Advertisement
E-Paper

সন্দেশখালির ‘নির্যাতিত’ মহিলাদের জন্য পদক্ষেপকে কুর্নিশ! বোসকে আবার চিঠি ‘তৃণমূল সাংসদ’ দিব্যেন্দুর

দিব্যেন্দু অধিকারী রাজ্যপালের পাশে দাঁড়ানোর ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন। ওই মহিলাদের সব রকম সাহায্যের জন্য রাজ্যপাল তাঁকে কোনও নির্দেশ দিলে তা পালন করবেন বলেও জানিয়েছেন।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ১৯:৪৫
image of bose dibyendyu

বাঁ দিক থেকে রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস, সাংসদ দিব্যেন্দু অধিকারী। — ফাইল চিত্র।

সন্দেশখালি নিয়ে আবার রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসকে চিঠি ‘তৃণমূল সাংসদ’ দিব্যেন্দু অধিকারীর। এ বার সন্দেশখালিতে ‘নির্যাতিত’ মহিলাদের জন্য যে ‘পদক্ষেপ’ করেছেন রাজ্যপাল, তা নিয়ে তাঁকে কুর্নিশ জানিয়ে চিঠি দিলেন তমলুকের সাংসদ। চিঠিতে জানালেন, সন্দেশখালিতে যে সব মহিলা নিজেদের নিরাপদ মনে করছেন না, তাঁদের জন্য রাজ্যপাল যে পদক্ষেপ করেছেন, তা নিয়ে তিনি ‘গর্বিত’। এই নিয়ে তিনিও রাজ্যপালের পাশে দাঁড়ানোর ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন। ওই মহিলাদের সব রকম সাহায্যের জন্য রাজ্যপাল তাঁকে কোনও নির্দেশ দিলে তা পালন করবেন বলেও জানিয়েছেন।

গত সোমবার সন্দেশখালি গিয়েছিলেন রাজ্যপাল। রাজভবনের তরফে জানানো হয়েছে, রাজ্যপাল সেদিন গিয়ে বলে এসেছিলেন, যদি কোনও ‘নির্যাতিত’ মহিলা আশ্রয় চান, তাঁর জন্য রাজভবনের দরজা খোলা। এই নিয়েই রাজ্যপালকে চিঠি লিখে কুর্নিশ জানিয়েছেন দিব্যেন্দু। চিঠিতে তিনি লিখেছেন, ‘‘রাজভবনে সন্দেশখালির নির্যাতিত মহিলাদের আশ্রয় দেওয়ার যে পদক্ষেপ আপনি করেছেন, তা কল্পনাতীত। অশান্ত সন্দেশখালিতে যে সব মহিলারা নিজেদের নিরাপদ ভাবতে পারছেন না, তাঁদের জন্য যে নির্দেশ আপনি দিয়েছেন, তাকে কুর্নিশ জানাই। আমি গর্বিত।’’ এর পরেই দিব্যেন্দু জানিয়েছেন, এই কাজে তিনি পাশে দাঁড়াতে পারলে বাধিত হবেন। তিনি চিঠিতে লিখেছেন, ‘‘আপনি যদি আপনার পাশে দাঁড়ানোর অনুমতি দেন এবং রাজভবনে আশ্রয়, খাবার, নিরাপত্তার জন্য আসা মহিলাদের যে কোনও রকম সাহায্যের নির্দেশ দেন, তা হলে আমি বাধিত হব।’’

image of letter

রাজ্যপালকে চিঠি দিব্যেন্দু অধিকারীর। — নিজস্ব চিত্র।

ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহ থেকে আবার উত্তপ্ত হয় সন্দেশখালি। তৃণমূল নেতা শাহাজাহান শেখ, শিবু হাজরাকে গ্রেফতারের দাবিতে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন গ্রামবাসীদের একাংশ। সামনের সারিতে ছিলেন মহিলারা। তাঁদের একটা অংশ শাহজাহানদের বিরুদ্ধে হেনস্থার অভিযোগও তুলেছেন। বিজেপি দাবি করেছে, ‘ধর্ষণ’ হয়েছে সন্দেশখালিতে। আঙুল তৃণমূল নেতৃত্বের দিকে। এর পরেই গত সোমবার সন্দেশখালি গিয়েছিলেন রাজ্যপাল। তিনি সেখানে মহিলাদের সঙ্গে কথা বলেন। তার পর সাংবাদিকদের তিনি বলেছিলেন, ‘‘এখানে সকলেই আমার বোন। তাঁদের সম্মান রক্ষার্থে যা করণীয়, করব। আমি সার্বিক ভাবে যে ছবিটা দেখেছি, তা আমাকে মর্মাহত করেছে। যা আজ দেখলাম, তা আগে দেখিনি। অনেক কিছু শুনেছি, যা আগে শুনিনি আইন আইনের পথে না চললে মানুষ বিপন্ন বোধ করে।’’ সেখানেই সন্দেশখালিতে ‘নির্যাতিত’ মহিলাদের রাজভবনে আশ্রয় দেওয়ার কথাও বলেন। এ বার সেই পদক্ষেপকেই কুর্নিশ জানালেন তমলুকের সাংসদ দিব্যেন্দু।

প্রসঙ্গত, গত মাসের শুরুতে রাজভবনে গিয়ে রাজ্যপালের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছিলেন দিব্যেন্দু এবং তাঁর বাবা তথা কাঁথির সাংসদ শিশির অধিকারী। রাজভবন থেকে বেরিয়ে দিব্যেন্দু এই সাক্ষাতকে ‘সৌজন্যমূলক’ বলে দাবি করেছিলেন। যদিও তাতে জল্পনা থামেনি। খাতায়-কলমে দিব্যেন্দু এখনও তৃণমূল সংসদ। যদিও তাঁকে তৃণমূলে সক্রিয় ভাবে দেখা না গেলেও বিজেপির কোনও কর্মসূচিতেও সরাসরি দেখা যায়নি। সন্দেশখালিতে ইডি অফিসারদের উপর হামলার পরে নিজের উদ্বেগ জানিয়ে রাজ্যপালকে চিঠি লিখেছিলেন দিব্যেন্দু।

পূর্ব মেদিনীপুর তৃণমূলের একাংশের ধারণা, ২০২৪ সালের লোকসভা ভোটের আগে দিব্যেন্দু বিজেপিতে যোগ দিতে পারেন। ২০২০ সালের ১৯ ডিসেম্বর, রাজ্য বিধানসভা নির্বাচনের আগে শুভেন্দু অধিকারী তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেন। তার পর তৃণমূলে থাকলেও শিশির ও দিব্যেন্দুর ‘বিশ্বাসযোগ্যতা’ নিয়ে তৃণমূল বার বার প্রশ্ন তুলেছে। রাজভবনে গিয়ে রাজ্যপালের সঙ্গে পিতা-পুত্রের সাক্ষাতের পর তাঁদের বিজেপিতে যোগদানের জল্পনা আরও বৃদ্ধি পায়। এ বার রাজ্যপালকে আবার সন্দেশখালি নিয়ে চিঠি দিলেন দিব্যেন্দু। তাতে সন্দেশখালি নিয়ে বিজেপির অভিযোগকেই যেন ‘মান্যতা’ দিলেন। প্রশ্ন উঠছে, তবে কি লোকসভা নির্বাচনের আগে বিজেপির দিকে আরও এক পা এগিয়ে রাখলেন দিব্যেন্দু!

CV Ananda Bose Dibyendu Adhikari Sandeshkhali Incident
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy