Advertisement
০৪ মে ২০২৪

হুঁশ ফেরেনি, বেআইনি গাড়ির দাপট চলছে

অনিয়মটাই যেন এখানে নিয়ম হয়ে গিয়েছে। লাইসেন্সবিহীন অটোর দৌরাত্ম্য, একে অপরের আগে যাওয়ার জন্য ম্যাজিক ভ্যান ও মোটর চালিত ভ্যানের মধ্যে রুদ্ধশ্বাস প্রতিযোগিতা-এসবই চৈতন্যপুর-কুকড়াহাটি রাস্তার পরিচিত দৃশ্য।

চৈতন্যপুর-সুতাহাটা রাস্তায় ম্যাজিক ভ্যানে ঝুঁকির যাত্রা। ছবি: আরিফ ইকবাল খান।

চৈতন্যপুর-সুতাহাটা রাস্তায় ম্যাজিক ভ্যানে ঝুঁকির যাত্রা। ছবি: আরিফ ইকবাল খান।

নিজস্ব সংবাদদাতা
হলদিয়া শেষ আপডেট: ০৪ মার্চ ২০১৪ ০৬:২০
Share: Save:

অনিয়মটাই যেন এখানে নিয়ম হয়ে গিয়েছে। লাইসেন্সবিহীন অটোর দৌরাত্ম্য, একে অপরের আগে যাওয়ার জন্য ম্যাজিক ভ্যান ও মোটর চালিত ভ্যানের মধ্যে রুদ্ধশ্বাস প্রতিযোগিতা-এসবই চৈতন্যপুর-কুকড়াহাটি রাস্তার পরিচিত দৃশ্য। তার সঙ্গে স্থানীয় বিভিন্ন ইটভাটার পিক আপ ভ্যানের লাগামহীন দৌড় তো আছেই। স্থানীয়দের অভিযোগ, হলদিয়ায় চৈতন্যপুরের মতো গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় যান নিয়ন্ত্রণের জন্য প্রশাসনকে একাধিকবার জানানো হলেও কোনও কাজ হয়নি। বেআইনি গাড়ির দাপটে ওই রাস্তায় প্রায়শই দুর্ঘটনা ঘটে। এমনকী গত বৃহস্পতিবার কুকড়াহাটি এলাকার ঢেকুয়া গ্রামের কাছে পথ দুর্ঘটনায় পাঁচজনের প্রাণ গেলেও অবস্থাটা বদলায়নি।

হলদিয়ার চৈতন্যপুরে হলদিয়া-তমলুক জাতীয় সড়ক ও হলদিয়া-মেচেদা জাতীয় সড়কের সংযোগস্থল যান চলাচলের ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এখানকার কুকড়াহাটি লঞ্চ ঘাট থেকে ডায়মন্ডহারবার ও রায়চকেও যাওয়া যায়। এই অঞ্চলের উপর দিয়ে জেলার বিভিন্ন রুটের বাস চলাচল করে। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, নজরদারির অভাবে এলাকায় বেআইনি গাড়ির দাপট ক্রমশ বাড়ছে। অধিকাংশ অটোচালকেরই সেই অর্থে কোনও প্রশিক্ষণ নেই। তাছাড়াও কুকড়াহাটিতে প্রায় ২৫টি ইটভাটা রয়েছে। ওই ইটভাটাগুলির অধিকাংশ গাড়িও লাইসেন্সবিহীন। যদিও কুকড়াহাটির এক ইটভাটা মালিকের অভিযোগ, শুধু আমাদের দোষ দেওয়া হচ্ছে। যান নিয়ন্ত্রণ করতে হলে আগে ম্যাজিক ভ্যানের দাপট বন্ধ করতে প্রশাসন ব্যবস্থা গ্রহণ করুক। তাঁদের সবার লাইসেন্স আছে কিনা তা দেখাও জরুরি। কুকড়াহাটির জেলাপরিষদ সদস্য তথা সিটু নেতা শ্যামল মণ্ডল বলেন, “ইটভাটার গাড়িগুলি কমবয়সী ছেলেরা চালায়। তাছাড়া ইটভাটার মালিকরা অভিজ্ঞ চালকদের পরিবর্তে কম বেতন দিয়ে অনেক সময় হেল্পার দিয়েও গাড়ি চালান। ফলে দুর্ঘটনাও বাড়ছে।”

কুকড়াহাটি পঞ্চায়েত সূত্রে জানা গিয়েছে, চৈতন্যপুর-কুকড়াহাটি রুটে ২৭টি অটো, ১৬টি ম্যাজিক গাড়ি ও ৩০টি ইটভাটার পিক আপ ভ্যান চলে। স্থানীয় বাসিন্দা সেক আক্রম আলি বলেন, “অধিকাংশ অটোই পুরনো। তাছাড়া যাত্রী ধরার জন্য অটো ও ম্যাজিক গাড়ির মধ্যে প্রতিযোগিতায় প্রায়শই দুর্ঘটনা ঘটে। তা সত্বেও প্রশাসন নির্বিকার।” ঢেকুয়া ১ নম্বর অঞ্চলের প্রধান জাহানারা বিবি বলেন, “এলাকার পরিবহণ সমস্যার সমাধান করতে আমি প্রশাসনের দারস্থ হব।” জেলা তৃণমূল ট্রেড ইউনিয়ন নেতা শিবনাথ সরকার বলেন, “কুকড়াহাটির সমস্ত ইটভাটা মালিকদের নিয়ে বৈঠক ডেকেছি। বৈঠকে গোটা বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করা হবে।”

প্রসঙ্গত, গত বৃহস্পতিবার অটোর সঙ্গে পিক আপ ভ্যানের সংঘর্ষে সুতাহাটা থানার কুঁকড়াহাটি এলাকার ঢেকুয়া গ্রামের কাছে পথ দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় তিন মহিলা-সহ পাঁচজনের। ঢেকুয়া অঞ্চল তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক আনিসুল হকের দাবি, “দুর্ঘটনায় মৃতদের পরিবারকে রাজ্য সরকার উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ দিক।” সুতাহাটা থানার অফিসার ইন চার্জ শীর্ষেন্দু দাস জানান, পরিবহণ সমস্যার সমাধানে বেআইনি গাড়ি ও লাইসেন্সবিহীন চালকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

vehicle
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE