পুরনো আক্রোশের জেরে বন্ধুকে কুপিয়ে খুনের চেষ্টা করলেন এক ব্যক্তি। সোমবার সকালে পূর্ব মেদিনীপুরের নন্দকুমার থানার তাড়াগেড়্যা গ্রামে ভীমের মেলা প্রাঙ্গণের ঘটনা। গুরুতর জখম পূর্ণচন্দ্র ভৌমিককে তমলুক জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। অভিযুক্ত অনন্ত ভৌমিক স্থানীয় বাসিন্দাদের মারে আহত হয়ে নন্দকুমার ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তাঁকে পুলিশ আটক করেছে। ঘটনাস্থল থেকে একটি বঁটি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, পূর্ণচন্দ্রকে খুনের চেষ্টার অভিযোগে অনন্তর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বছর পঞ্চাশের পূর্ণচন্দ্র ভৌমিক তমলুক শহরের উত্তরচড়া শঙ্করআড়ার স্টিমারঘাট এলাকার বাসিন্দা। তাঁর বাড়ি থেকে কয়েক মিটার দূরেই ষোলো ফুকার গেট এলাকায় বাড়ি তাঁর বন্ধু বছর চল্লিশের অনন্ত ভৌমিকের। দু’জনেই বিভিন্ন মেলায় গিয়ে আলাদা করে অস্থায়ীভাবে খাবার দোকান চালাতেন। এলাকার এই দুই পরিবারের ভালো সম্পর্ক ছিল। কিন্তু এর পাশাপাশি ক্রমশ অনন্তবাবুর স্ত্রী আশাদেবীর সঙ্গে পূর্ণবাবুর ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে ওঠে। বছর তিনেক আগে স্বামী ও তিন মেয়েকে ছেড়ে পূর্ণচন্দ্রকে বিয়ে করেন আশাদেবী। আর অনন্তবাবুর আক্রোশ গিয়ে পড়ে পূর্ণবাবুর উপর।
সপ্তাহখানেক হল তমলুক শহর থেকে কয়েক কিলোমিটার দূরে নন্দকুমারের তাড়াগেড়্যায় শুরু হয়েছে ভীমমেলা। সেখানেই এ বছর মুখোমুখি চাউমিন ও ভেলপুরির দোকান দিয়েছেন পূর্ণবাবু ও অনন্তবাবু। সোমবার দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে অন্য এক দোকানদারের সঙ্গে কথা বলছিলেন পূণর্বাবু। আচমকা অনন্তবাবু একটি বঁটি নিয়ে পিছন থেকে পূর্ণবাবুর গলায় কোপ মারেন। বাধা দিলে ফের বাঁ হাতে কোপ মারেন অনন্তবাবু। মেলা প্রাঙ্গণের অন্য দোকানদার ও স্থানীয় বাসিন্দারা পূর্ণবাবুকে জখম অবস্থায় উদ্ধার করে তমলুক জেলা হাসপাতালে ভর্তি করে। অনন্তবাবু পালানোর চেষ্টা করলে বাসিন্দারা তাঁকে ধরে ফেলে মারধর করে।
এ দিকে তমলুক জেলা হাসপাতালে বসে আশাদেবী বলেন, “বিয়ের পর থেকেই অনন্ত আমার উপর অত্যাচার চালাত। সেই কারণেই পূর্ণকে ভালবেসে বিয়ে করেছিলাম। সেজন্য পূর্ণচন্দ্রকে মারার চেষ্টা করবে ভাবতে পারনি।” জখম পূর্ণবাবু বলেন, “আশার সঙ্গে আমার বিয়ে হলেও এর আগে অনন্ত আমাকে কখনও কিছু বলেনি। আজ আমি তখন বাধা না দিলে ও আমাকে মেরেই ফেলত।” আক্রমণের কথা স্বীকার করে অনন্ত বলেন, “চার বছর আগে আমার স্ত্রী আশাকে নিয়ে পূর্ণ পালিয়ে গিয়েছিল। সেইসময় থেকেই আমি ঠিক করেছিলাম মেয়েদের বিয়ে দেওয়ার পরেই পূর্ণকে মারব। কিন্তু এবছর নন্দীগ্রামে মেলায় দোকান দেওয়ার সময় থেকেই ওকে মারার পরিকল্পনা করি। আজ সকালে পূর্ণ আমার দোকানের সামনে একজনের সঙ্গে কথা বলার সময় বটি নিয়ে আক্রমণ করেছিলাম।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy