Advertisement
E-Paper

কোন ‘জিজীবিষা’য় এত দূর যাত্রা? রিকশা চালিয়ে বিধানসভায় গেলেন ‘খেটে খাওয়া’ মনোরঞ্জন

মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৯টা নাগাদ বিধায়ক আবাস থেকে রিকশা চালিয়ে বিধানসভার দিকে যাত্রা শুরু করেন মনোরঞ্জন।যদিও বিধানসভা পর্যন্ত গোটা পথ রিকশায় যেতে পারেননি বিধায়ক। ট্র্যাফিক বিধি মেনে মাঝপথেই তাঁর পথ আটকেছে পুলিশ।

রিকশা চালাচ্ছেন মনোরঞ্জন ব্যাপারী।

রিকশা চালাচ্ছেন মনোরঞ্জন ব্যাপারী। — নিজস্ব চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১৫:২০
Share
Save

পরনে নীলচে রঙের হাফ হাতা জামা। গলায় নীল গামছা জড়ানো। ‘মেহনতি’ মানুষের পোশাকেই মঙ্গলবার রিকশা নিয়ে শহরের রাস্তায় বেরোলেন শাসকদলের বিধায়ক! রিকশার যাত্রী আসনে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি। চার পাশে কর্মী সমর্থকদের ভিড়। তার মাঝে ধীরে ধীরে রিকশা নিয়ে এগিয়ে গেলেন বিধানসভার দিকে। তিনি মনোরঞ্জন ব্যাপারী। হুগলির বলাগড়ের তৃণমূল বিধায়ক।

মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৯টা নাগাদ বিধায়ক আবাস থেকে রিকশা চালিয়ে বিধানসভার দিকে যাত্রা শুরু করেন মনোরঞ্জন। তার আগে সমাজমাধ্যমে একটি পোস্টও করেছিলেন বলাগড়ের বিধায়ক। তাতেই নিজের অভিনব এই প্রয়াসের নেপথ্য কারণ ব্যাখ্যা করেছেন মনোরঞ্জন। বলেছেন, ‘‘আমি যখন ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে প্রার্থী হই, গোটা বাংলা জুড়ে শ্রমিক-কৃষক-খেটে খাওয়া মানুষ উদ্বেল হয়ে স্লোগান তুলেছিল, ‘রিকশা যাবে বিধানসভায়।’ তারা সবাই জানত রিকশাচালক মনোরঞ্জন ব্যাপারী খেটে খাওয়া মানুষের প্রতিনিধি।’’ মনোরঞ্জনের কথায়, ‘‘এক রিকশাচালক পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার সম্মাননীয় সদস্য হয়ে বিধানসভায় এলেও রিকশা এখনও সরাসরি বিধানসভায় আসতে পারেনি। কারণ, কলকাতা শহরে প্যাডেল রিকশা চলে না। তাই এ বার বিধানসভা শুরু হবার পরেই উদ্যোগ নিয়েছিলাম, রিকশা চালিয়ে বিধানসভায় যাব। সাধারণ মানুষের সেই ‘রিকশা যাবে বিধানসভায়’ স্লোগানকে সত্যে পরিণত করতে অনেক ছোটাছুটি করে প্রয়োজনীয় সমস্ত বিভাগের অনুমতিও নিয়েছি।’’ যদিও বিধানসভা পর্যন্ত গোটা পথ রিকশায় যেতে পারেননি বিধায়ক। ট্র্যাফিক বিধি মেনে মাঝপথেই তাঁর পথ আটকেছে পুলিশ।

এক দিন যাদবপুরে তাঁর রিকশায় সওয়ার মহাশ্বেতাদেবীকে ‘জিজীবিষা’ শব্দের অর্থ জিজ্ঞেস করে যেন পুনর্জন্ম হয়েছিল মনোরঞ্জনের। সেই থেকে মনোরঞ্জনের ডান হাতের চার আঙুলে ‘জিজীবিষা’ লেখা আংটি। তার আগের মনোরঞ্জন যেন অন্য এক মানুষ। জীবনে গরু-ছাগল চরানো, দোকানে গ্লাস ধোওয়া, ডোম কিংবা সাফাইকর্মীর কাজ, রিকশা চালানো, নকশাল আন্দোলনে জড়িয়ে যাওয়া, হাজতবাস— ৭৫ বছরের জীবনে প্রায় সব ধরনের অভিজ্ঞতাই হয়ে গিয়েছে মনোরঞ্জনের। তাই অতীতেও বার বার নিজেকে খেটে খাওয়া মানুষের এক জন বলে দাবি করেছেন ‘ইতিবৃত্তে চণ্ডাল জীবন’-এর লেখক। বিধায়ক হওয়ার আগেও মনোরঞ্জন বলেছিলেন, “আমি রিকশাওয়ালা। শ্রমিক, কৃষক, মেহনতি মানুষের প্রতিনিধি। তাঁদের মনোবল বাড়াতে চাই। তাঁদের মধ্যে থেকেও কেউ বিধানসভায় যেতে পারে সেটা দেখাতে চাই।”

Manoranjan Byapari Monoranjan Byapari Balagarh MLA Rickshaw

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}