Advertisement
০১ মে ২০২৪
Mimi Chakraborty

‘সক্রিয় রাজনীতিতে থাকি বা না থাকি...’! তাঁর সাংসদ খাতের টাকার হিসাব দিয়ে মিমির পোস্ট, কী লিখলেন?

বৃহস্পতিবারই জানিয়েছিলেন, তিনি সাংসদ পদ ছাড়ছেন। তার পর নিজের সাংসদ খাতের টাকা কোথায় কতটা খরচ করেছেন, কী ভাবে কাজ করেছেন, সমাজমাধ্যমে তার খতিয়ান প্রকাশ করলেন মিমি।

যাদবপুরের সাংসদ মিমি চক্রবর্তী।

যাদবপুরের সাংসদ মিমি চক্রবর্তী। —ফাইল চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ১৫:৪৯
Share: Save:

২৪ ঘণ্টাও কাটেনি, তিনি সাংসদ পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন প্রকাশ্যে। বৃহস্পতিবার বিধানসভা থেকে বেরিয়ে যাদবপুরের তৃণমূল সাংসদ মিমি চক্রবর্তী জানান, তিনি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘরে ইস্তফার চিঠি পাঠিয়েছেন। মমতা অনুমতি দিলে সেই চিঠি তিনি সংসদের স্পিকারকেও পাঠাবেন বলে জানান। এর মাঝেই শুক্রবার বিকেলে সমাজমাধ্যমে মিমির পোস্টে কিছুটা ভিন্ন সুর শোনা গেল। তিনি লিখলেন, ‘‘আগামী দিনে আমি সক্রিয় রাজনীতিতে থাকি বা না থাকি, আমার কাজের মাধ্যমে নিশ্চিতরূপে মানুষের হৃদয়ে থেকে যাব।’’

নিজের সাংসদ খাতের টাকা কোথায় কতটা খরচ করেছেন, কী ভাবে কাজ করেছেন— সমাজমাধ্যমে তার খতিয়ান প্রকাশ করেছেন মিমি। দেখিয়েছেন, সাংসদ হিসাবে ২০১৯ সাল থেকে তিনি ১৭ কোটি টাকার বেশি কাজ করেছেন। কোন এলাকায় কত টাকা খরচ হয়েছে, দিয়েছেন তার তালিকা। বৃহস্পতিবার মিমি যখন বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রীর ঘর থেকে বেরিয়ে নিজের ইস্তফার কথা জানান, তখনও তিনি এই খরচের কথা উল্লেখ করেছিলেন। বলেছিলেন, ‘‘সাংসদদের ফান্ড কতটা ব্যবহার করা হয়েছে, তা দিয়ে কতটা কাজ করা হয়েছে, নির্দিষ্ট পোর্টালে গিয়ে সেই তথ্য দেখুন। এক নম্বরে কার নাম রয়েছে, এক বার দেখে নিন। এটা আমার গর্ব।’’ সেই পরিসংখ্যানই এ বার প্রকাশ করেছেন যাদবপুরের সাংসদ।

২০২৪ লোকসভা নির্বাচনের সমস্ত খবর জানতে চোখ রাখুন আমাদের 'দিল্লিবাড়ির লড়াই' -এর পাতায়।

চোখ রাখুন

মিমি পোস্টে লিখেছেন, ‘‘বিগত পাঁচ বছর আমি বিশ্বের বৃহত্তম গণতন্ত্রের সাংসদ হিসাবে সাধারণ মানুষের জন্য কাজ করেছি। মানুষের করের টাকা সঠিক ভাবে ব্যবহার করে উন্নয়নমূলক কাজ করেছি। সৎপথে মাথা উঁচু করে এগিয়েছি। সেই সফরের কথা মনে করে আমার মারাত্মক আত্মতুষ্টি হয়। তাই বিগত পাঁচ বছরের সাংসদ রূপে আমার যাবতীয় কাজের খতিয়ান জনসমক্ষে তুলে ধরলাম।’’ দলনেত্রী মমতাকে কৃতজ্ঞতাও জানিয়েছেন মিমি।

মিমির দেওয়া পরিসংখ্যান অনুযায়ী, পাঁচ বছরে বারুইপুর পশ্চিমে ১,৩৫,১৫,৯৮৯ টাকা, বারুইপুর পূর্বে ২,০২,২০,৫৫৬ টাকা, ভাঙড়ে ২,৯৫,৩১,০৩১ টাকা, যাদবপুরে ১,২৫,০৯,৯১২ টাকা, টালিগঞ্জে ৪২,৫৮,৪৫০ টাকা, উত্তর সোনারপুরে ৩,৯৬,২০,৬৪৬ টাকা এবং দক্ষিণ সোনারপুরে ৫,০৯,৪৬,০৩৭ টাকা বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজে খরচ করা হয়েছে। এই পরিসংখ্যানের সঙ্গেই মিমি উল্লেখ করেছেন, ‘‘কোভিডের কারণে সেই সময়ে টাকা আসা বন্ধ ছিল।’’ বিখ্যাত হিন্দি গানের পংক্তি দিয়ে তাঁর আরও সংযোজন, ‘‘মানুষ অনেক কিছুই বলবে। তাঁদের কাজই বলা।’’

বৃহস্পতিবার মিমি জানিয়েছিলেন, তিনি রাজনীতির সঙ্গে আর যুক্ত থাকতে চান না। কারণ, তিনি রাজনীতি বোঝেন না। রাজনীতি এবং সাংসদ পদ ছাড়ার একাধিক কারণ দেখিয়েছিলেন মিমি। বলেছিলেন, ‘‘আমি বিশ্বাস করি, রাজনীতি আমার জন্য নয়। কারণ, রাজনীতি করলে আমার মতো মানুষকে গালাগালি দেওয়ার লাইসেন্স পেয়ে যায় লোকে। আমি লোকসভায় কত দিন উপস্থিত থেকেছি, কিছু লোকের তাই নিয়ে মাথাব্যথা। যদি এক মাস দিল্লিতে থাকি, লোকে বলবে সাংসদ দিল্লিতে থাকেন, এখানে কাজ করেন না। আবার এখানে থাকলে বলা হবে, সংসদে আমার উপস্থিতি কম। মানুষকে অনেক পরিষেবা দিয়েছি। নিজের কাজের প্রচার করতে পারিনি। আমি প্রচার করতে পারি না। এটাও রাজনীতি ছাড়ার অন্যতম কারণ। যত বার সংসদে গিয়েছি, আমার এলাকার কাজের কথা বলেছি। রাজ্যের কথা ওঁরা শোনেন না। তাই কাজও হয়নি। মানুষ ভেবেছে সাংসদ কাজ করেন না।’’

উল্লেখ্য, সম্প্রতি তৃণমূলের আর এক তারকা সাংসদ দেবও রাজনীতি থেকে সরে যাওয়ার কথা বলেছিলেন। একাধিক প্রশাসনিক পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার পরে তাঁর রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নিয়ে জল্পনা তৈরি হয়েছিল। সংসদের ভিডিয়ো পোস্ট করে দেব সমাজমাধ্যমে লিখেছিলেন, ‘‘সংসদে আমার শেষ দিন। ধন্যবাদ দিদি। ধন্যবাদ ঘাটালবাসীকে।’’ তার আগে দেব সংসদের বক্তৃতায় বলেন, ‘‘আমি থাকি বা না থাকি, ঘাটাল আমার হৃদয়ে থেকে যাবে।’’ জল্পনা বাড়িয়েও দেব অবশ্য রাজনীতি শেষ পর্যন্ত ছাড়েননি। মমতা এবং দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বৈঠকের পর তিনি জানান, ‘‘আমি রাজনীতি ছাড়লেও রাজনীতি আমাকে ছাড়বে না।’’ ঘাটাল থেকেই আবার প্রার্থী হচ্ছেন বলে জানিয়ে দেন দেব। মিমির ক্ষেত্রেও তেমন কোনও ঘটনা দেখা যায় কি না, সে দিকে নজর রয়েছে রাজনৈতিক মহলের। কারণ, মিমি প্রাথমিক ভাবে ইস্তফাপত্র দলনেত্রীর কাছে দিয়েছেন। এখনও সংসদে তাঁর পদত্যাগের চিঠি যায়নি। তৃণমূল তাঁকেও আটকে দেয় কি না, তা অবশ্য ভবিষ্যৎ বলবে।

২০২৪ লোকসভা নির্বাচনের সমস্ত খবর জানতে চোখ রাখুন আমাদের 'দিল্লিবাড়ির লড়াই' -এর পাতায়।

চোখ রাখুন
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE