মন্দির-মসজিদ এবং রাজনীতি। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্তব্য তাঁর দিকেই ফিরিয়ে দিলেন হুমায়ুন কবীর।
হুমায়ুনের নতুন দলের প্রসঙ্গে শনিবার অভিষেক মন্তব্য করেছিলেন, কেউ চাইলে মন্দির-মসজিদ বানাতেই পারেন। তবে রাজনীতিতে থেকে তা করা উচিত নয়। তার জন্য আগে রাজনীতি ছাড়া দরকার। তৃণমূল থেকে সাসপেন্ড হওয়া বিধায়ক হুমায়ুন পাল্টা চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিলেন শাসকদলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদককে। তাঁর দাবি, আগে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে রাজনীতি ছা়ড়তে হবে। তা হলে তিনিও রাজনীতি ছাড়বেন এবং শুধু মসজিদ নিয়েই থাকবেন।
আরও পড়ুন:
রবিবার সকালে একটি ভিডিয়োবার্তা প্রকাশ করেছেন হুমায়ুন। বলেছেন, ‘‘অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় আমার জন্য নিদান দিয়েছেন, মসজিদ করতে গেলে আমি যেন রাজনীতি ছেড়ে দিয়ে করি। আপনার কথা শিরোধার্য করব। আপনি আগে আপনার পিসি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে রাজনীতি ছা়ড়তে বলুন। ২০২৬ সালের নির্বাচনে উনি যেন না-লড়েন।’’ তুলেছেন দিঘার প্রসঙ্গও। বলেন, ‘‘পুরীর জগন্নাথ মন্দিরকে যে ভাবে দিঘাতে নিয়ে এসেছেন, সেখানে গিয়েই ওঁকে ধর্মকর্ম নিয়ে থাকতে বলুন। উনি যদি তা করেন, আমি বাংলার মানুষকে কথা দিচ্ছি, আমিও শুধু বাবরি মসজিদ নিয়ে থাকব। আমার দলের দায়িত্ব অন্য কাউকে দিয়ে দেব।’’
এখানেই শেষ নয়, মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী হিসাবে ভোটে ল়ড়ার জন্যও অভিষেককে চ্যালেঞ্জ করেছেন হুমায়ুন। বলেছেন, ‘‘আপনার সাহস থাকলে, জনসংযোগ থাকলে, আত্মবিশ্বাস থাকলে, ২০২৬-এ মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী হয়ে ভোটে লড়ুন। ভবানীপুরে বা নন্দীগ্রামে। মানুষের কাছে আপনি কত গ্রহণযোগ্য সেটা বোঝা যাবে।’’
হুমায়ুনের অভিযোগ, জনগণের করের টাকায় একের পর এক মন্দির তৈরি করেছেন মমতা। দিঘার জগন্নাথধামও সে ভাবেই তৈরি করা হয়েছে। এ ছাড়া, দুর্গাপুজোর অনুদান, কার্নিভাল, শিলিগুড়িতে মহাকাল মন্দিরের জন্য জমি চিহ্নিত করার প্রসঙ্গ তুলে মমতা ও অভিষেকের বিরুদ্ধে তোপ দেগেছেন হুমায়ুন।
মুর্শিদাবাদে ‘বাবরি মসজিদ’ তৈরি করার কথা ঘোষণা করার পরেই ভরতপুরের বিধায়ক হুমায়ুনকে সাসপেন্ড করে তৃণমূল। তার পর গত ২২ ডিসেম্বর তিনি নতুন দল ‘জনতা উন্নয়ন পার্টি’-র ঘোষণা করেন। ২০২৬ সালে তাঁর দল ১৮২টি আসনে লড়বে, এ-ও ঘোষণা করেছেন তিনি। অভিষেক তাঁকে কটাক্ষ করে শনিবার ২০১৯ সালের প্রসঙ্গ টানেন। বলেন, ‘‘হুমায়ুন কবীর ২০১৯-এ বিজেপির প্রার্থী ছিলেন। বাবরি মসজিদের যে ঘটনা ঘটেছিল, সেটা ১৯৯২ সালে। যে দল বাবরি মসজিদ ভেঙেছিল, সেই দলের প্রার্থী হতে দিল্লি গিয়েছিলেন। তখন আপনার কিছু মনে হল না? এখন বোধোদয় হল? কারও যদি মনে হয় তৃণমূলকে হারাব, তবে নির্বাচনে লড়ুন, হারান তৃণমূলকে, জিতে আসুন।’’