Advertisement
০৩ মে ২০২৪

বিজেপি কর্মীকে মার, অভিযুক্ত তৃণমূল

লোকসভা নির্বাচনে পোলিং এজেন্টের দায়িত্বে থাকা এক বিজেপি কর্মীকে মারধরের অভিযোগ উঠল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। রবিবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে বেলদা গ্রামীণ থানার কানতাবণী গ্রামে। কার্তিক রক্ষিত নামে ওই বিজেপি কর্মী প্রহৃত হওয়ার পরে এলাকায় বিজেপি-তৃণমূল সংঘর্ষ বাধে। জখম হন দু’পক্ষের আরও দু’জন।

নিজস্ব সংবাদদাতা
খড়্গপুর শেষ আপডেট: ১০ জুন ২০১৪ ০১:১০
Share: Save:

লোকসভা নির্বাচনে পোলিং এজেন্টের দায়িত্বে থাকা এক বিজেপি কর্মীকে মারধরের অভিযোগ উঠল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। রবিবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে বেলদা গ্রামীণ থানার কানতাবণী গ্রামে। কার্তিক রক্ষিত নামে ওই বিজেপি কর্মী প্রহৃত হওয়ার পরে এলাকায় বিজেপি-তৃণমূল সংঘর্ষ বাধে। জখম হন দু’পক্ষের আরও দু’জন। দু’পক্ষই থানায় অভিযোগ দায়ের করেছে। তবে কেউ গ্রেফতার হয়নি। এসডিপিও (খড়্গপুর) অজিত সিংহ যাদব বলেন, “একটা সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছিল। ভাঙচুরও হয়েছে। দু’পক্ষের অভিযোগই খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”

বেলদা এলাকাটি পড়ে মেদিনীপুর লোকসভা কেন্দ্রের মধ্যে। সদ্যসমাপ্ত নির্বাচনে মেদিনীপুর কেন্দ্রে ভাল ভোট বেড়েছে বিজেপির। প্রায় ১৪ শতাংশ ভোট পেয়েছে তারা। বেলদার কানতাবণী গ্রামের যে বুথে কার্তিকবাবু বিজেপির এজেন্ট ছিলেন, সেই পাতলিতে আবার এগিয়ে ছিলেন বিজেপি প্রার্থী প্রভাকর তিওয়ারি। সেই আক্রোশেই রবিবার রাতে স্থানীয় তৃণমূল কর্মী-সমর্থকরা কার্তিককে তৃণমূল কার্যালয়ে নিয়ে গিয়ে মারধর করে বলে অভিযোগ। দিন পনেরো আগে কার্তিকের দোকানও ভাঙচুর করা হয়েছিল। সেই ঘটনায় তৃণমূলের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগও দায়ের করেন ওই বিজেপি কর্মী। স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, রবিবার রাতে কার্তিককে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে যান স্থানীয় তৃণমূল কর্মী গৌরীশঙ্কর ভুঁইয়া, গোবর্ধন দে-রা। তারপর তাঁকে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। রাতেই কার্তিককে বেলদা গ্রামীণ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সোমবার দুপুরে হাসপাতাল থেকে ফিরে কার্তিক বলেন, “আগে তৃণমূলের গোবর্ধন দে, গৌরীশঙ্কর ভুঁইয়ারা আমার দোকান ভেঙেছিল। রবিবার রাতে তো তৃণমূলের পার্টি অফিসে তুলে নিয়ে গিয়ে লোহার রড, লাঠি দিয়ে বেধড়ক মারল।”

তৃণমূলের পাল্টা অভিযোগ, কার্তিক নিজেই তৃণমূলের কার্যালয়ের সামনে গিয়ে দলনেত্রীর নামে কটূক্তি করছিলেন। তা নিয়েই অশান্তি হয়। পরে দু’পক্ষের সংঘর্ষে জখম হন বিজেপি কর্মী শেখ তাজু রহমান ও তৃণমূল কর্মী জাগু সিংহ। ভাঙচুর হয় বিজেপি সমর্থক গৌরাঙ্গ দাসের গোয়ালঘর। তৃণমূল কার্যালয়েও ভাঙচুর চলে। বিজেপির পক্ষ থেকে দলীয় কর্মী শশাঙ্ক নন্দী তৃণমূলের দিলীপ দে, গোবর্ধন দে, রবীন প্রামাণিক-সহ ১২ জনের নামে অভিযোগ দায়ের করেছেন। বিজেপির ব্লক সভাপতি কেষ্টপদ রায় বলেন, “কার্তিকের দোকান ভেঙেও শান্তি হয়নি। তৃণমূল কর্মীরা এ বার কার্তিককে মারধর করল। খবর পেয়ে গিয়ে আক্রান্ত হল আমাদের অন্য কর্মী-সমর্থকরাও।” দলীয় কার্যালয়টিতে তৃণমূলের লোকজন নিজেরাই ভাঙচুর চালিয়েছে বলেও অভিযোগ তাঁর।

ঘটনার পরে তৃণমূল কর্মী জাগু সিংহ আবার বিজেপির শশাঙ্ক নন্দী, কার্তিক রক্ষিত, গৌরাঙ্গ দাস-সহ ১৩ জনের নামে পাল্টা অভিযোগ করেছেন। নারায়ণগড় ব্লক তৃণমূল সভাপতি মিহির চন্দ বলেন, “বিজেপির এক কর্মী আমাদের পার্টি অফিসের সামনে এসে নেত্রীকে গালমন্দ করছিল। তা সহ্য করতে না পেরে আমাদের কর্মীরা হয়তো বাধা দিতে গিয়েছিল। সেই সময় বিজেপির সমর্থকেরা এসে আমাদের কর্মীদের উপর হামলা চালিয়ে পার্টি অফিস ভাঙচুর করে।” অভিযোগ উড়িয়ে বিজেপির জেলা সভাপতি তুষার মুখোপাধ্যায়ের বক্তব্য, “গোটা রাজ্যের সঙ্গে এই জেলাতেও তৃণমূলের বিকল্প হিসেবে মানুষ বিজেপিকে সমর্থন করছে। পায়ের তলার মাটি সরে যাওয়ায় তৃণমূল আমাদের ওপর বারবার হামলা করছে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

tmc-bjp clash kharagpur bjp party worker beaten
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE