বিজেপি সাংসদের নেতৃত্বে ‘বিধানসভা ঘেরাও’ কর্মসূচি শুরুতেই আটকে দিল পুলিশ। কলেজ স্কোয়্যার থেকে মিছিল করে বিধানসভার দিকে যাওয়ার কথা ছিল আন্দোলনকারীদের। অনুমতি না-থাকায় প্রথমেই পুলিশ আটকে দিল কলেজ স্কোয়্যারে জমায়েতের চেষ্টা। পরে বিজেপি রাজ্য দফতর থেকে মিছিল নিয়ে কলেজ স্কোয়্যারের দিকে যাওয়ার চেষ্টাতেও বাধা দেওয়া হল। ফলে অবস্থান, ধস্তাধস্তি, বিক্ষোভে বেশ কিছু অচল হয়ে গেল কলেজ স্ট্রিট। সাংসদ, বিধায়ক-সহ বিজেপির এক ঝাঁক নেতাকর্মীকে আটক করে বিভিন্ন থানায় নিয়ে যাওয়া হল।
আটক হয়ে তালতলা থানায় বিজেপি নেতারা। ছবি: সংগৃহীত।
পশ্চিমবঙ্গ সরকার ওবিসি (অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণি) সংরক্ষণের সুবিধা বেআইনি ভাবে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে পাইয়ে দিচ্ছে বলে বিজেপি অনেক দিন ধরেই অভিযোগ করছে। প্রকৃত ওবিসিরা ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন বলেও রাজ্যের প্রধান বিরোধী দলটি দাবি করছে। তার প্রতিবাদেই ‘বিধানসভা ঘেরাও’ কর্মসূচির ডাক দেওয়া হয়েছিল। ঘেরাওয়ের ডাক দেওয়া হয়েছিল ‘পশ্চিমবঙ্গ ওবিসি অধিকার রক্ষা মঞ্চ’ নামে একটি সংগঠনের নাম করে। এই কর্মসূচি বিজেপির কর্মসূচি নয় বলেও দাবি করা হয়েছিল। কিন্তু যে সংগঠনের ব্যানারে কর্মসূচির আয়োজন, সেটির নেতৃত্বে তথা কেন্দ্রীয় কমিটিতে রয়েছেন পুরুলিয়ার সাংসদ তথা রাজ্য বিজেপির অন্যতম সাধারণ সম্পাদক জ্যোতির্ময় সিংহ মাহাতো, দুর্গাপুর পশ্চিমের বিজেপি বিধায়ক লক্ষণ ঘোড়ুই, বিজেপি ওবিসি মোর্চার রাজ্য সভাপতি অজিত দাস, বীরভূম জেলা বিজেপির সভাপতি ধ্রুব সাহা, উত্তর কলকাতা জেলা বিজেপির সভাপতি তমোঘ্ন ঘোষরা। ফলে কর্মসূচি যে বকলমে বিজেপিরই, তা নিয়ে কোনও সংশয়ের অবকাশ ছিল না।
বেলা ১২টা থেকে কলেজ স্কোয়্যারে জমায়েতের কথা ছিল। কিন্তু অনুমতি না-থাকায় পুলিশ সেখানে জমায়েত হতে দেয়নি। কলেজ স্কোয়্যারে জমায়েত করা যাবে না বুঝে কাছেই মুরলীধর সেন লেনে বিজেপির রাজ্য দফতরের সামনে কর্মী-সমর্থকদের জড়ো করা শুরু করে বিজেপি। ২টোর পরে জ্যোতির্ময়ের নেতৃত্বে মিছিল শুরু হয়। মদনমোহন সেন স্ট্রিট এবং প্যারীচরণ সরকার স্ট্রিট হয়ে কলেজ স্ট্রিটের দিকে এগোয় সে মিছিল। কিন্তু কলেজ স্ট্রিটে ওঠার মুখেই ছিল পুলিশি ব্যারিকেড। সেখানেই বাধা পেতে হয় মিছিলকে। সাংসদ, বিধায়ক-সহ বিজেপি নেতারা কলেজ স্ট্রিটের মুখেই বসে পড়েন। কিছু ক্ষণ পরে পুলিশ তাঁদের আটক করে প্রিজ়ন ভ্যানে তোলার চেষ্টা করতেই পরিস্থিতি তেতে ওঠে। বিজেপি-পুলিশ ধস্তাধস্তি শুরু হয়ে যায়। তবে ৩টে বাজার আগেই আন্দোলনের নেতা এবং অংশগ্রহণকারীদের অনেককে আটক করে বিভিন্ন থানায় পাঠিয়ে দেওয়া হয়। মিছিল ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়।