Advertisement
০৫ মে ২০২৪

পূর্বে আজ লক্ষ্মণ, কৌতুহলী ঘনিষ্ঠ-বিরোধী দু’পক্ষই

লক্ষ্মণ-জায়া তমালিকা পণ্ডাশেঠ-সহ তাঁর অনুগামীরা সিপিএম দল ছাড়ার ঘোষণার পর মাঝে কেটে গিয়েছে বেশ কয়েকটা দিন। দল ছেড়ে বেরিয়ে আসা অনুগামীদের নিয়ে আগামী ১ অগস্ট কলকাতায় সমাবেশের ডাক দিয়েছেন লক্ষ্মণ শেঠ। তার আগে, আজ নন্দীগ্রাম নিখোঁজ মামলার হাজিরা দিতে তমলুকে আসছেন লক্ষ্মণবাবু। ফলে নেতার সঙ্গে দেখা করতে আদালতে অনুগামীদের ভিড় হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তাই নিয়ে যেমন উৎসাহ রয়েছে লক্ষ্মণ ঘনিষ্ঠ শিবিরে, তেমনই বিরোধী শিবিরের উৎসাহও কম নয়।

নিজস্ব সংবাদদাতা
তমলুক শেষ আপডেট: ৩১ জুলাই ২০১৪ ০০:৩০
Share: Save:

লক্ষ্মণ-জায়া তমালিকা পণ্ডাশেঠ-সহ তাঁর অনুগামীরা সিপিএম দল ছাড়ার ঘোষণার পর মাঝে কেটে গিয়েছে বেশ কয়েকটা দিন। দল ছেড়ে বেরিয়ে আসা অনুগামীদের নিয়ে আগামী ১ অগস্ট কলকাতায় সমাবেশের ডাক দিয়েছেন লক্ষ্মণ শেঠ। তার আগে, আজ নন্দীগ্রাম নিখোঁজ মামলার হাজিরা দিতে তমলুকে আসছেন লক্ষ্মণবাবু। ফলে নেতার সঙ্গে দেখা করতে আদালতে অনুগামীদের ভিড় হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তাই নিয়ে যেমন উৎসাহ রয়েছে লক্ষ্মণ ঘনিষ্ঠ শিবিরে, তেমনই বিরোধী শিবিরের উৎসাহও কম নয়।

দলবিরোধী কাজের অভিযোগে চলতি বছরের ২৭ মার্চ সিপিএম থেকে বহিষ্কৃত হয়েছেন লক্ষ্মণ শেঠ। সেই সময় স্বামী নয়, দলের পাশে থাকারই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন লক্ষ্মণ-জায়া তমালিকাদেবী। সেই ঘোষণার চার মাস পরই অবশ্য সিদ্ধান্ত বদলে গিয়েছে তমালিকাদেবীর। গত ২৬ জুলাই তমালিকা পণ্ডাশেঠ সিপিএম ছাড়ার কথা ঘোষণা করেন। তাঁর সঙ্গে একই সিদ্ধান্তের কথা জানান সিপিএম জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য অমিয় সাহু, অশোক গুড়িয়া, প্রণব দাস, প্রশান্ত পাত্র, শক্তিপদ বেরা-সহ দলের জেলা কমিটির বেশ কয়েকজন সদস্য ও জোনাল কমিটির সম্পাদক। ঘটনার জেরে অনিবার্য হয়ে উঠেছে পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় সিপিএমে ভাঙন।

সিপিএম ছেড়ে বেরিয়ে আসা নিজের অনুগামীদের নিয়ে কাল অর্থাৎ ১ অগস্ট কলকাতায় সমাবেশের ডাক দিয়েছেন লক্ষ্মণবাবু। ওই অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার জন্য আমন্ত্রণ করা হয়েছে সিপিএমের বহিষ্কৃত নেতা তথা রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী রেজ্জাক মোল্লা, প্রসেনজিৎ বসু, শুভনীল চৌধুরীদের। ওই মঞ্চ থেকেই ‘ভারত নির্মাণ মঞ্চ’ নামে নতুন সংগঠন গড়ে লক্ষ্মণবাবু পরবর্তী রাজনৈতিক কার্যকলাপ শুরু করবেন বলে জানা গিয়েছে। এছাড়াও নতুন সংগঠনের পতাকা, লক্ষ্য ও কর্মসূচি আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করা হবে। সিপিএম ছেড়ে আসা কয়েকশো নেতা-কর্মীকে কলকাতায় নিয়ে যাওয়ার জন্য পূর্ব মেদিনীপুর জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে ১০ টি বাস যাবে বলে জানা গিয়েছে।

নন্দীগ্রাম নিখোঁজ মামলায় অভিযুক্ত লক্ষ্মণবাবু উচ্চ-আদালতের নির্দেশে প্রায় দু’বছর ধরে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার বাইরে রয়েছেন। আর এই পরিস্থিতিতে নিজের জেলায় আসছেন তিনি। হতে পারে তা একান্তই আদালতের কাজে। কিন্তু ঘরে ফেরা বলে কথা। তার ওপর তমালিকা পণ্ডাশেঠ-সহ অনুগামীরা দল ছাড়ার ঘোষণা করার পর প্রথমবার জেলা আদালতে আসছেন লক্ষ্মণবাবু। এত দিন আদালতে প্রিয় নেতার সঙ্গে দেখা করার ক্ষেত্রে অনেক বিধি নিষেধ মানতে হয়েছিল দলীয় নেতাদের। দল ছাড়ার ফলে সেই বিধি নিষেধের বাঁধন আর থাকছে না। ফলে আজ আদালতে লক্ষ্মণ অনুগামীদের ভিড় কতটা হয়, তাও নজর করার মতোই। লক্ষ্মণবাবুর সঙ্গে তাঁর অনুগামীদের সমাবেশ নিয়ে আলোচনার জল্পনাও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না একেবারেই।

দলছাড়ার ঘোষণার দিনেই নন্দীগ্রাম পর্বে দায়ের হওয়া মামলায় অভিযুক্ত সিপিএম নেতা-কর্মী ও ঘরছাড়াদের পাশে থাকার বার্তা দিয়েছেন লক্ষ্মণ-অনুগামীরা। ইতিমধ্যে নন্দীগ্রামের ঘরছাড়া ও মামলায় অভিযুক্তদের একাংশকে নিয়ে বৈঠক করেছেন লক্ষ্মণ-অনুগামী নেতৃত্বরা। পূর্ব মেদিনীপুর জেলার দায়িত্বপ্রাপ্ত সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য রবীন দেব জানিয়েছেন, যাদের নামে পদত্যাগপত্র পাওয়া গিয়েছে তাদের সঙ্গে কথা বলা হবে। গত ২৬ জুলাই সিপিএম দল ছাড়তে চেয়ে লক্ষ্মণ-অনুগামী যে ৬ জন জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন তাঁর মধ্যে অমিয় সাহু, প্রণব দাস ও প্রশান্ত পাত্রকে কিছুদিন আগেই তিনমাসের জন্য দল থেকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। লক্ষ্মণ-জায়া তমালিকা পণ্ডাশেঠ, অশোক গুড়িয়া, শক্তিপদ বেরার বিরুদ্ধে দলীয়ভাবে অভিযোগ নেই।

আগামীকালের সমাবেশে তৈরি হতে পারে জেলায় নতুন রাজনৈতিক সমীকরণ। তাই আজ, লক্ষ্মণ শেঠকে ঘিরে অনুরাগীদের ভিড়ে রাজনৈতিক মহলেও রয়েছে যথেষ্ট কৌতুহল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

tamluk lakshman seth
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE