রিমঝিম-ঝমঝম দিনে তার সঙ্গে কিছু ক্ষণ। কয়েক কোর্সে, নানা স্বাদের ছোঁয়ায়। না হলে যে বর্ষাই মাটি। তবে এ আহ্লাদেও টুইস্ট আছে।
কাঁচা লঙ্কার ঝোল আর সরষের ঝালের বাইরেও যে বিশাল দুনিয়া রয়েছে, তা ইতিমধ্যেই চিনে ফেলেছে এ শহর। এখানকার শেফদের হাতে পড়ে তাই বছর বছর বড় হয়ে চলেছে বাঙালির ইলিশ-জগৎ। বর্ষা জমে উঠতেই ইলিশ প্রেমে হাবুডুবুদের জন্য জমেছে রকমারি আয়োজন। কোথাও খাঁটি বাঙালি, তো কোথাও বিলিতি সসের তুকতাক। সময়টাকে বুঝে নিয়ে আনতেই যে হচ্ছে কিছু নাটকীয়তা। এ ভাবেই নতুনত্ব আসছে শহর কলকাতার ইলিশ-সংস্কৃতিতে।
এক চামচ ভাত ছাড়াও দিব্যি ইলিশ-ভোজ জমাচ্ছে স্বাস্থ্য সচেতন হোয়াটস্অ্যাপ প্রজন্ম। কন্টিনেন্টাল ইলিশ যে রীতিমতো জনপ্রিয়। স্মোকড্ ইলিশ, ইলিশের ফিংগার ফ্রাই, চার গ্রিল ইলিশে শুরু করা যায় বর্ষা ভোজ।
তার মন ভোলানো স্বাদ ও ঘ্রাণের মাঝে একমাত্র বাধাটিকেও এখন রান্নার আগেই সরিয়ে ফেলার রেওয়াজ হয়েছে বেশ। রেস্তোরাঁয় বসে বোন-লেস ইলিশেই মজতে পছন্দ করে যে জেন-ওয়াই। তাই তেঁতুল ইলিশ, ইলিশের পাতুরি, ধনেপাতা-রসুন দিয়ে ইলিশের ঝাল, সবই
কাঁটা-হীন প্রস্তুত করছেন ওহ্ ক্যালকাটার শেফ। সেখানে বসেই চেখে দেখা যায় লাউপাতা দিয়ে ইলিশ ভাপে, ইলিশের পোলাও। এ বছরের ইলিশ পার্বণে সেখানকার মেনুতে বিশেষ সংযোজন ফিউশন রান্না রাঁধুনি ইলিশ। রাঁধুনি ফোড়ন ব্যবহারে ইলিশের রোস্ট!
ভেদিক ভিলেজে ইলিশ উৎসবে মাততে চাইলে ভোজ জমানো যায় আনারস আর সরষের ব্যবহারে রাঁধা ইলিশের স্টেক দিয়ে। সঙ্গে একটু গোবিন্দভোগের ভাত। এ ছাড়া রয়েইছে চেনা-অচেনা ভারতীয় স্বাদের ইলিশও। কাশ্মীরি লঙ্কা, গোলমরিচ দিয়ে তৈরি মরিচ ইলিশে থেকে কাকরোল পুর ইলিশ— পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলছে রকমারি। অতি পছন্দের পাতুরি, ইলিশ দিয়ে টক, ইলিশের বিরিয়ানি, সে সব তো থাকছেই। ভারী বর্ষণের দিনে বাঙালি মন সবচেয়ে বেশি যা চায় তার ব্যবস্থাও থাকছে। খিচুড়ি আর ইলিশ মাছ ভাজা, সঙ্গে থাকছে অল্প একটু জলপাইয়ের চাটনি।
মার্কোপোলোর বর্ষা ভোজে আবার থাকছে গ্রিসের স্বাদ। লেমন দিল সস্ দিয়ে রান্না হচ্ছে ইলিশ মাছ। পাশাপাশি মেনু থাকছে খাঁটি বাঙালি মশলায় ইলিশের কোরমাও। ও-পার বাংলা থেকে ইউরোপ— হাজির সব স্বাদের সম্ভার। বৃষ্টি ভেজা দিনে-সন্ধ্যায় শুধু বেরিয়ে পড়লেই হল!