সহকর্মীদের থেকে তোলাবাজির অভিযোগে তাঁকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের পদ থেকে সরিয়ে তদন্ত করছে শিক্ষা দফতর। আর তাতে মুখ খোলার ‘অপরাধে’ শিক্ষক-শিক্ষিকাদের কলেজের স্টাফ রুমে হেনস্থার অভিযোগ উঠল বর্ধমানের রাজ কলেজের শিক্ষক তারকেশ্বর মণ্ডল ও তাঁর অনুগামীদের বিরুদ্ধে।
শুক্রবার দুপুরে তারকেশ্বরবাবুর উপস্থিতিতে আটকে তাঁদের ধাক্কাধাক্কি, গালিগালাজ করা হয় বলে অভিযোগ জনা কুড়ি শিক্ষক-শিক্ষিকার। থানায় অভিযোগ জানিয়ে তাঁরা রাতে দেখা করেন জেলাশাসক সৌমিত্র মোহনের সঙ্গে। ঘটনার পরে বারবার চেষ্টা করেও তারকেশ্বরবাবুর সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। জবাব দেননি এসএমএসের। তবে ‘কলেজে এমন ঘটনা ঘটেনি’ বলে দাবি ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্বে থাকা শিক্ষক বিজয় চন্দর। শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘খোঁজ নিচ্ছি। তবে তদন্ত চলছে। তাতে কোনও ভাবে বাধা দেওয়া যাবে না।’’
এলাকায় তৃণমূলের সক্রিয় কর্মী বলে পরিচিত তারকেশ্বরবাবুর মদতে তোলা আদায় নিয়ে মন্ত্রীর কাছে এই অভিযোগ করেন কলেজের প্রায় ৫০ জন শিক্ষিক-শিক্ষিকা। সেই অভিযোগের তদন্ত শুরু হয়েছে। শিক্ষা দফতর ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের পদ কাউকে না দেওয়া পর্যন্ত পরিচালন সমিতি সেই দায়িত্ব দিয়েছে বিজয়বাবুকে। তিনি আবার তারকেশ্বর-ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত। বুধবার শিক্ষা দফতরের একটি দল কলেজে তদন্তে যায়। অভিযোগকারীরা তাদের কাছে তারকেশ্বরবাবু এখনও কলেজে কর্তৃত্ব কায়েম রাখার চেষ্টা করছেন বলে অভিযোগ করেন।
কলেজ সূত্রের খবর, প্রবীণ শিক্ষিকা মমতা ভট্টাচার্য ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ পদের দৌড়ে রয়েছেন। তবে তিনি স্বেচ্ছায় সরে দাঁড়ালে বিজয়বাবু দীর্ঘ মেয়াদে সেই দায়িত্ব পেতে পারেন। শিক্ষক-শিক্ষিকাদের অভিযোগ, এ দিন সে ব্যাপারে কথা বলতে মমতাদেবীকে নিজের ঘরে ডাকেন বিজয়বাবু। কিন্তু সেখানে তারকেশ্বরবাবুর অনুগামী কিছু ছাত্র ও চুক্তিভিত্তিক কর্মীদের ঢুকতে দেখে শিক্ষক-শিক্ষিকারাও হাজির হন। বচসা বাধলে বিজয়বাবু দু’পক্ষকেই বার করে দেন। অভিযোগ, শিক্ষক-শিক্ষিকারা স্টাফ রুমে ফিরতেই ওই ছাত্র ও কর্মীরা সেখানে চ়ড়াও হয়ে তাঁদের হেনস্থা করা শুরু করে। কেন তদন্ত কমিটির কাছে মুখ খুলেছেন, সেই কৈিফয়ত চেয়ে ধাক্কাধাক্কি, খুনের হুমকি দেওয়া হয়। এক শিক্ষিকা অসুস্থ হয়ে পড়েন। পুরো সময় সেখানেই চেয়ারে বসেছিলেন তারকেশ্বরবাবু।
শিক্ষক-শিক্ষিকাদের অভিযোগ, বেশ কিছুক্ষণ পরে বিজয়বাবু তাঁদের জানান, মমতাদেবী ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব নিতে চান না বলে সম্মতি দিয়েছেন। তার পরে ঝামেলা মেটে। মমতাদেবী অবশ্য পরে বলেন, ‘‘আমাকে জোর করে আটকে রেখে সই করানো হয়েছে।’’ বিজয়বাবুর পাল্টা দাবি, ‘‘কলেজের মধ্যে এমন কোনও ঘটনাই ঘটেনি। সে সুস্থ ভাবেই কলেজ চলছে।’’ যদিও কলেজ পরিচালন সমিতির সভাপতি সুভাষ সোম জানান, পড়াশোনার সুষ্ঠু পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে জেলাশাসকের উপস্থিতিতে বৈঠক করা হবে। জেলাশাসকের আস্বাস, সোমবারই হবে সেই বৈঠক।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy