Advertisement
E-Paper

নাতিকে বাঁচাতে দোরে দোরে ঘুরছেন দাদু

বয়স মাত্র চার বছর। এই বয়সেই শরীরে বাসা বেঁধেছে মারণ কর্কট রোগ। জেলার চিকিৎসকেরা আগেই আশঙ্কা করেছিলেন। ভেলোরে গিয়ে সেই আশঙ্কায় সত্যি হয়েছে। জানা গিয়েছে চার বছরের অনির্বাণ ঘোষ ক্যানসারে আক্রান্ত। তবে ভরসা একটা রয়েছে। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, এটা রোগের একেবারেই প্রথম স্তর। অর্থাৎ যথাযথ চিকিৎসা হলেই সেরে উঠবে অনির্বাণ।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৮ মে ২০১৪ ০১:৪৩
অনির্বাণ ঘোষ।—নিজস্ব চিত্র।

অনির্বাণ ঘোষ।—নিজস্ব চিত্র।

বয়স মাত্র চার বছর। এই বয়সেই শরীরে বাসা বেঁধেছে মারণ কর্কট রোগ। জেলার চিকিৎসকেরা আগেই আশঙ্কা করেছিলেন। ভেলোরে গিয়ে সেই আশঙ্কায় সত্যি হয়েছে। জানা গিয়েছে চার বছরের অনির্বাণ ঘোষ ক্যানসারে আক্রান্ত। তবে ভরসা একটা রয়েছে। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, এটা রোগের একেবারেই প্রথম স্তর। অর্থাৎ যথাযথ চিকিৎসা হলেই সেরে উঠবে অনির্বাণ।

আশ্বাস পাওয়ার পর থেকেই চারদিকে ছুটে বেড়াচ্ছেন অনির্বাণের ঠাকুর্দা ৭২ বছরের সুধাংশু ঘোষ। যার কথা শুনছেন, তাঁর কাছে গিয়েই হাত পাতছেন। চিকিৎসার খরচ যে অনেক। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, টানা আড়াই বছর ধরে চিকিৎসা চালিয়ে যেতে হবে। খরচ ৩ লক্ষ টাকা। পরবর্তীকালে খরচ বাড়তেও পারে। অনির্বাণের বাবা দুলাল ঘোষ বেসরকারি সংস্থার ঠিকা শ্রমিক। জমি রয়েছে অতি সামান্য। অল্প রোজগারে যা হোক করে সংসার চলত কেশিয়াড়ি থানা এলাকার খাজরা গ্রামের সুধাংশুবাবুর। তার মাঝেও সামান্য কিছু সঞ্চয় ছিল। কিন্তু অনির্বাণের চিকিৎসা করাতে তা-ও প্রায় শেষ হয়ে যায়। যখন ভেলোর গেলেন, তখন সঞ্চয় মাত্র ৩০ হাজার টাকা। ছেলেকে বাঁচানোর তাগিদে বাবা ওই সামান্য সম্বল নিয়েই ভেলোর যান। সেখানে ক্যানসার হয়েছে ও চিকিৎসার খরচ ন্যূনতম তিন লক্ষ টাকা শুনে সকলেই হতবাক। খবর পাঠান বাড়িতে। তারপর থেকেই সুধাংশুবাবুর দৌড়ঝাঁপ শুরু। চেয়ে চিন্তে যদি টাকাটা জোগাড় করে যায়।

অনির্বাণের ক্যানসারের কথা শুনে স্থানীয় পল্লিপ্রাণ ক্লাবের সদস্যরা চাঁদা আদায়ে ঝাঁপিয়ে পড়েন। ক্লাব সভাপতি নিশীথবরণ পাল নিজে ৪ হাজার টাকা দেন। ক্লাবের সদস্য বিকাশ রায় দেন ২ হাজার টাকা। স্থানীয় বাসিন্দাদের অনেকেই যতটা পেরেছেন সাহায্য করেছেন। ট্রলি চালক শঙ্কর দাসও ১০০ টাকা দিয়েছেন, দোকানে দোকানে সুপুরি বিক্রি করা এক হকার দিয়েছেন ৪০০ টাকা। এ ভাবেই ক্লাব থেকে তুলে দেওয়া হয়েছে ৫১ হাজার টাকা। সব মিলিয়ে এখনও পর্যন্ত ১ লক্ষ টাকা জোগাড় করা গিয়েছে। কিন্তু বাকি টাকা আসবে কোত্থেকে! সুধাংশুবাবু অবশ্য আশা হারাচ্ছেন না। বৃদ্ধের কথায়, “পাড়ার ক্লাবের ছেলেরা দু’দিনে ৫১ হাজার টাকা তুলে দেওয়ায় মনে বল পেলাম। মন বলছে, নিশ্চয়ই দেশে সহৃদয় মানুষ রয়েছেন। আমি সকলের কাছে যাবো। মুখ্যমন্ত্রীকেও সাহায্যের আবেদন জানাবো।” পল্লিপ্রাণ ক্লাবের সভাপতি নিশীথবরণবাবুর কথায়, “আমরাও চেনা-পরিচিত, বন্ধুবান্ধব সকলের কাছে বার্তা পাঠাচ্ছি, যাতে প্রত্যেকে কিছু সাহায্য করেন।”

প্রধানমন্ত্রীর দফতরে আবেদন জানানোর পাশাপাশি বিভিন্ন ব্যবসায়ী, বিভিন্ন সংস্থা, সংগঠন থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ, সকলের কাছেই হাত পাতছেন সুধাংশুবাবু। বৃদ্ধের কথায়, “দু’শো, পাঁচশো, হাজার, যার কাছে যেটুকু সাহায্য পাই, তাই ছুটে বেড়াচ্ছি।” শুধু তো আর অনির্বাণের চিকিৎসা খরচ নয়, বাবা-মাকেও সঙ্গে থাকতে হচ্ছে। তাঁদের থাকা-খাওয়ার খরচ রয়েছে। অনির্বাণের বাবা দুলালবাবু বেসরকারি সংস্থার কর্মী হওয়ায় কাজে না গেলে আবার মাইনেও মিলবে না। নিজেরা কী খাবেন, আর ছোট্ট অনির্বাণের চিকিৎসাই বা কী ভাবে করাবেন, এই দুশ্চিন্তাতেই দিন কাটাচ্ছে ঘোষ পরিবার।

শিক্ষা মেলা। মেদিনীপুর শহরের স্পোর্টস কমপ্লেক্সে মঙ্গলবার থেকে শুরু হল শিক্ষা মেলা। এক বেসরকারি সংস্থার উদ্যোগে দু’দিন ব্যাপী এই মেলার আয়োজন। ৩০টিরও বেশি বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এই মেলায় স্টল দিয়েছে। আয়োজক সংস্থার তরফে জানানো হয়েছে, মাধ্যমিক পরীক্ষার ফল বেরিয়েছে। সামনে উচ্চ মাধ্যমিকের ফলপ্রকাশ। এই সময় পড়ুয়াদের চাহিদার কথা মাথায় রেখেই শিক্ষা মেলার আয়োজন করা হয়েছে।

cancer patient anirban ghosh medinipur
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy