খাবার দোকানের কর্মী বিমল মাহাতোকে খুনের ঘটনার অন্যতম মূল অভিযুক্তকে গ্রেফতার করল পুলিশ। ধৃত বছর তেইশের সুদীপ প্রতিহার ওরফে রাজার বাড়ি ঝাড়গ্রাম শহরের কদমকানন এলাকায়। মঙ্গলবার রাতে অরণ্যশহর থেকে সুদীপকে ধরা হয়। তিনি ঝাড়গ্রামের সেবায়তন এলাকার পলিটেকনিকের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র। বুধবার সুদীপকে ঝাড়গ্রাম প্রথম এসিজেএম আদালতে তোলা হলে বিচারক ধৃতকে পাঁচদিন পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেন।
এ দিন অভিযুক্তের আইনজীবী তপন সিংহ বলেন, ‘‘মামলার এফআইআর-এ সুদীপের নাম নেই। ঘটনার পরে বিমলবাবুর ভাইপো ঝাড়গ্রাম থানায় যে এফআইআর দায়ের করেন, তাতে দশজন অভিযুক্তের নাম রয়েছে। কিন্তু ওই দশজনের মধ্যে সুদীপের নাম নেই। বরং পুলিশ মামলা রুজু করার সময় যথাযথ গুরুত্ব না দেওয়ায় এফআইআর-এ নাম থাকা দশ অভিযুক্তের মধ্যে ৯ জনই ইতিপূর্বে জামিন পেয়ে গিয়েছে। মারধরের মামলায় পরে খুনের ধারা যুক্ত হয়েছে। পুলিশ এখন নিজেদের গাফিলতি আড়াল করার জন্য নিদোর্ষকে অভিযুক্ত করছে।” আদালতে পুলিশের তরফে পাল্টা দাবি করা হয়, এফআইআর-এ দশ অভিযুক্তের নাম থাকলেও পরে তদন্ত করে সুদীপ-সহ আরও কয়েকজনের নাম পাওয়া গিয়েছে। তারাই কুকর্মের মূল পাণ্ডা। সরকারি কৌঁসুলি কণিষ্ক বসু আদালতে বলেন, “ঘটনায় জড়িত অন্য অভিযুক্তদের ধরার জন্য তদন্তের স্বার্থে ধৃতকে পুলিশ হেফাজতে নিয়ে জেরা করা প্রয়োজন।” উভয় পক্ষের বক্তব্য শোনার পরে বিচারক পুলিশের আবেদন মঞ্জুর করে ধৃতকে পাঁচদিন পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেন।
গত ২৫ ফেব্রুয়ারি অরণ্যশহরের উপকন্ঠে ঝাড়গ্রাম মিনি চিড়িয়াখানা এলাকায় চাহিদামতো সিগারেট না-পেয়ে দোকানদারকে মারধর করার অভিযোগ উঠেছিল একদল স্কুল-কলেজ পড়ুয়াদের বিরুদ্ধে। খাবার দোকানটির মালিক প্রদীপ মাহাতোকে মার খেতে দেখে বাঁচাতে ছুটে এসেছিলেন তাঁর কাকা বিমল মাহাতো (৩৬)। হামলাকারীদের মারে গুরুতর জখম হন বিমলবাবু। ঘটনার পরেই দশজন অভিযুক্তের বিরুদ্ধে ঝাড়গ্রাম থানায় অভিযোগ দায়ের করেন বিমলবাবুর ভাইপো প্রদীপ মাহাতো। কিন্তু পুলিশ প্রথমে মামলাটি মারধরের জামিনযোগ্য ধারায় রুজু করায় ৯ জন অভিযুক্ত আদালত থেকে জামিন পেয়ে যায়। গত ২৭ ফেব্রুয়ারি এসএসকেএমে মৃত্যু হয় বিমলবাবুর। পরে মামলায় খুনের ধারা যুক্ত করে পুলিশ। জামিনপ্রাপ্তদের জামিন বাতিলের জন্যও পুলিশ আদালতের দ্বারস্থ হয়েছে। আগামী সোমবার জামিনপ্রাপ্তদের উপস্থিতিতে ওই আবেদনের শুনানি করবে আদালত।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy