তৃণমূল পরিচালিত গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান পদত্যাগ করেছেন। এ বার কে প্রধান হবেন, এ নিয়ে তৃণমূলের মধ্যেই কোন্দল শুরু হয়েছিল। শেষমেষ সিপিএমের সদস্যদের ভোট তৃণমূলের একটি গোষ্ঠী পেয়ে অন্য গোষ্ঠীকে হারায়।
তমলুক ব্লকের শ্রীরামপুর ১ গ্রাম পঞ্চায়েতে বৃহস্পতিবার দু’জন প্রধান পদের জন্য লড়াই করেন। ১৪ সদস্য বিশিষ্ট ওই পঞ্চায়েতের প্রধান পদে তপন সাহুকে সমর্থন করেন ৬ সদস্য, আর বাকি আট জন দলেরই আরেক গোষ্ঠী স্বপন হাইতকে সমর্থন করেন। ফলে ভোটাভুটিতে জয়ী হন স্বপনবাবু। তপনবাবুর দাবি, দলের একাংশ সিপিএমের চার পঞ্চায়েত সদস্যদের সঙ্গে আঁতাত করেছিল। এর ফলেই ভোটাভুটিতে তাঁরা হেরে গিয়েছেন।
এ দিন ওই পঞ্চায়েতের প্রধান নির্বাচনকে ঘিরে তৃণমূলের দু’গোষ্ঠীর মধ্যে গণ্ডগোলের আশঙ্কায় পঞ্চায়েত অফিসে সভা শুরুর অনেক আগেই এলাকায় পুলিশ মোতায়েন ছিল। দুপুর একটা নাগাদ তমলুকের বিডিও-র প্রতিনিধির উপস্থিতিতে সভা শুরু হয়। সভায় ১৪ জন সদস্যের প্রত্যেকেই উপস্থিত ছিলেন। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, তমলুক ব্লকে তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে একটি গোষ্ঠীর নেতা জেলা পরিষদের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ সোমনাথ বেরা। অপর গোষ্ঠীর নেতা শেখ জালালুদ্দিন। জালালুদ্দিন আবার তমলুক পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি। তৃণমূলের একটি সূত্রে খবর, দুই নেতার বিরোধে সম্প্রতি (১০ নভেম্বর) জালালুদ্দিনের ঘনিষ্ঠ শ্রীরামপুর ১ গ্রাম পঞ্চায়েতের ক্ষমতায় থাকা তৃণমূলের প্রধান রবীন্দ্রনাথ রাউল ইস্তফা দেন। এর ফলে ওই গ্রাম পঞ্চায়েতে নতুন প্রধান নির্বাচনের জন্য প্রশাসনিক ভাবে সভা ডাকা হয়।
আর এই প্রধান নির্বাচন ঘিরেই ফের তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর বিবাদ প্রকাশ্যে এসেছে। দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রধান নির্বাচনে দলের প্রধান পদের প্রার্থী হিসেবে তপন সাহুর নাম প্রস্তাব করে তাঁকে সমর্থনের জন্য তৃণমূলের ব্লক সভাপতি বৃহস্পতিবার সকালে দলের পঞ্চায়েত সদস্যদের কাছে লিখিত চিঠি দেন। কিন্তু এ দিন দলের ‘অফিসিয়াল প্রার্থী’ তপন সাহু ছাড়াও দলেরই আরেক পঞ্চায়েত সদস্য স্বপন হাইতের নাম প্রস্তাব করেন দলেরই সদস্য সফিউল মল্লিক। এর ফলে প্রধান নির্বাচনের জন্য ভোটাভুটি হয়। শেষমেষ দেখা যায়, স্বপন হাইত পেয়েছেন ৮ টি ভোট আর তৃণমূলের ‘অফিসিয়াল প্রার্থী’ তপন সাহু পেয়েছেন মাত্র ৬টি। প্রধান নির্বাচিত হন স্বপন হাইত।
তপন সাহু বলেন, “দলের একাংশ পঞ্চায়েত সদস্য বামফ্রন্টের সদস্যদের সঙ্গে হাত মিলিয়েছেন। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি।” জয়ী স্বপন হাইত অবশ্য বলেন, “তৃণমূলের প্রার্থী হিসেবে প্রধান পদের জন্য লড়েছিলাম। পঞ্চায়েতের অধিকাংশ সদস্যই সমর্থন করে আমাকে জিতিয়েছেন।” তৃণমূলের একটি গোষ্ঠীর প্রধান পদ প্রার্থীকে সমর্থন করার অভিযোগ নিয়ে সিপিএমের শ্রীরামপুর লোকাল কমিটির সম্পাদক বংশী ভৌমিক বলেন, “দলের চার পঞ্চায়েত সদস্যকে এ দিন সভায় উপস্থিত না হতে বলা হয়েছিল। তা সত্বেও কেন ওরা গেলেন তা খোঁজ নিয়ে দেখা হচ্ছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy