Advertisement
১৮ মে ২০২৪
ছুরি কেনেন স্ত্রী, দাবি পুলিশের

স্বামীকে খুনের চেষ্টায় অবশেষে গ্রেফতার স্ত্রী

তৃণমূল নেতা উত্তম দিকপতির গলার নলি কেটে খুনের চেষ্টার অভিযোগে এ বার তাঁরই স্ত্রী তথা সদ্য বহিষ্কৃত তৃণমূলের স্থানীয় নেত্রী কমলা দিকপতিকে গ্রেফতার করল পুলিশ। সোমবার ঘাটাল থানার পুলিশ কমলাদেবীর মোবাইলের ‘টাওয়ার লোকেশন’ দেখে তাঁর বাপের বাড়ি ঘাটাল থানার দীঘা-আনন্দপুর গ্রাম থেকে তাঁকে গ্রেফতার করে। এ দিন পুলিশকে আসতে দেখে তিনি ছুটে পালানোর চেষ্টা করেন। তবে শেষ রক্ষা হয়নি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
ঘাটাল শেষ আপডেট: ১৪ অক্টোবর ২০১৪ ০০:০০
Share: Save:

তৃণমূল নেতা উত্তম দিকপতির গলার নলি কেটে খুনের চেষ্টার অভিযোগে এ বার তাঁরই স্ত্রী তথা সদ্য বহিষ্কৃত তৃণমূলের স্থানীয় নেত্রী কমলা দিকপতিকে গ্রেফতার করল পুলিশ। সোমবার ঘাটাল থানার পুলিশ কমলাদেবীর মোবাইলের ‘টাওয়ার লোকেশন’ দেখে তাঁর বাপের বাড়ি ঘাটাল থানার দীঘা-আনন্দপুর গ্রাম থেকে তাঁকে গ্রেফতার করে। এ দিন পুলিশকে আসতে দেখে তিনি ছুটে পালানোর চেষ্টা করেন। তবে শেষ রক্ষা হয়নি।

পুলিশের দাবি, জেরায় কমলাদেবী স্বীকার করেছেন বিবাহ বহির্ভুত সম্পর্কের জেরেই পরিকল্পনা করে স্বামী উত্তম দিকপতিকে খুনের চেষ্ঠা করেন তিনি। গোটা পরিকল্পনায় তাঁকে সহযোগিতা করেছিল ঘাটালের বালিডাঙার বাসিন্দা প্রেমিক শঙ্কর পাঁজা। পুলিশ জেরায় জেনেছে, ঘটনার রাতে কমলাদেবীও কাছাকাছি ছিলেন। কিন্তু, তা বুঝতে না দিয়ে দলের এবং পাড়ার লোকেদের কাঁদতে কাঁদতে বলেন উত্তমকে পাওয়া যাচ্ছে না!

২৮ সেপ্টেম্বর সকালে এনায়েতপুরের বাড়ি সংলগ্ন একটি পাম্প ঘর থেকে অচৈতন্য ও গলার নলি কাটা অবস্থায় উত্তম দিকপতিকে উদ্ধার করে পুলিশ। তারপরই তাঁকে ঘাটাল মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। পরে তাঁকে কলকাতার একটি মেডিক্যাল কলেজে স্থানান্তর করা হয়। উত্তমবাবু এখনও চিকিত্‌সাধীন। সে ঘটনার পরই তাঁর স্ত্রী ঘাটাল থানায় স্থানীয় একাধিক বিজেপি ও সিপিএম কর্মীদের নামে অভিযোগ দায়ের করেন।

তদন্তে নেমে পুলিশ ঘটনার দিন দু’য়েক পরে ঘাটাল থানার বালিডাঙার বাসিন্দা শঙ্কর পাঁজাকে গ্রেফতার করে। তাঁকে জেরা করে ওই গ্রামেরই সমীর কুলসী নামে আরও এক যুবককে ধরে পুলিশ। তাঁদের জেরা করেই উত্তমের স্ত্রী তথা তৃণমূলের মহিলা সংগঠনের এনায়েত বুথের সভানেত্রী কমলা দিকপতির নাম উঠে আসে। তারপরেই কমলাদেবীর বিরুদ্ধে খুনের চেষ্টা, প্ররোচনা, ষড়যন্ত্র-সহ একাধিক জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা রুজু করে পুলিশ।

ইতিমধ্যে পুলিশ গত কয়েক দিন ধরেই মূল অভিযুক্তকে ধরতে হন্যে হয়ে খোঁজা শুরু করেছিল। এ দিন মোবাইলের টাওয়ার ধরে অভিযুক্তের বাপের বাড়ি থেকেই তাঁকে পাকড়াও করে। ধৃত কমলাদেবীকে আজ, মঙ্গলবার ঘাটাল আদালতে হাজির করে পুলিশ হেফাজত চাওয়া হবে বলে জানা গিয়েছে। কিন্তু কেন খুন? জেরায় পুলিশ জেনেছে, শঙ্কর পাঁজার সঙ্গে স্ত্রীর বিবাহ-বহির্ভূত সম্পর্কের কথা টের পেয়েছিলেন উত্তমবাবু। তা নিয়ে অশান্তিও ছিল। ওই মহিলা খুনের চেষ্টায় ব্যবহৃত ছুরিটিও নিজের হাতে কেনেন বলে পুলিশ জেনেছে।

এই দুই অভিযুক্তকে পুলিশ হেফাজতে নিয়ে ঘটনার সঙ্গে উত্তম দিকপতির স্ত্রী কমলা দিকপতির প্রত্যক্ষ যোগের প্রমাণ পায়। ততদিনে বেপাত্তা হয়ে হয়ে গিয়েছিলেন কমলাদেবী। ঘাটালের বিধায়ক শঙ্কর দোলই বলেন, “পুলিশ তদন্তে কমলা দিকপতির জড়িত থাকার প্রমাণ পেয়েছে। আমরাও দলীয় ভাবে ব্যবস্থা নেব।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

attempt to murder wife arrested ghatal
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE