Advertisement
E-Paper

ছাত্রকে পিটিয়ে মারায় উঠছে আরও কিছু নাম

হরিদেবপুরে আম চুরির অপবাদ দিয়ে কলেজ ছাত্র অনিরুদ্ধ বিশ্বাসকে পিটিয়ে মারার অভিযোগে ইতিমধ্যেই দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তবে, আরও তিন-চার জন এই অসুস্থ ছাত্রটিকে মারধরে যুক্ত বলে অভিযোগ উঠছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১০ জুন ২০১৬ ০৩:৪৬
 অনিরুদ্ধ বিশ্বাস

অনিরুদ্ধ বিশ্বাস

হরিদেবপুরে আম চুরির অপবাদ দিয়ে কলেজ ছাত্র অনিরুদ্ধ বিশ্বাসকে পিটিয়ে মারার অভিযোগে ইতিমধ্যেই দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তবে, আরও তিন-চার জন এই অসুস্থ ছাত্রটিকে মারধরে যুক্ত বলে অভিযোগ উঠছে।

পুলিশের একাংশের দাবি, যে ভাবে অনিরুদ্ধ ও সুপ্রতিমকে মারা হয়েছে, তা মাত্র দু’জনের পক্ষে সম্ভব নয়। আরও কিছু লোকের জড়িত থাকাটাই স্বাভাবিক। এ দিন রাতে মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায় এই

ছাত্রের বাড়ি গেলে স্থানীয় লোকেরা তাঁকেও আরও দু-তিন জনের নাম জানান, যাঁরা মারধরে যুক্ত ছিলেন বলে অভিযোগ।

গত শুক্রবার সন্ধ্যায় ঘটনার খবর পেয়ে সেখানে ছুটে যান অনিরুদ্ধর বাবা বিশ্বজিৎ ও মা ঝর্না বিশ্বাস। অনিরুদ্ধ ও তাঁর বন্ধু সুপ্রতিম বিশ্বাসকে যারা মারধর করেছিল, তাদের কয়েক জন তখনও সেখানে উপস্থিত ছিল বলে অভিযোগ উঠেছে। বৃহস্পতিবার বিশ্বজিৎবাবু বলেন, ‘‘ওদের দেখে আমার স্ত্রী জানতে চান, এ ভাবে কেন আমার ছেলেকে মারলেন? এক জন তার উত্তরে

বলে, বেশ করেছি মেরেছি। যা

পারবি করে নিবি।’’ তিনি জানান,

সেই লোকগুলোকে বুধবার পর্যন্ত চিহ্নিত করতে পারেনি সুপ্রতিম।

কিন্তু, এ দিন তাদের কয়েক জনের নাম জানা গিয়েছে। সেই নামগুলি পুলিশকে জানানো হবে। অভিযুক্ত ওই তিন-চার জন স্থানীয় বাসিন্দার বাড়িতে গিয়ে তাঁদের পাওয়া যায়নি। দেখা গিয়েছে, প্রতিটি বাড়ির গেটেই তালা ঝুলছে।

শনিবার গুরুতর আহত অবস্থায় অনিরুদ্ধকে হাসপাতালে ভর্তি করার পরে রবিবার তাঁকে অন্য একটি নার্সিংহোমে স্থানান্তর করা হয়েছিল। মঙ্গলবার রাতে সেখানেই মারা যান তিনি। বুধবার রাতে তাঁর দেহ সৎকার করা হয়। অনিরুদ্ধর প্রতিবেশীরা জানিয়েছেন, এ নিয়েই বুধবার রাত পর্যন্ত ব্যস্ত ছিলেন বিশ্বজিৎবাবু এবং পাড়ার অন্যরা। সাময়িক মানসিক আঘাত কাটিয়ে উঠতে সময় লাগছে অনিরুদ্ধর অনেক দিনের বন্ধু সুপ্রতিমেরও। যিনি অনিরুদ্ধর সঙ্গেই মার খান। তবে, অনিরুদ্ধ জন্ডিস থেকে সদ্য সেরে ওঠায় অনেক

বেশি দুর্বল ছিলেন এবং আঘাত সহ্য করতে পারেননি।

বিশ্বজিৎবাবু এ দিন জানিয়েছেন, একমাত্র সন্তান অনিরুদ্ধর মৃত্যুর পরে তাঁর মা শোকে পাথর হয়ে গিয়েছেন। এ দিন তাঁর সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করা হয়। ঝর্নাদেবী শুধু বলেন, ‘‘গত সপ্তাহের এই দিনেও সে বেঁচে ছিল। বাড়িতে ছিল। কেন যে শুক্রবার বেরোতে গেল?’’

পুলিশ জানিয়েছে, গত শুক্রবার অনিরুদ্ধ ও সুপ্রতিম সন্ধ্যায় বাড়ির কাছেই এক কুয়োর পাড়ে বসে গল্প করছিলেন। অনেক দিন অসুস্থ অবস্থায় বাড়িতে থাকার পরে সে দিনই প্রথম বাইরে যান অনিরুদ্ধ। সেই সময়ে চিন্ময় সর্দার নামে এক জন আম চুরির অভিযোগে দুই যুবককে তাড়া করে আসে। সেই দুই যুবক পালিয়ে গেলে সে এসে ধরে অনিরুদ্ধ ও সুপ্রতিমকে। সেখানে তখন জড়ো হন স্থানীয় আরও কয়েক জন। যাদের মধ্যে বিনোদ বাল্মিকীও ছিল। পলাতক দুই যুবককে অনিরুদ্ধরা চিনতেন, এই অভিযোগ তুলে তাঁরা সবাই মিলে মারধর করেন অনিরুদ্ধ ও সুপ্রতিমকে। অসুস্থ অনিরুদ্ধকে বাড়িতে পৌঁছে দিয়ে সে দিনই থানায় গিয়ে অভিযোগ জানাতে চান বিশ্বজিৎবাবু। এ দিন তিনি বলেন, ‘‘পুলিশ সে দিন বিষয়টিকে গুরুত্বই দিতে চাননি।’’

কলকাতা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত যু্গ্ম কমিশনার (অপরাধ দমন) বিশাল গর্গ এ দিন বলেন, ‘‘ঘটনার গুরুত্ব অনুযায়ী মামলার শুরুতে প্রারম্ভিক কিছু জটিলতা থাকতেই পারে।

কিন্তু অভিযোগ না-নেওয়ার কথাটা ঠিক নয়।’’

মঙ্গলবার রাতে অনিরুদ্ধর মৃত্যুর পরে চিন্ময় ও বিনোদের নামে নির্দিষ্ট ভাবে অভিযোগ করা হয়। বিশ্বজিৎবাবুর দাবি, তখনও পর্যন্ত ওই দু’জনকেই চিহ্নিত করতে পেরেছিল সুপ্রতিম। ওই দু’জনকে পুলিশ বুধবারেই গ্রেফতার করে। এ দিন উঠে এসেছে আরও তিন-চার জনের নাম।

Lynched Youth
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy