন। মেদিনীপুর আমার পরিচিত জায়গা। এমনকী জন্মভূমিও। এখানে আমি সবচেয়ে বেশি স্বচ্ছন্দ্য।”

জিতলে ঘাটাল এলাকার উন্নতির জন্য যথাসাধ্য করবেন বলে জানিয়ে দিয়েছেন অভিনেতা দেব। দেবের বিশ্বাস, কোনও বিষয় সম্পর্কে স্বচ্ছ ধারণা এবং পজেটিভ চিন্তাভাবনা থাকলেই উন্নতি করা সম্ভব। এ যে শুধুমাত্র ‘ফিল্মি ডায়ালগ’ নয়, তা-ও স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন তারকা তৃণমূল প্রার্থী। দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে পরামর্শ করে প্রচার শুরু করবেন বলে স্পষ্ট করে দিয়েছেন। প্রচারে গ্রামের বাড়িতেও যাবেন দেব। দেবের কথায়, “আপনারা আমাকে সহযোগিতা করুন। ভুল-ত্রুটি হলে ধরিয়ে দেবেন। আমি কাজ করতে চাই।”

—নিজস্ব চিত্র।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE