Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

বৃষ্টিতে ধান রোওয়ার কাজে গতি, স্বস্তিতে চাষিরা

টানা বৃষ্টিতেই স্বস্তির নি:শ্বাস ফেললেন চাষিরা। দেরিতে হলেও পশ্চিম মেদিনীপুরে খারিফ চাষে লক্ষ্যমাত্রা পূরণে দ্রুততা এসেছে। জেলা কৃষি দফতর সূত্রের খবর, এখনও ধান রোওয়ার কাজ চলছে। তবে চলতি সপ্তাহেই ধান রোওয়ার কাজ শেষ হয়ে যাবে। দফতরের সহ- কৃষি অধিকর্তা (তথ্য) দুলালদাস অধিকারী বলেন, “জেলায় এখন পর্যন্ত ৯৮ শতাংশ খারিফ চাষের কাজ হয়েছে। স্বাভাবিক বৃষ্টি হলে ধানের ফলন ভালই হবে। দেরিতে ধান রোওয়ার কাজ হলেও উৎপাদনে তার তেমন প্রভাব পনার কোনও আশঙ্কা নেই।”

ধান রোওয়ার পর চলছে কীটনাশক স্প্রে। —নিজস্ব চিত্র।

ধান রোওয়ার পর চলছে কীটনাশক স্প্রে। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
ঘাটাল শেষ আপডেট: ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০০:১৮
Share: Save:

টানা বৃষ্টিতেই স্বস্তির নি:শ্বাস ফেললেন চাষিরা। দেরিতে হলেও পশ্চিম মেদিনীপুরে খারিফ চাষে লক্ষ্যমাত্রা পূরণে দ্রুততা এসেছে। জেলা কৃষি দফতর সূত্রের খবর, এখনও ধান রোওয়ার কাজ চলছে। তবে চলতি সপ্তাহেই ধান রোওয়ার কাজ শেষ হয়ে যাবে। দফতরের সহ- কৃষি অধিকর্তা (তথ্য) দুলালদাস অধিকারী বলেন, “জেলায় এখন পর্যন্ত ৯৮ শতাংশ খারিফ চাষের কাজ হয়েছে। স্বাভাবিক বৃষ্টি হলে ধানের ফলন ভালই হবে। দেরিতে ধান রোওয়ার কাজ হলেও উৎপাদনে তার তেমন প্রভাব পনার কোনও আশঙ্কা নেই।”

কৃষি দফতর সূত্রে খবর, চলতি বছরে জেলায় ৫ লক্ষ ৪৭ হাজার হেক্টর জমিতে খারিফ (আউস ও আমন ধান) চাষের লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছিল। নিয়মানুযায়ী, ১৫ অগস্টের মধ্যে ধানের চারা রওয়ার কাজ শেষ হয়ে যাওয়ার কথা। তবে এবারে বর্ষার মরসুমে প্রথমদিকে বৃষ্টির পরিমাণ কম থাকায় নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ৪০ শতাংশ জমিতেও ধান রোওয়ার কাজ সম্পূর্ণ হয়নি। ফলে উৎপাদন কেমন হবে, তা নিয়ে সিঁদুরে মেঘ দেখছিলেন চাষিরা। তবে অগস্টের শেষের দিকে বৃষ্টির পরিমাণ বাড়ে। ফলে ধান রোওয়ার কাজেও গতি আসে। বর্তমানে আর তিন শতাংশ জমিতে ধান রোওয়ার কাজ বাকি রয়েছে। দফতরের আধিকারিকদের আশা, চলতি সপ্তাহের মধ্যেই এই কাজ শেষ হয়ে যাবে।

জেলা কৃষি দফতর সূত্রে খবর, এখনও পর্যন্ত জেলার চারটি মহকুমার মধ্যে ঘাটালে একশো শতাংশ, ঝাড়গ্রামে ৯৮ শতাংশ, মেদিনীপুর সদরে ৮৮ শতাংশ ও খড়্গপুর মহকুমায় ৯৬ শতাংশ জমিতে ধান রোওয়ার কাজ হয়েছে। জেলার মোট ৫ লক্ষ ২৬ হাজার হেক্টর জমিতে চাষ হয়েছে। অগস্ট মাসের শেষ পর্যন্ত জেলার বৃষ্টির ঘাটতি ছিল প্রায় ২২ শতাংশ। তবে চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহে জেলার ভাল বৃষ্টি হয়েছে। চলতি মাসে জেলায় ২৪৪ মিলিমিটার বৃষ্টি হবে বলে ধরে নেওয়া হয়েছে। তবে এখনও পর্যন্ত ১০২ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। দফতরের এক কর্তায় কথায়, “চলতি মাসের শেষে আশা করছি, বৃষ্টি ঘাটতির পরিমাণ অনেকটাই কমে যাবে।”

এ বার দেরিতে চাষের কাজ শুরু হওয়ায় কৃষি দফতরের পক্ষ থেকে চাষিদের কয়েকটি পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। সরকারি নির্ধারিত সময়ের পরে বা সদ্য যে সব চাষিরা ধান রোওয়ার কাজ করেছেন, দ্রুত ধানের চারা বৃদ্ধির জন্য তাঁদের জমিতে প্রতি একরে ২৮ কিলোগ্রাম ইউরিয়া দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। মাসে দু’বার করে জমিতে ইউরিয়া দিতে হবে। তবে দ্বিতীয় বারে প্রতি একরে ১৪ কিলোগ্রাম ইউরিয়া দিলেই হবে। ধানের চারার পাতার রং হলুদ হয়ে গেলে অথবা ধানের চারার বৃদ্ধি ঠিকঠাক না হলে স্থানীয় কৃষি দফতরের অফিসে গিয়ে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নেওয়ার জন্য চাষিদের কাছে আর্জি জানানো হয়েছে। দুলাল দাস অধিকারী বলেন, “একটু দেরিতে চাষ হওয়ায় নানা সমস্যা দেখা দিতেই পারে। সেজন্য আমরা প্রস্তুত। কিন্তু চাষিদেরও জমির ঠিকঠাক পরিচর্যা করার পাশাপাশি সঠিক সময়ে জমিতে কীটনাশক ওষুধ স্প্রে করতে হবে।”

কৃষি দফতর সূত্রে খবর, খারিফ চাষ বৃষ্টিনির্ভর। তাই দেরিতে চাষ হলেও মাটিতে সবসময় জলের জোগান থাকা প্রয়োজন। জমিতে জলের পরিমাণ সঠিক থাকলে রোগ-পোকার উপদ্রবও কমবে। আবার চারার বৃদ্ধিও স্বাভাবিক হবে। ফলে উৎপাদনেও কোনও প্রভাব পড়বে না।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

farming rainy season farmers ghatal
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE