Advertisement
E-Paper

নিহত স্কুলপড়ুয়ার স্মরণে বেদির পরিকল্পনা গ্রামবাসীর

গ্রামের দুই মেয়ের পরিণতি যেন কিছুতেই মেনে নিতে পারছেন না কোটবাড়ের বাসিন্দারা। এক দিকে পাড়ার বছর ষোলোর এক কিশোরীর নৃশ্যংস হত্যা আর তাকে খুনের পরিকল্পনায় ওই একই বয়সের আর এক কিশোরীর হোমে ঠাঁই হওয়া পূর্ব মেদিনীপুরের পটাশপুরের খড়াইকে কেমন যেন বদলে দিয়েছে।

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ১৬ অক্টোবর ২০১৪ ০০:০০

গ্রামের দুই মেয়ের পরিণতি যেন কিছুতেই মেনে নিতে পারছেন না কোটবাড়ের বাসিন্দারা। এক দিকে পাড়ার বছর ষোলোর এক কিশোরীর নৃশ্যংস হত্যা আর তাকে খুনের পরিকল্পনায় ওই একই বয়সের আর এক কিশোরীর হোমে ঠাঁই হওয়া পূর্ব মেদিনীপুরের পটাশপুরের খড়াইকে কেমন যেন বদলে দিয়েছে। এই ঘটনার পুনরাবৃত্তি যাতে না ঘটে তাই নিহতের স্মৃতির উদ্দেশে একটি বেদি নির্মাণের পরিকল্পনা করেছেন গ্রামবাসী। নিহত কিশোরীর প্রতি এটা তাঁদের শ্রদ্ধার্ঘ্যও বটে। আজ, বৃহস্পতিবার দলমত নির্বিশেষে নিহত কিশোরীর স্মরণে একটি সভারও আয়োজন করেছেন গ্রামের বাসিন্দারা।

গত শনিবার সন্ধ্যায় খড়াই গ্রামের কোটবাড়ের বাড়ি থেকে বান্ধবীর ডাকে বেরিয়ে গিয়েছিল দশম শ্রেণির ওই পড়ুয়া। রবিবার পশ্চিম মেদিনীপুরে বেলদার বড়মাতকাতপুরে একটি নয়ানজুলি থেকে নিহত মেয়েটির দেহ উদ্ধার হয়। পুলিশ দাবি করে, মেয়েটিকে খুনের পরিকল্পনা করেছে তারই সহপাঠিনী। সে ওই গ্রামেরই বাসিন্দা। নিহত মেয়েটির দাদার সঙ্গে অভিযুক্ত মেয়েটির প্রেমের সম্পর্ক ভেঙে যায়। পুলিশের দাবি, সেই আক্রোশেই বর্তমান প্রেমিকের সঙ্গে সহপাঠিনীকে খুনের পরিকল্পনা করে সে। খুন করার আগে মেয়েটিকে ধর্ষণ করেছিল সে, পুলিশের জেরার মুখে এ কথাও কবুল করেছে অভিযুক্ত কিশোরীর বর্তমান প্রেমিক শেখ রফিজুল।

প্রথম পর্যায়ে অপহরণ করে খুনের ঘটনায় মামলা রুজু হলেও ক্রমে এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসায় গণধর্ষণের ধারা সংযুক্তির জন্য আদালতে আবেদন জানিয়েছে পুলিশ। তবে নিহত ধর্ষিতা, নাবালিকা হওয়ায় গণধর্ষণের সঙ্গেই ‘প্রোটেকশন অফ চিলড্রেন ফ্রম সেক্সুয়াল অফেন্সে’র ধারাও যুক্ত করতে হয়। কিন্তু এই সংক্রান্ত আদালত ২৭ অক্টোবর পর্যন্ত বন্ধ থাকায় আবেদন গৃহীত হলেও এখনও স্বীকৃতি পায়নি। এ দিকে যে গাড়িতে ওই কিশোরীকে ধর্ষণ করা হয় বলে অভিযোগ, সেই গাড়িটিও উদ্ধার করেছে পুলিশ। এছাড়াও উদ্ধার করা হয়েছে ধৃত ও নিহত কিশোরীর মোবাইল। তবে রফিজুলের নিজের মোবাইলের হদিস মেলেনি।

অভিযুক্ত কিশোরীর বর্তমান প্রেমিক তথা ঘটনায় অভিযুক্ত রফিজুলের পরিচয় কী? ওই কিশোরীর বাবা জানান, তাঁর বড় ছেলের সঙ্গে রফিজুল চেন্নাইয়ের একটি হোটেলে রান্নার কাজ করত। সেই সূত্রেই তাঁদের পরিবারের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে ওঠে রফিজুলের। প্রথম দিকে তাঁর বড় ছেলে ক্যুরিয়ারে টাকা পাঠালেও পরে রফিজুলই বাড়িতে টাকা নিয়ে আসত। ক্রমশ বাড়ির সকলেরই বিশ্বস্ত হয়ে উঠেছিল বছর কুড়ির রফিজুল। তবে তাঁর দাবি, মেয়ের সঙ্গে রফিজুল বা নিহত কিশোরীর দাদার সঙ্গে সম্পর্কের কথা তিনি কিছুই জানতেন না।

খড়াই থেকে নির্বাচিত তৃণমূলের পটাশপুর পঞ্চায়েত সমিতির কর্মাধ্যক্ষ তাপস বেরা বলেন, “আমরা দলমত নির্বিশেষে একজোট হয়ে একটি বৈঠক ডেকেছি। যাতে মানুষ এই ঘটনা ভুলে না যায় তার জন্য আমরা এই বেদি নির্মাণ করার পরিকল্পনাও করেছি।” সহমত হয়েছেন খড়াই গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্য সিপিএমের নজিবুর মল্লিকও। অভিযুক্ত কিশোরীর বাবা বলেন, “নিহত কিশোরীর বাবা আমার ভাইয়ের মতো। আমিও চাই মেয়েটির স্মৃতির উদ্দেশে হওয়া বেদি গ্রামে শান্তি আনুক। আমার মেয়ের পরিণতিতে গ্রামের ছেলেমেয়েরা যেন এমন ঘটনার কথা মনে জন্মও না দেয়।”

kotbad kotbar pataspur deceased school student dias
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy