Advertisement
১১ মে ২০২৪
Enforcement Directorate

ED, CBI and Income Tax: অর্পিতার বাড়ি থেকে উদ্ধার হওয়া ২২ কোটি টাকা রয়েছে কোথায়? কী হবে, কারা পাবে এই টাকা

শিক্ষা দুর্নীতি-কাণ্ডে অভিযুক্ত পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ‘ঘনিষ্ঠ’ অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের বাড়ি থেকে উদ্ধার হয়েছে নগদ ২১ কোটি ৯০ লক্ষ টাকা।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি, কলকাতা শেষ আপডেট: ২৬ জুলাই ২০২২ ০৭:০২
Share: Save:

অভিযুক্তদের বাড়ি থেকে উদ্ধার হওয়া নগদ টাকা রাখা ছিল একটি কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার মালখানায়। মালখানা তালা বন্ধ। বাইরে সশস্ত্র পাহারা। তদন্তকারী অফিসাররা নিশ্চিত ছিলেন। কেউ মালখানায় ঢুকে ওই নগদ টাকা চুরি করতে পারবে না।

বেশ কয়েক মাস পরে মালখানার তালা খুলে দেখা গেল, অনেক নোট উধাও। কিছু ছেঁড়াখোঁড়া। তদন্তকারীদের মাথায় হাত। কিছু নোট ইঁদুরে খেয়ে গিয়েছে। বাকি খেয়েছে উইয়ে। এখন আর তাই ও পথে হাঁটেন না সিবিআই, ইডি, আয়কর দফতরের অফিসাররা। বেআইনি আয়ের খোঁজে তল্লাশি চালিয়ে নগদ উদ্ধার হলেই তা রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কে ইডি-র অ্যাকাউন্টে জমা করে দেওয়া হয়। বা ব্যাঙ্কে ইডি-র নিজস্ব ভল্টে রেখে দেওয়া হয়।

শিক্ষা দুর্নীতি-কাণ্ডে অভিযুক্ত প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ‘ঘনিষ্ঠ’ অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের বাড়ি থেকে উদ্ধার হয়েছে নগদ ২১ কোটি ৯০ লক্ষ টাকা। সঙ্গে কয়েক লক্ষ বিদেশি মুদ্রাও উদ্ধার হয়েছে। ট্রাঙ্ক ভর্তি করে তা নিয়ে যাওয়া হয়েছে। কিন্তু কোথায় গেল সেই সব টাকা? কারা পাবে?

ইডি সূত্রের দাবি, উদ্ধার হওয়া নগদ টাকা রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের ভল্টে রাখা হয়েছে। কারণ, কোটি কোটি টাকা নগদ বাজেয়াপ্ত হলে খাতায়-কলমে টাকা, বিদেশি মুদ্রা, গয়নার মালিক এখনও অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ই। ইডি-কে এ বার আদালতে গিয়ে প্রমাণ করতে হবে, অর্পিতা ওই সব বেআইনি পথে আয় করেছেন এবং শিক্ষক নিয়োগের দুর্নীতি থেকেই পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের হাত ঘুরে অর্পিতার কাছে এই অর্থ এসেছে। সে ক্ষেত্রে নগদ টাকা পাকাপাকি বাজেয়াপ্ত করে তা কেন্দ্রীয় সরকারের রাজকোষে জমা হবে।

আর যদি ইডি তা প্রমাণ করতে না পারে? তা হলে সুদ সমেত ওই অর্থ ফেরত দিতে হবে। দু’বছর আগে একটি মামলায় আদালতের নির্দেশে ১৯৯৫ সালে আটক করা নগদ অর্থ ফেরত দিতে হয়েছে তাদের। আটক করা হয়েছিল ৭.৯৫ লক্ষ টাকা। ২৫ বছর পরে সুদ-সহ ২০ লক্ষ টাকা ফেরত দিতে হয়।

অর্পিতার ক্ষেত্রে অবশ্য উল্টো গল্প। কারণ, তিনি ইডি-র অফিসারদের কাছে দাবি করেছেন, ওই বিপুল পরিমাণ নগদ টাকা, বিদেশি মুদ্রা এবং গয়না তাঁর নয়। তাঁর ফ্ল্যাটে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের নিয়মিত যাতায়াত ছিল বলে দাবি করেছেন অর্পিতা। সেই সুবাদেই কৌশলে তাঁর ফ্ল্যাটে পার্থবাবু নগদ টাকা, গয়না রেখেছিলেন বলে অর্পিতার দাবি।

ইডির আইনজীবী অভিজিৎ ভদ্র বলেন, ‘‘অভিযুক্তের হেফাজত থেকে যে সব জিনিস উদ্ধার হয়, আইনত প্রাথমিক ভাবে সেগুলি অভিযুক্তর সম্পত্তি বলেই বিবেচ্য হয়। কিন্তু অভিযুক্ত যদি আদালতে নথি পেশ করে মালিকানা প্রমাণ করতে না পারেন, তা হলে দাবিদারহীন হিসেবে নগদ টাকা ও গয়না প্রাথমিকভাবে বাজেয়াপ্ত করা হবে। পরে মামলার নিষ্পত্তি হলে তা সরকারের সম্পত্তি বলে বিবেচিত হবে।’’

ইডি-র তথ্য অনুযায়ী, গত কয়েক বছরে আর্থিক নয়ছয় প্রতিরোধ আইনে মামলার সংখ্যা বেড়েছে। সেই সঙ্গে আটক হওয়া নগদ, গয়না, সম্পত্তির পরিমাণও বেড়েছে। ২০২২-এর ৩১ মার্চ পর্যন্ত ইডি মোট ১ লক্ষ ৪ হাজার ৭০২ কোটি টাকার নগদ, সম্পত্তি আটক করেছে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত মাত্র ৮৬৯ কোটি টাকার সম্পত্তিই শেষ পর্যন্ত বাজেয়াপ্ত করা গিয়েছে। তা বলে অবশ্য মামলা দায়েরের সংখ্যা কমেনি। ২০১২-১৩ থেকে ২০১৮-১৯ পর্যন্ত আর্থিক নয়ছয় প্রতিরোধ আইনে ইডি বছরে গড়ে ২০০টির মতো মামলা দায়ের করত। ২০১৯-২০-তে ৫৬২টি, ২০২০-২১-এ ৯৮১টি, ২০২১-২২-এ ১,১৮০টি মামলা দায়ের হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Enforcement Directorate income tax CBI
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE