Advertisement
০৩ অক্টোবর ২০২৩
Bratya Basu

বিফল শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্যের ‘অনুরোধ’ও, পদ গ্রহণ রাজ্যপাল নিযুক্ত প্রায় সব অস্থায়ী উপাচার্যের

বৃহস্পতিবার ১১টি বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য নিয়োগ করেন রাজ্যপাল। শিক্ষামন্ত্রী দাবি করেন, এই পদ্ধতি আইনসম্মত নয়। রাজ্যপাল নিযুক্ত উপাচার্যদের পদ প্রত্যাখ্যানের অনুরোধ জানান ব্রাত্য।

File image of Bratya Basu and Governor CV Ananda Bose

রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু (বাঁ দিকে), রাজ্যপাল তথা রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলির আচার্য সিভি আনন্দ বোস (ডান দিকে)। — ফাইল ছবি।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০২ জুন ২০২৩ ১৯:১৪
Share: Save:

শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু সমাজমাধ্যমে পোস্ট করে রাজ্যপালের নিয়োগ করা অস্থায়ী উপাচার্যদের পদ প্রত্যাখ্যানের অনুরোধ জানিয়েছিলেন বৃহস্পতিবার। কিন্তু কার্যক্ষেত্রে দেখা গেল, একজন বাদে বাকি সমস্ত বিশ্ববিদ্যালয়েই রাজ্যপাল নিযুক্ত অস্থায়ী উপাচার্যরা দায়িত্ব নিয়ে নিলেন। এক জন অধ্যাপক দায়িত্ব নিতে অপারগতার কথা চিঠি লিখে জানিয়েছেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসকে। তবে ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়েই তিনি রাজ্যপাল তথা আচার্যের নিয়োগ ফিরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

গত বৃহস্পতিবার রাজ্যের ১১টি বিশ্ববিদ্যালয়ে অস্থায়ী উপাচার্য নিয়োগের চিঠি পাঠান রাজ্যপাল। যিনি রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলির আচার্যও বটে। এর পরেই রাজ্য বনাম রাজ্যপাল সংঘাত চরম পর্যায়ে পৌঁছে যায়। সন্ধ্যায় শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু টুইট করে দাবি করেন, এই পদ্ধতি আইনসম্মত নয়। উচ্চশিক্ষা দফতরের সঙ্গে এ বিষয়ে আচার্য কোনও রকম আলোচনা করেননি। এর পরেই যাঁরা রাজ্যপালের কাছ থেকে অস্থায়ী উপাচার্যের নিয়োগপত্র পেয়েছেন, তাঁদের ওই পদ প্রত্যাখ্যানের ‘সসম্মান অনুরোধ’ জানান ব্রাত্য। ব্রাত্যের সেই টুইটের পর কেটে গিয়েছে প্রায় ২৪ ঘণ্টা। ১১টি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে একটি ছাড়া সবকটিতেই রাজ্যপাল নিযুক্ত অস্থায়ী উপাচার্যেরা পদ গ্রহণ করছেন। এর আগে আরও যে তিন বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘একতরফা ভাবে’ উপাচার্য নিয়োগ করেন রাজ্যপাল, তাঁরা আগেই নিজেদের দায়িত্ব নিয়ে নিয়েছিলেন।

গত বুধবার রাজ্যের ১৪টি উপাচার্যহীন বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য অস্থায়ী উপাচার্যের নাম ঠিক করতে আলোচনায় বসেছিলেন রাজ্যপাল তথা আচার্য সিভি আনন্দ বোস। বৃহস্পতিবার ১১টি বিশ্ববিদ্যালয়ে অস্থায়ী উপাচার্য নিয়োগের জন্য রাজভবন থেকে চিঠি যায়। জানা গিয়েছে, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়, কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়, বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়, সংস্কৃত বিশ্ববিদ্যালয়, সিদো কানহো বিরসা বিশ্ববিদ্যালয়, কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়, বাঁকুড়া বিশ্ববিদ্যালয়, বাবাসাহেব অম্বেডকর এডুকেশন বিশ্ববিদ্যালয়, ডায়মন্ড হারবার মহিলা বিশ্ববিদ্যালয় এবং দক্ষিণ দিনাজপুর বিশ্ববিদ্যালয়— এই ১১টি বিশ্ববিদ্যালয়ে অস্থায়ী উপাচার্য নিয়োগ করেছেন রাজ্যপাল। ব্রাত্য সমাজমাধ্যমে এই ১১ জনের কাছে উচ্চশিক্ষা দফতরের তরফে অনুরোধ জানিয়েছিলেন, তাঁরা যেন পদ প্রত্যাহার করেন। কিন্তু দেখা যাচ্ছে, ব্রাত্যের অনুরোধ বিফলেই যেতে চলেছে।

গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলার অধ্যাপক সৌরেন বন্দ্যোপাধ্যায়কে রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস দক্ষিণ দিনাজপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে অস্থায়ী উপাচার্যের ভার নিতে বলেছিলেন। কিন্তু তিনি সেই দায়িত্ব নিতে পারবেন না বলে লিখিত ভাবে জানিয়ে দিয়েছেন। সূত্রের খবর, ব্যক্তিগত কারণেই দক্ষিণ দিনাজপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থায়ী উপাচার্যের পদ গ্রহণ করছেন না বলে তিনি জানিয়েছেন।

এ দিকে শুক্রবার শিক্ষামন্ত্রী দাবি করেন, রাজভবন থেকে অস্থায়ী উপাচার্য পদে নিয়োগের যে নিয়োগপত্র দেওয়া হয়েছে, তাতে কোথাও নিয়োগ (অ্যাপোয়েন্টমেন্ট) কথাটি নেই। এর পাশাপাশি ব্রাত্যের অভিযোগ, গোটা বিষয়টিই রাজভবন করেছে একতরফা ভাবে। উচ্চশিক্ষা দফতরকে কিছুই জানানো হয়নি। ব্রাত্যের ঘোষণা, শিক্ষা দফতর এই উপাচার্যদের স্বীকৃতি দিচ্ছে না। রাজভবন বনাম বিকাশ ভবনের এই দ্বৈরথ এ বার আইনি রাস্তা নিতে পারে বলেও শিক্ষা দফতর সূত্রে খবর। ব্রাত্য নিজেও জানিয়েছেন, এ বিষয়ে আইনি পরামর্শ নেওয়া শুরু হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement

Share this article

CLOSE