নতুন বছরের শুরুতেই পুরভোট। তার আগে কর্মী-সমর্থকদের মনোবল ফেরাতে এগরা শহরে জনসভা করলেন অধীর চৌধুরী। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতির ভাষণে এগরা পুর-শহরের স্থানীয় বিষয়ের সঙ্গেই উঠে এল রাজ্য ও জাতীয় রাজনীতির নানা বিষয়।
এগরা শহর কংগ্রেসের উদ্যোগে এগরা হাইস্কুল লাগোয়া মাঠে রবিবার বিকেলে জনসভা করেন তিনি। হাজার পাঁচেক কর্মী-সমর্থকের উপস্থিতিতে এ দিনের সভামঞ্চে তিনি সরাসরি অভিযোগের সুরে বললেন, “এগরা পুরসভায় এখন পয়সা ছাড়া কাজ হয় না। ব্যাপারটা অনেকটা পয়সা ফেক, তামাসা দেখ!” এগরা পুরসভার প্রাক্তন পুরপিতা স্বপন নায়ক-সহ কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে চলে যাওয়া কাউন্সিলরদের ‘বেইমান’ বলেও তোপ দাগেন তিনি।
জনসভার আগে অধীরবাবু পুরসভার কংগ্রেস কর্মীদের নিয়ে কর্মীসভা করেন। সেখানে ‘স্বচ্ছ ভাবমূর্তি সম্পন্ন ব্যক্তিদের’ পুরভোটে কংগ্রেস প্রার্থী করার আর্জি জানান তিনি। সেই সঙ্গে আসন্ন পুরভোটে কোনও দলের সঙ্গেই জোট কিংবা আসন সমঝোতা হবে না, তা-ও ফের স্পষ্ট করে দেন তিনি। দলের অন্দরের খবর, পুরভোটে নিবিড় প্রচারের উপরে জোর দিতে নির্দেশ দেন তিনি।
পুরভোট প্রসঙ্গ-সহ নানা বিষয়ে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের সমালোচনা করেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি। অধীরের কথায়, বাম সরকারের ৩৪ বছরে ৬৫ হাজার কল-কারখানা বন্ধ হয়েছিল। আর তৃণমূলের তিন বছরেই একুশশো কারখানা বন্ধ হয়েছে। অধীরের কথায়, “পশ্চিমবঙ্গে শিল্পের অমাবস্যা চলছে, বিনিয়োগেরও কোনও নকশা নেই।” তৃণমূল দলকে সিঁধেল চোর বলে কটাক্ষ তাঁর।
অধীর চৌধুরীর অভিযোগ প্রসঙ্গে দলত্যাগী স্বপন নায়ক বলেন, “পুরসভা গঠনের পর চার বছর কংগ্রেসে ছিলাম। তখন বেইমান হইনি। উন্নয়নের টাকা আসা বন্ধ হয়েছিল বলেই তৃণমূলে যোগ দিই।” অধীরবাবু মিথ্যে বলছেন বলে তাঁর দাবি। স্বপনবাবুর অভিযোগ উড়িয়ে এগরা পুরসভার দায়িত্বপ্রাপ্ত জেলা কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক মানস কর মহাপাত্র বলেন, “স্বপনবাবু বলেছিলেন, তৃণমূলে না গেলে টাকা পাওয়া যাবে না। এগরার উন্নয়নও হবে না। কিন্তু, পরে চাকরি দেওয়া নিয়ে তিনি নিজেই দুর্নীতিতে জড়ান।”
এগরায় এ দিনের সভায় অধীরবাবু, মানস কর মহাপাত্র ছাড়াও ছিলেন প্রদেশ কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক দীপঙ্কর সাউ, ক্ষিতীন্দ্রমোহন সাউ, পশ্চিম মেদিনীপুরের প্রাক্তন জেলা সভাপতি স্বপন দুবে, পূর্বের জেলা সভাপতি আনোয়ার আলি, প্রাক্তন বিধায়ক শৈলজা দাস-সহ একাধিক কংগ্রেস নেতৃত্ব।
এগরার জনসভায় যাওয়ার আগে অধীর চৌধুরীকে কাঁথি মহকুমা কংগ্রেস ও কাঁথি ১ ব্লক কংগ্রেসের তরফে বাইপাস মোড় ও কুলবেড়িয়ায় সংবর্ধনা দেওয়া হয়। সেখানে কর্মী-সমর্থকদের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো। নেতৃত্বের মধ্যে ছিলেন ব্লক কংগ্রেস সভাপতি এরশাদ আলি, বিশ্বজিৎ মাইতি, রীনা মাইতি ও কাঁথি শহর কংগ্রেস সভাপতি বিশ্বনাথ তেওয়ারি, পঞ্চায়েত সদস্যা রীতা মাইতি প্রমুখ।