তিন দিন ধরে চলছে প্রযুক্তিবিদ্যার অন্যতম সেরা প্রতিষ্ঠান খড়্গপুর আইআইটি-র ক্যাম্পাসিং। প্রথম দিন, সোমবারই নজরকাড়া বার্ষিক বেতনের ‘প্যাকেজ’ পেয়েছেন প্রতিষ্ঠানেরই কম্পিউটর সায়েন্সের কোমল অগ্রবাল, হৃত্বিক যাদব ও বরুণ কান্তামমেনি। প্রথম দু’জনের বেতনের অঙ্ক প্রায় আড়াই লক্ষ ডলার। ভারতীয় মুদ্রায় যা ১ কোটি ৫৫ লক্ষ টাকা! প্রত্যেকেরই চাকরি হয়েছে একটি জনপ্রিয় সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটের প্রধান কার্যালয় ক্যালিফোর্নিয়ায়।
কোমল ও হৃত্বিকের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। হায়দরাবাদের বরুণ কান্তামমেনি বলছেন, “এতটা ভাল বেতন পাব আশা করিনি। এত দিন নানা কাজে সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইট ব্যবহার করতাম। এ বার সেটি নিজের মতো সাজাবো, এটা দারুণ অনুভূতি।” আইআইটি-র শিক্ষার উপযুক্ত পরিবেশই এটা সম্ভব করেছে, বলছেন বরুণ।
আইআইটি সূত্রে জানা গিয়েছে, বেশ কয়েক বছর ধরেই খড়্গপুরে বহু সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সংস্থা ক্যাম্পাসিংয়ে যোগ দিচ্ছে। ২০১২ সালেও একটি সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইট আইআইটিতে বছরে ৮০ লক্ষ টাকার বেতন দিয়ে নজর কেড়েছিল। চলতি বছরের প্রথম দিনেই ‘প্যাকেজ’ বেশ মোটা অঙ্কের হওয়ায় খুশি পড়ুয়ারা। প্রথম দিনেই ২৭টি সংস্থার বাছাইয়ে ১৬০ জন চাকরির সুযোগ পেয়েছেন। বুধবার অবধি ভারতীয় সংস্থার সর্বাধিক ‘প্যাকেজ’ হয়েছে ৪২ লক্ষ টাকা। প্রায় তিন সপ্তাহ ধরে চলবে ক্যাম্পাসিং।
নিয়ম অনুযায়ী, প্রথম দিনেই প্রথম সারির অধিকাংশ পড়ুয়া ভাল বেতনের চাকরি পেয়ে যান। ক্যাম্পাসিং যত দিন এগোয় কমতে থাকে ‘প্যাকেজ’। ফলে দিন যত গড়াচ্ছে উদ্বেগ বাড়ছে কর্মপ্রার্থী পড়ুয়াদের। বুধবারও প্রতিষ্ঠানের ‘নালন্দা’ ভবনে চলছিল ক্যাম্পাসিং। সেখানেই ইন্ডাস্ট্রিয়াল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ছাত্র দিল্লির অভিষেক শর্মা বললেন, “প্রথম দিনেই তিন জনের বেতন আমাদের আশা বাড়িয়েছে। এ বছর কিছু ‘কোর কোম্পানি’ এসেছে। তারা গড়ে ১৬ লক্ষ টাকা বেতন দিচ্ছে।” নাগপুরের বাসিন্দা ইলেক্টনিক্সের পড়ুয়া অক্ষয় অঞ্চিতের কথায়, “এ বছর চাকরির বাজার ভাল। তবে দিন যত এগোবে, তত কমবে বেতনের অঙ্ক। একটু চিন্তা তো হচ্ছেই।” আইআইটি সূত্রে খবর, এ বার বেতন কাঠামোর বিচারে অন্য বিভাগগুলিকে টেক্কা দিয়েছে কম্পিউটার সায়েন্স। এই বিভাগ থেকেই অধিকাংশ পড়ুয়া লোভনীয় বেতন পেতে চলেছেন। আইআইটির সুডেন্টস অ্যাফেয়ার্সের ডিন নিশিথরঞ্জন মণ্ডল বলেন, “বাইশ-তেইশ বছরের পড়ুয়ারা প্রথম চাকরিতেই এমন বেতন পেলে চাহিদা উত্তরোত্তর বাড়তে থাকে। এ বিষয়ে তাঁদের সতর্ক থাকা উচিত।”
প্রতিষ্ঠানের পড়ুয়াদের বেতন কাঠামোয় খুশি শিক্ষকেরা। তবু, তাঁদেরই কয়েক জনের আশঙ্কা এমন আকাশছোঁয়া বেতন মেধাবী পড়ুয়াদের গবেষণা কিংবা শিক্ষকতা থেকে বিমুখ করবে না তো! মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের গবেষক-ছাত্র অভিমন্যু করের প্রতিক্রিয়া, “গবেষক আর বিটেক পড়ুয়াদের লক্ষ্য আলাদা।” সহমত কম্পিউটার সায়েন্সের গবেষক-ছাত্রী মঞ্জিরা সিংহও। সম্প্রতি ইউজিসি গবেষকদের ভাতা বাড়িয়েছে। সে কথা মনে করিয়ে আইআইটি-র ভারপ্রাপ্ত রেজিষ্ট্রার পল্লব বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “খুব শীঘ্র আমরা বর্ধিত ফেলোশিপ চালু করে দেব।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy