Advertisement
E-Paper

মুকুল-বাবুলের তিরে ফের অভিষেক, পাল্টা হুমকি মামলার

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বুধবার বিধানসভায় বলেছেন, বিশ্ব বাংলার লোগো তাঁর সৃষ্টি। রাজ্য সরকারকে তিনি সেটা ব্যবহার করতে দিয়েছেন। অথচ, রাজ্যের দুই শীর্ষ আমলা— স্বরাষ্ট্রসচিব অত্রি ভটাচার্য এবং ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প সচিব রাজীব সিংহ আগেই দাবি করেছেন, বিশ্ব বাংলা রাজ্য সরকারের সম্পত্তি।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০১ ডিসেম্বর ২০১৭ ০৩:৩২

বিশ্ব বাংলা লোগো এবং বালি ও কয়লা পাচার নিয়ে বৃহস্পতিবার ফের সরব হল বিজেপি। মুকুল রায় কলকাতায় বিশ্ব বাংলা কাণ্ডের নিরপেক্ষ তদন্ত দাবি করলেন। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয় কয়লা পাচারের প্রসঙ্গে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম উল্লেখ করে আক্রমণ করলেন আসানসোলে। বাবুলের বিরুদ্ধে সোমবারই মামলা করা হবে বলে হুমকি দিয়েছেন অভিষেক।

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বুধবার বিধানসভায় বলেছেন, বিশ্ব বাংলার লোগো তাঁর সৃষ্টি। রাজ্য সরকারকে তিনি সেটা ব্যবহার করতে দিয়েছেন। অথচ, রাজ্যের দুই শীর্ষ আমলা— স্বরাষ্ট্রসচিব অত্রি ভটাচার্য এবং ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প সচিব রাজীব সিংহ আগেই দাবি করেছেন, বিশ্ব বাংলা রাজ্য সরকারের সম্পত্তি। আবার চলতি বছরের ১৮ মে কেন্দ্রীয় সরকারের ট্রেডমার্ক সংক্রান্ত দফতরের নথিতে রয়েছে, ওই লোগো তৃণমূল সাংসদ তথা মুখ্যমন্ত্রীর ভাইপো অভিষেকের। অভিষেক বিশ্ব বাংলার স্বত্ব চেয়ে আবেদন করেছিলেন ২০১৩ সালের ২৬ নভেম্বর। সাম্প্রতিক বিতর্কের জেরে চলতি বছরের ১৩ নভেম্বর তিনি তা প্রত্যাহারের আবেদন করেন। রাজ্য সরকার হলফনামা দিয়ে জানিয়েছে, তাদের ভাবমূর্তি নষ্ট করার উদ্দেশ্যে ওই লোগোর স্বত্ব চেয়ে আবেদন করা হয়েছিল। অভিষেক অবশ্য আলিপুরদুয়ার আদালতে হলফনামা দিয়ে জানিয়েছেন, বিশ্ব বাংলা বিষয়ে তিনি যা করেছেন, তার সবই মুখ্যমন্ত্রীর অনুমতিক্রমে।

এই ঘটনা পরম্পরা সাজিয়ে মুকুল এ দিন বলেন, ‘‘তা হলে কে সত্যি বলছেন? মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী না অভিষেক? তা জানতে কোনও নিরপেক্ষ সংস্থাকে দিয়ে তদন্ত করাতে হবে।’’ বিজেপি-র তরফে মুকুল এ বিষয়ে তদন্তের দাবি জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় সরকারের পারসোনেল এবং প্রশিক্ষণ দফতরের কাছে। তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় অবশ্য মুকুলের সব অভিযোগ উড়িয়ে বলেন, ‘‘কাঁচরাপাড়ার চাটনি দাদু কী বলেছেন, তা নিয়ে উত্তর দিতে হবে কেন? অভিযোগ তো করে দিয়েছেন, প্রমাণ করতে পারবেন? এখন তো বিপদে পড়ে গিয়েছেন!’’

অন্য দিকে, কেন্দ্রীয় ভারী শিল্প প্রতিমন্ত্রী তথা আসানসোলের সাংসদ বাবুল এ দিনই বলেন, ‘‘এখানে কয়লার ভয়াবহ সিন্ডিকেট চলছে। এর প্রভাব কী, তা সকলেই জানেন।’’ কয়লা পাচার থেকে কারা টাকা তুলে দিচ্ছে, তা নিয়ে কিছু নামও করেন বাবুল। বলেন, ‘‘ছোট ব্যানার্জি অর্থাৎ অভিষেক ব্যানার্জিকে ১৭-১৮ কোটি টাকা দেওয়া হচ্ছে।’’ তাঁর আরও বক্তব্য, ‘‘কয়লা পাচার বন্ধ করতে আমি কেন্দ্রীয় কয়লামন্ত্রী, কয়লা সচিব এবং কোল ইন্ডিয়ার চেয়ারম্যানের সঙ্গে কথা বলেছি। কিন্তু কেন্দ্র তো সামরিক বাহিনী নামাতে পারবে না! কয়লা পাচার ঠেকাতে হলে স্থানীয় পুলিশ-প্রশাসনকেই সক্রিয় হতে হবে।’’ বালি এবং কয়লা পাচার নিয়ে গত শনিবার উলুবেড়িয়ায় একই সুরে অভিযোগ করেছিলেন মুকুলও।

বাবুলের অভিযোগ সম্পর্কে অভিষেক বলেন, ‘‘আইনজীবীকে বলেছি, ওঁকে নোটিস পাঠাতে। শুক্রবারই নোটিস পাঠানো হচ্ছে। সোমবার হাইকোর্টে তাঁর বিরুদ্ধে মামলা করা হবে। এর আগেও উনি আমার বিরুদ্ধে অনেক কিছু অভিযোগ করেছিলেন। আমার তরফ থেকে আইনজীবীর নোটিস পাঠানো হয়েছিল। তিন-চার মাস হয়ে গিয়েছে। এখনও জবাব আসেনি। উনি ১৭-১৮ কোটি টাকার কথা বলেছেন, শুনেছি। যদি ১৭ পয়সারও কোনও যোগাযোগ প্রমাণ করতে পারেন, আবারও বলছি, রাজনীতি করা ছেড়ে দেব।’’ অভিষেকের আরও বক্তব্য, ‘‘কয়লা খাদান দেখার দায়িত্ব কেন্দ্রীয় বাহিনী সিআইএসএফ-এর। যদি এ সব হয়েও থাকে, সেটা সিআইএসএফ দেখতে পারছে না কেন? মুকুল রায় গরু পাচারের কথা বলেছিলেন। সেটা দেখার দায়িত্ব বিএসএফ-এর। না পারলে তাদের ব্যর্থতা।’’

বিজেপি মুকুল রায় BJP Mukul Roy বিশ্ব বাংলা লোগো বিশ্ব বাংলা
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy