Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

হাইটেক প্রচারে বিজেপির শিবির

শুধু পথসভা বা মিছিল নয়, লোকসভা ভোটের আগে হাইটেক প্রচারকে অস্ত্র করেই এগোতে চায় বিজেপি। শুধু লোকসভা ভোট নয়, যে কোনও নির্বাচনেই এখন সব রাজনৈতিক দল বিভিন্ন সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটের মাধ্যমে প্রচারে জোর দেয়। অধিক সংখ্যক ভোটারের কাছে পৌঁছতে তাই তথ্যপ্রযুক্তি নির্ভর প্রচারকেই হাতিয়ার করতে চায় বিজেপি।

খড়্গপুরে বিজেপির প্রশিক্ষণ শিবির। —নিজস্ব চিত্র।

খড়্গপুরে বিজেপির প্রশিক্ষণ শিবির। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
খড়্গপুর শেষ আপডেট: ১২ মার্চ ২০১৪ ০১:০৪
Share: Save:

শুধু পথসভা বা মিছিল নয়, লোকসভা ভোটের আগে হাইটেক প্রচারকে অস্ত্র করেই এগোতে চায় বিজেপি।

শুধু লোকসভা ভোট নয়, যে কোনও নির্বাচনেই এখন সব রাজনৈতিক দল বিভিন্ন সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটের মাধ্যমে প্রচারে জোর দেয়। অধিক সংখ্যক ভোটারের কাছে পৌঁছতে তাই তথ্যপ্রযুক্তি নির্ভর প্রচারকেই হাতিয়ার করতে চায় বিজেপি। এই হাইটেক প্রচারের খুঁটিনাটি সম্পর্কে দলীয় কর্মীদের সচেতন করতে দলের তথ্যপ্রযুক্তি সেলের আহ্বায়কদের নিয়ে মঙ্গলবার খড়্গপুর ট্রাফিকের গোলখুলিতে এক শিবিরের আয়োজন করা হয়। শিবিরে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের ছ’টি লোকসভা কেন্দ্রের দলীয় নেতা-কর্মীরা।

ভোটের আগে প্রায় সব দলের প্রার্থীরাই ফেসবুক বা টুইটারে নিজস্ব পেজ বানিয়ে প্রচারে নামেন। তবে শুধু ব্যাক্তিগতভাবে নয়, বিজেপির রাজ্য নেতৃত্ব এবার প্রতিটি লোকসভা কেন্দ্রের বুথস্তরে দলীয় নেতা-কর্মীদের মাধ্যমে সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচারের উপর জোর বাড়াতে চায়। বিজেপি সূত্রে খবর, প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দলের কর্মীদের মধ্যে হাইটেক প্রচার নিয়ে আগ্রহ বাড়াতে পারলে দলেরই লাভ হবে। প্রতিটি বুথস্তরে বিজেপি কর্মীরা ফেসবুক বা টুইটারে অ্যাকাউন্ট খুললে প্রচারের পরিধি বাড়বে। এর ফলে কর্মীরা রাজ্য বিজেপির নিজস্ব পেজ (বিজেপি বেঙ্গল ডট অফিসিয়াল)-এ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে তাঁদের মতামত জানাতে পারবেন। পাশাপাশি দলীয় কর্মীদের মাধ্যমে তাঁদের বন্ধুদের মধ্যেও ওই পেজ সম্পর্কে ঝোঁক বাড়বে।

দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, দলীয় কর্মীদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার জন্য রাজ্যের ৪২টি লোকসভা কেন্দ্রের মধ্যে ছ’টি শহরকে বেছে নেওয়া হয়েছিল। গত ২ মার্চ কলকাতায় এই প্রশিক্ষণ শিবিরের সূচনা হয়। এ দিন বিষ্ণুপুর, মেদিনীপুর, ঘাটাল, ঝাড়গ্রাম, তমলুক ও কাঁথি লোকসভা কেন্দ্রের ১০ জন করে প্রতিনিধি নিয়ে শিবিরের আয়োজন করা হয়। শুধু কম্পিউটার বা সোশ্যাল সাইট ব্যবহারকারী নয়, কম্পিউটার চালাতেই জানেন না এমন দলীয় কর্মীদেরও এ দিন প্রশিক্ষণে ডাকা হয়। শিবিরে সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটে অ্যাকাউন্ট খোলার পদ্ধতি, রাজ্য বিজেপির নিজস্ব পেজ (বিজেপি বেঙ্গল ডট অফিসিয়াল)-এর সদস্য হওয়া, কোনও বিষয়ে মন্তব্য বা পাল্টা মন্তব্য করা-দলীয় কর্মীদের সবকিছুই প্রজেক্টরের মাধ্যমে দেখানো হয়। মহিষাদল থেকে এ দিন শিবিরে যোগ দিতে আসেন প্রবীণ বিজেপি নেতা প্রসেনজিৎ সামন্ত। প্রশিক্ষণ শেষে প্রসেনজিৎবাবু বলেন, “আধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে প্রচারের খুঁটিনাটি হাতেকলমে শিখলাম। এখন থেকে নিজে সব না পারলেও অন্যকে এবিষয়ে সাহায্যও করতে পারব।”

মেদিনীপুরের আইনজীবী সৌরভ মিত্র ট্যাবে ফেসবুক ঘাঁটতে-ঘাঁটতেই বললেন, “ফেসবুকে আমার অ্যাকাউন্ট রয়েছে। তবে দলের পেজে কোনও বিষয় নিয়ে মন্তব্য করব বা কারও মন্তব্যের প্রত্যুত্তর দেব, এই বিষয়টি বেশ ভাল। তাছাড়া কেউ আইন বিরোধী কোনও মন্তব্য করলে তাঁকেও সতর্ক করা যাবে।” বিষ্ণুপুর লোকসভা কেন্দ্রের ইন্দাসের কলেজ ছাত্রী শাশ্বতী ভট্টাচার্যের কথায়, “আমাদের গ্রামে অনেকেরই ফেসবুক, টুইটারে অ্যাকাউন্ট রয়েছে। তবে বিজেপির এই পেজে নিজে সদস্য হলে অনেককে পরামর্শ পাঠাতে পারব। বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বন্ধুদেরও তাঁদের মতামত জানাতে বলব। এর ফলে ভোটাররা দলের সব কিছু সহজেই জানতে পারবেন।” বিজেপির দাবি, ইতিমধ্যেই রাজ্য বিজেপির ফেসবুক পেজে ১৩ হাজারের বেশি লোক সদস্য হয়েছেন। অন্য দিকে, টুইটারে দলের পেজের সদস্য সংখ্যাও দশ হাজার ছাড়িয়েছে। রাজ্য বিজেপির তথ্যপ্রযুক্তি সেলের আহ্বায়ক কিশোর কর জানান, বর্তমানে ভোটারদের সঙ্গে যোগাযোগ বাড়ানোর অন্যতম কাযর্করী মাধ্যম হল ইন্টারনেটের মাধ্যমে প্রচার। তাই ফেসবুক, টুইটারে দলের পেজের সদস্য বাড়াতেই এই শিবিরের আয়োজন করা হয়েছে। এর ফলে অনেক বেশি ভোটারের কাছে সহজে পৌঁছনো যাবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

lok sabha election bjp election campaign
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE