Advertisement
E-Paper

প্রধান শিক্ষককে ফেরাতে নারাজ পরিচালন সমিতি

আর্থিক নয়ছয়ের অভিযোগে প্রধান শিক্ষককে সাসপেন্ড করেছিল স্কুল পরিচালন সমিতি। কিন্তু তদন্ত করে পর্ষদ জানিয়ে দেয়, প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ ভিত্তিহীন। তাঁকে পুণর্বহাল করারও নির্দেশ দেয় পর্ষদ। অভিযোগ, ৪ অগস্ট ওই নির্দেশের পর এখনও পর্যন্ত প্রধান শিক্ষককে স্কুলে যোগ দেওয়ার জন্য ডাকা হয়নি! এমনটাই ঘটেছে পশ্চিম মেদিনীপুরের ডেবরার বালিচক ভজহরি ইনস্টিটিউশনে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৯ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০০:৩৪

আর্থিক নয়ছয়ের অভিযোগে প্রধান শিক্ষককে সাসপেন্ড করেছিল স্কুল পরিচালন সমিতি। কিন্তু তদন্ত করে পর্ষদ জানিয়ে দেয়, প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ ভিত্তিহীন। তাঁকে পুণর্বহাল করারও নির্দেশ দেয় পর্ষদ। অভিযোগ, ৪ অগস্ট ওই নির্দেশের পর এখনও পর্যন্ত প্রধান শিক্ষককে স্কুলে যোগ দেওয়ার জন্য ডাকা হয়নি! এমনটাই ঘটেছে পশ্চিম মেদিনীপুরের ডেবরার বালিচক ভজহরি ইনস্টিটিউশনে।

স্কুল পরিচালন সমিতির সম্পাদক রঞ্জিতকুমার পাল বলেন, “প্রধান শিক্ষক স্কুলের ৯ লক্ষ টাকা নয়ছয় করেছেন। পর্ষদ একতরফা তদন্ত করেছে। তাই ওই নির্দেশের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।” সাসপেন্ড হওয়া প্রধান শিক্ষক বাসুদেব বর্মণের অবশ্য দাবি, “আমি কোনও রকম আর্থিক নয়ছয় করিনি। যে বৈঠকে আমাকে সাসপেন্ড করা হয়, সেটিও ছিল অবৈধ। যাবতীয় নথি দেখেই পর্ষদ আমাকে পুণর্বহালের নির্দেশ নিয়েছে।” এ ব্যাপারে জেলা স্কুল পরিদর্শক (মাধ্যমিক) সঙ্ঘমিত্র মাকুড় বলেন, “পর্ষদই এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকারী। কেউ পর্ষদের নির্দেশ অমান্য করলে সেটাও পর্ষদকেই জানাতে হবে।”

২০১১ সালে রাজ্যে পালা বদলের পরে স্কুলে স্কুলে পরিচালন সমিতিরও ব্যাপক পরিবর্তন হতে থাকে। ২০১২ সালের ২০ ডিসেম্বর বালিচক ভজহরি ইন্সটিটিউশনের পরিচালন সমিতিরও দখল নেয় তৃণমূল। স্কুল সূত্রে খবর, তারপরই নানা বিষয়ে প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে স্কুল পরিচালন সমিতির মত বিরোধ দেখা দেয়। পরিচালন সমিতির সম্পাদক প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে ২০১২-১৩ আর্থিক বছরে ৯ লক্ষ টাকার আর্থিক নয়ছয়ের অভিযোগ তোলেন। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে ২০১৩ সালের ১৪ অগস্ট থেকে প্রধান শিক্ষককে সাসপেন্ড করা হয়। পর্ষদ তদন্ত করে প্রধান শিক্ষককে ‘ক্লিনচিট’ দেওয়ার পাশাপাশি তাঁকে পুণর্বহাল নির্দেশ দিলেও তা মানেনি পরিচালন সমিতি। অভিযোগ, উল্টে আরও দুই সহ-শিক্ষককেও সাসপেন্ড করার হুমকি দেয়। ওই দুই শিক্ষক তাপসকুমার পাল ও শক্তিশঙ্কর ভট্টাচার্য পরিচালন সমিতির শিক্ষক প্রতিনিধি ছিলেন।

অভিযোগ, ওই দুই সহ-শিক্ষক প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন, সাসপেন্ড হওয়া প্রধান শিক্ষককে সৎ বলে দাবি করছেন এবং তাঁর স্বপক্ষে নানা যুক্তি দিয়ে স্কুল বিরোধী কথা বলছেন এমনই নানা অভিযোগে তুলে তাঁদেরও কেন সাসপেন্ড করা হবে না এই মর্মে শো-কজ করা হয়। পরে তাঁদের সাসপেন্ড না করা হলেও পরিচালন সমিতি থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। অভিযোগ, এ ভাবেই দলীয় ক্ষমতার বলে সম্পাদক নিজের মতো স্কুল চালাচ্ছেন। যদিও সম্পাদক রঞ্জিতকুমার পালের বক্তব্য, “ওই দুই শিক্ষক সাসপেন্ড হওয়া প্রধান শিক্ষকের সময়ে নানা সুযোগ-সুবিধে পেয়েছেন। এখনও স্কুলের পরিবেশ নষ্ট করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। তাই শো-কজ করা হয়েছিল।” সম্পাদকের দাবি, যে শো-কজের জবাবে যে যে কারণ ওই দুই শিক্ষক দেখিয়েছেন, তাতে তাঁরা সন্তুষ্ট নন। তিনি বলেন, “তবুও তাঁদের সাসপেন্ড করা হয়নি। পরিচালন সমিতি থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।” এ ব্যাপারে সহ শিক্ষক শক্তিশঙ্করবাবুর বক্তব্য, “পরিচালন সমিতির সিদ্ধান্ত মেনে নিয়েছি। ওদের হাতেই তো ক্ষমতা!”

এর জেরে স্কুলে ডামাডোল তৈরি হয়েছে বলে কিছু শিক্ষক- অভিভাবকদের অভিমত। কারণ, দীর্ঘ দিন প্রধান শিক্ষক থেকেও নেই। বাকি কয়েক জন সহ-শিক্ষককেও পরিচালন সমিতি নিজেদের দিকে টানতে নানা ধরনের ‘হুমকি’ দিচ্ছে বলে অভিযোগ। সব মিলিয়ে স্কুলের শিক্ষার পরিবেশ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।

যদিও তা মানতে রাজি নন স্কুল পরিচালন সমিতির সম্পাদক। তাঁর দাবি, “আগের থেকে স্কুল অনেক ভাল চলছে। শিক্ষকেরা সময়ে আসছেন। স্কুলের নতুন ভবন তৈরি হয়েছে। সব দিক দিয়েই পরিবেশ উন্নত হয়েছে।”

debra balichak bhajahari institution head master
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy