Advertisement
E-Paper

সদ্যোজাত বদলের অভিযোগ মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজে

সদ্যোজাত সন্তান বদলে দেওয়ার অভিযোগ উঠল মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে। লিখিতভাবে থানায় ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে এই অভিযোগ দায়ের করেছেন সদ্যোজাতের পিতা বরুণ বাগরা। তাঁর অভিযোগ, “প্রথমে পুত্রসন্তান দেখানো হয়েছিল। পরে তা ফিরিয়ে নিয়ে যান আয়া। পরে কন্যাসন্তান এনে বলেন, ওই শিশুই আমাদের সন্তান।” হাসপাতাল সুপার যুগল কর বলেন, “অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করা হবে।” ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে কোতয়ালি থানার পুলিশও।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৫ এপ্রিল ২০১৪ ০১:৫২
শিশু বদলের অভিযোগ জানাচ্ছেন বাড়ির লোকেরা। ছবি: সৌমেশ্বর মণ্ডল।

শিশু বদলের অভিযোগ জানাচ্ছেন বাড়ির লোকেরা। ছবি: সৌমেশ্বর মণ্ডল।

সদ্যোজাত সন্তান বদলে দেওয়ার অভিযোগ উঠল মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে। লিখিতভাবে থানায় ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে এই অভিযোগ দায়ের করেছেন সদ্যোজাতের পিতা বরুণ বাগরা। তাঁর অভিযোগ, “প্রথমে পুত্রসন্তান দেখানো হয়েছিল। পরে তা ফিরিয়ে নিয়ে যান আয়া। পরে কন্যাসন্তান এনে বলেন, ওই শিশুই আমাদের সন্তান।” হাসপাতাল সুপার যুগল কর বলেন, “অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করা হবে।” ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে কোতয়ালি থানার পুলিশও।

কেশপুর থানা এলাকার কলাগ্রামে বাড়ি বরুণ বাগরার। তাঁর স্ত্রী জলেশ্বরীদেবী বৃহস্পতিবার সন্তানের জন্ম দেন। প্রথমে তাঁকে কেশপুর গ্রামীণ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছিল। সেখান থেকে মেদিনীপুর মেডিক্যালে স্থানান্তরিত করা হয়। বরুণবাবু জানান, রাত সাড়ে দশটা নাগাদ সিজারের জন্য জলেশ্বরীদেবীকে অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে যান নার্সরা। রাত সাড়ে ১২টা নাগাদ বরুণবাবু জানতে পারেন সন্তান প্রসব হয়েছে। কিন্তু ছেলে না মেয়ে, জানতে পারেননি। বরুণবাবুর কথায়, “অপারেশন থিয়েটার থেকে কেউ বেরোলেই জিগ্যেস করছি কী হয়েছে, ছেলে না মেয়ে? কেউ কিছুই বলতে চাননি। মুখ ঝামটা দিয়ে চলে যান।” বরুণবাবুর বৌদি আরতি বাগরা বলেন, “কত আবেদন-নিবেদন করলাম। কেউ কিছুই বললেন না। উল্টে জানালেন, এটা বলার আইন নেই। সন্তান হয়েছে। ভাল আছে।”

রাত সাড়ে ৩টে নাগাদ জলেশ্বরীদেবী ও সন্তানকে ওয়ার্ডে নিয়ে যাওয়ার জন্য অপারেশন থিয়েটার থেকে বের করা হয়। জলেশ্বরীদেবীকে স্ট্রেচারে করে নিয়ে যান আত্মীয়েরাই। তখন মায়ের পাশেই কাপড়ে ঢাকা ছিল সন্তান। তবে ওয়ার্ডের ভেতরে বরুণবাবুকে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। বৌদি আরতিদেবী অবশ্য গিয়েছিলেন। মা ও সদ্যোজাতকে ওয়ার্ডে ঢোকানোর পরেই বরুণবাবুর কাছে টাকা চান আয়ারা। বরুণবাবু বলেন, “কী হয়েছে বলুন তো, ছেলে না মেয়ে, তারপর টাকা দেব।” ভেতরে তখন চিকিৎসক ও নার্সদের কথা হচ্ছে। বরুণবাবু এ দিন বলেন, “তাঁদের কথাবার্তায় বোঝা যাচ্ছে যে পুত্র সন্তান হয়েছে। এরপরই হঠাৎ একজন আয়া বলেন, না তো, এঁর তো মেয়ে হয়েছে। বলেই, আমার স্ত্রীর পাশে থাকা সদ্যোজাতকে নিয়ে ফের অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে চলে যান। কিছুক্ষণ পরে কন্যাসন্তান দিয়ে বলেন, এটাই আমাদের সন্তান।”

গোটা ঘটনায় রোগীর আত্মীয়রা ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। গোয়ালতোড় থেকে আসা দীনেশ সার বলেন, “সকলে চিকিৎসক, নার্সদের কথা শুনে বুঝতে পারছি যে, পুত্রসন্তান হয়েছে। অথচ, নিমেষে তা বদলে গেল?” বরুণবাবু বলেন, “যদি কন্যাসন্তানই হত, তাহলে মা ও ছেলের হাতে যে নম্বর লেখা থাকে তা প্রথমে দেখানো হল না কেন? প্রথমেই যদি দেখিয়ে দিতেন, পুত্রসন্তানের হাতে সাঁটানো নম্বরের সঙ্গে স্ত্রীর নম্বর মিলছে না, তাহলে তো আমাদেরও সন্দেহ হত না।”

জলেশ্বরীদেবী অসুস্থ থাকায় এ বিষয়ে কিছুই বলতে পারছেন না। তাঁর ছেলে না মেয়ে হয়েছে, তা-ও বুঝতে পারেননি। ক্ষিপ্ত আত্মীয়েরা প্রথমে হাসপাতাল সুপারের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন। পরে কোতয়ালি থানাতেও অভিযোগ জানান।

medinipur medical college
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy