Advertisement
১৯ মে ২০২৪

স্ত্রীকে খুনের চেষ্টা, দু’টি ঘটনায় পলাতক স্বামীরা

দু’টি পৃথক ঘটনায় স্ত্রীকে খুনের চেষ্টার অভিযোগ উঠল স্বামীর বিরুদ্ধে। বৃহস্পতিবার রাতে একটি ঘটনা ঘটে নন্দীগ্রামের খোদামবাড়ি গ্রামে, অন্য ঘটনাটি ঘটে তমলুক থানার শিমুলিয়ায়। খোদামবাড়িতে পারিবারিক অশান্তির জেরে স্ত্রীকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে খুনের চেষ্টা করা হয় বলে অভিযোগ। অভিযুক্ত স্বামী পলাতক। আর শিমুলিয়ায় স্ত্রী ও শিশুকন্যাকে পুড়িয়ে মারার অভিযোগ উঠেছে স্বামীর বিরুদ্ধে। এ ক্ষেত্রেও অভিযুক্তের হদিস মেলেনি।

তমলুক জেলা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন খুকুরানি দাস। নিজস্ব চিত্র।

তমলুক জেলা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন খুকুরানি দাস। নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
তমলুক শেষ আপডেট: ০৮ নভেম্বর ২০১৪ ০১:৫৪
Share: Save:

দু’টি পৃথক ঘটনায় স্ত্রীকে খুনের চেষ্টার অভিযোগ উঠল স্বামীর বিরুদ্ধে। বৃহস্পতিবার রাতে একটি ঘটনা ঘটে নন্দীগ্রামের খোদামবাড়ি গ্রামে, অন্য ঘটনাটি ঘটে তমলুক থানার শিমুলিয়ায়। খোদামবাড়িতে পারিবারিক অশান্তির জেরে স্ত্রীকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে খুনের চেষ্টা করা হয় বলে অভিযোগ। অভিযুক্ত স্বামী পলাতক। আর শিমুলিয়ায় স্ত্রী ও শিশুকন্যাকে পুড়িয়ে মারার অভিযোগ উঠেছে স্বামীর বিরুদ্ধে। এ ক্ষেত্রেও অভিযুক্তের হদিস মেলেনি।

পুলিশ ও তমলুক জেলা হাসপাতাল সূত্রে খবর, নন্দীগ্রাম-২ ব্লকের পশ্চিম খোদামবাড়ি গ্রামের বাসিন্দা গণেশ দাস ও তাঁর স্ত্রী খুকুরানি কর্মসূত্রে বাইরে থাকেন। গণেশ কলকাতায় রিকশা চালান। আর খুকুরানি গত সাত বছর ধরে মুম্বইয়ের কোলাবায় পরিচারিকার কাজ করেন। ওই দম্পতির তিন মেয়ে ও এক ছেলে। বড় মেয়ে বিবাহিত। বাকি তিন ছেলে-মেয়ে খোদামবাড়িতে দিদিমার কাছে থাকে। বাড়িতে কালীপুজো করার জন্য পনেরো দিনের ছুটি নিয়ে খুকুরানি গত শনিবার নন্দীগ্রামের বাড়িতে এসেছিলেন। ওই দিনই বাড়ি আসেন গণেশ। নিজের আয়ের টাকায় (মাসে বেতন ১০ হাজার টাকা) খুকুরানি বাড়ির সামনে মণ্ডপ বেঁধে কালীপুজোর আয়োজন করেছিলেন। শুক্রবার রাতে প্রায় আড়াইশো জন গ্রামবাসীকে খাওয়ানোও হয়। রাত তিনটে নাগাদ অনুষ্ঠান শেষের পরেই ঘটনাটি ঘটে।

খুকুরানি জানান, বৃহস্পতিবার রাত তিনটে নাগাদ অনুষ্ঠান শেষের পরে সামনে মন্দিরে তিনি শুয়েছিলেন। ভোর চারটে নাগাদ আচমকা গণেশ তাঁকে ডেকে বাড়ির ভিতরে যেতে বলেন। তিনি রাজি না হওয়ায় গলা টিপে খুনের চেষ্টা করে বলে অভিযোগ। তারপর স্ত্রীকে রাস্তায় ফেলে দিয়ে মাথায়, কাঁধে, মুখের ডান দিকে ধারালো কিছু দিয়ে গণেশ আঘাত করে বলে অভিযোগ। খুকুরানি বাধা দিতে গেলে তাঁর হাতেও কোপ মারে। তমলুক জেলা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন খুকুরানি জানান, “অন্য পুরুষের সঙ্গে আমার সম্পর্ক আছে বলে স্বামী সন্দেহ করত। বাড়ির পুজোয় অনেক টাকা খরচে আপত্তিও করেছিল। এ সবের জেরেই আমার উপর হামলা করেছে।”

খুকুরানির চিৎকারে বাড়ির ভিতর থেকে তাঁর বৌদি কাঞ্চন জানা-সহ প্রতিবেশীরা ছুটে এলে গণেশ পালিয়ে যায়। রক্তাক্ত অবস্থায় খুকুরানিকে উদ্ধার করে অ্যাম্বুল্যান্সে তমলুক হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, স্ত্রীর প্রতি আক্রোশেই গণেশ এই কাণ্ড ঘটিয়েছে।

বৃহস্পতিবার রাতেই তমলুক থানার শিমুলিয়া গ্রামে স্ত্রী ও তাঁর শিশুকন্যাকে পুড়িয়ে খুনের চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। গুরুতর জখম বছর তেইশের ওই বধূ কোহিনূর বিবি ও দু’বছরের ইশিকা পারভিনকে তমলুক জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। কোহিনূর বিবির অভিযোগের ভিত্তিতে তাঁর স্বামী ইমানুল হকের বিরুদ্ধে পুলিশ বধূ হত্যার চেষ্টার মামলা দায়ের করেছে। তবে অভিযুক্ত পলাতক। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, শিমুলিয়ার যুবক পেশায় রাজমিস্ত্রি ইমানুলের সঙ্গে কোহিনূরের বছর তিনেক আগে বিয়ে হয়। ইমানুল মদ্যপ অবস্থায় স্ত্রীর উপর অত্যাচার চালাত। বৃহস্পতিবার রাত ৮টা নাগাদ ইমানুল মদ্যপ অবস্থায় বাড়ি ফিরে স্ত্রীকে খাবার দিতে বলে। কোহিনূর মদ্যপান নিয়ে আপত্তির কথা জানালে দু’জনের বচসা বাধে। অভিযোগ, এরপরই ইমানুল মেয়ে ও স্ত্রীর গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। তারপর বাইরে থেকে দরজা করে পালিয়ে যায়। প্রতিবেশীরা চিৎকার শুনে এসে মা ও মেয়েকে অগ্নিদ্বগ্ধ অবস্থায় উদ্ধার করে তমলুক জেলা হাসপাতালে ভর্তি করান। কোহিনূরের অবস্থা আশঙ্কাজনক। আর ইশিকার চোখ ও পা পুড়ে গিয়েছে।

জেলার পুলিশ সুপার সুকেশকুমার জৈন বলেন, “প্রতিটি ঘটনাই গার্হস্থ্য হিংসার। অভিযুক্তদের খোঁজে তল্লাশি শুরু হয়েছে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

attempt to murder tamluk
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE