Advertisement
২৪ মে ২০২৪

লাইন দিয়ে বিধায়কেরা, জল্পনা বাড়ালেন মুকুল

এখন ২১ জুলাই মানেই তৃণমূলের মঞ্চ থেকে শহিদ তর্পণের পাশাপাশি বিরোধী শিবির ভেঙে নেতা-নেত্রীদের যোগদান। এ বার কাদের পালা, ২১শের আগে সেই জল্পনা এখন তুঙ্গে! সেই চর্চাতেই আরও মাত্রা যোগ করলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি মুকুল রায়।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৮ জুলাই ২০১৬ ০৩:৩০
Share: Save:

এখন ২১ জুলাই মানেই তৃণমূলের মঞ্চ থেকে শহিদ তর্পণের পাশাপাশি বিরোধী শিবির ভেঙে নেতা-নেত্রীদের যোগদান। এ বার কাদের পালা, ২১শের আগে সেই জল্পনা এখন তুঙ্গে! সেই চর্চাতেই আরও মাত্রা যোগ করলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি মুকুল রায়।

দুর্গাপুরে রবিবার দলের এক সভায় গিয়ে মুকুল কড়া আক্রমণ করেছেন কংগ্রেস এবং সিপিএমকে। সাম্প্রতিক বিধানসভা ভোটে কেরল ও অসমে কংগ্রেসের সরকার পড়ে যাওয়ার কথা বলেছেন। বাংলায় ভোটের আগে পার্ক সার্কাস ময়দানে কংগ্রেস সহ-সভাপতি রাহুল গাঁধীর সঙ্গে একমঞ্চে সিপিএমের বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের উপস্থিতি নিয়ে কটাক্ষ করেছেন। বলেছেন, ‘‘আমার জিজ্ঞাসা করতে ইচ্ছে করে, রাহুল তুমি কি বুদ্ধকে কানে কানে বললে যে, আমার বাবা রাজীব গাঁধী চোর ছিল, তোমরা ঠিকই বলেছিলে! না বুদ্ধ তোমাকে কানে কানে বলল, আমরা ভুল ছিলাম! আমাদের ক্ষমাভিক্ষা দিয়ে দাও!’’ কিন্তু প্রতিপক্ষের উদ্দেশে এই ব্যঙ্গ-বাণের চেয়েও কৌতূহল তৈরি হয়েছে মুকুলের এই মন্তব্যে— ‘‘কংগ্রেস বাংলায় সিপিএমের উচ্ছিষ্ট নিয়ে ওই ৪২ না ৪৪-এ দাঁড়িয়ে আছে। তা-ও লিখে রেখে দিন, লাইন দিয়ে বসে আছে অন্তত ২০ জন বিধায়ক! যে কোনও দিন যোগ দেবে!’’

জল্পনা তৈরি হয়েছে, কারা ২১শে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মঞ্চে তৃণমূলের পতাকা হাতে নেবেন? প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী ইতিমধ্যেই অভিযোগ করেছেন, প্রলোভন এবং ভয় দেখিয়ে বিধায়ক, কাউন্সিলর থেকে পঞ্চায়েত প্রতিনিধিদের পর্যন্ত ভাঙিয়ে নেওয়ার চেষ্টা চলছে। ভাঙনের আশঙ্কা ঠেকাতেই দলকে আন্দোলনের পথে নিয়ে যাওয়ার কর্মসূচিও ঘোষণা করেছেন প্রদেশ সভাপতি। তা সত্ত্বেও আশঙ্কা এবং চর্চা, কোনওটাই থেমে থাকছে না! বিশেষত, বিধানসভা ভোটের আগে আগেই যাঁরা তৃণমূল থেকে বিক্ষুব্ধ হয়ে কংগ্রেসে যোগ দিয়েছিলেন, তাঁদের অনেককে নিয়েই কৌতূহল বেশি। মমতার প্রথম ইনিংসে বিরোধী শিবিরের লোকজনের হাতে জোড়াফুলের পতাকা ধরানোয় সিদ্ধহস্ত ছিলেন মুকুলই। এখন তাঁর মুখেই ‘লাইন দিয়ে’ থাকার মন্তব্য শুনে জল্পনা আরও দ্রুতগামী হয়েছে।

তৃণমূল এবং বিরোধী শিবির সূত্রের খবর, বাঁকুড়া জেলার একাধিক বিধায়ক রয়েছেন শাসক দলের নিশানায়। একই ভাবে মালদহ জেলার দিকেও বিশেষ নজর রয়েছে শাসক দলের। মালদহই এ বার একমাত্র জেলা, যেখানে তৃণমূলের কোনও বিধায়ক জোটেনি। বিরোধী শিবির সূত্রে বলা হচ্ছে, মালদহে কাউন্সিলর থেকে বিধায়ক পর্যন্ত ভাঙানোর জন্য মরিয়া হয়ে নেমেছেন শাসক দলের নেতৃত্ব। কংগ্রেস এবং বামের সমর্থনে নির্দল প্রার্থী হয়ে জিতেছেন, এমন এক বিধায়ক জল্পনার কেন্দ্রে আছেন। তেমনই মালদহ জেলাতেই কংগ্রেস থেকে তৃণমূলে যাওয়া ‘দলবদলু’ এক বিধায়ককে হারিয়ে জয়ী সিপিএমের নতুন বিধায়ককে নিয়েও চর্চা চলছে।

প্রদেশ কংগ্রেসের এক সাধারণ সম্পাদকের কথায়, ‘‘যাঁরা তৃণমূলের বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষের ভোট পেয়ে জিতেছেন, তাঁদের বিবেকের কাছে আবেদন করছি।’’ সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর এক সদস্যের বক্তব্য, ‘‘বিক্রি হয়ে যাওয়ার সংস্কৃতির বিরুদ্ধে যত দূর লড়াই করা যায়,
করব! তবু টাকার জোরের কাছে কোথাও কোথাও হেরে যেতে হচ্ছে!’’ তৃণমূল নেতৃত্ব অবশ্য দাবি করছেন, তাঁরা কাউকে ভাঙাচ্ছেন না। বিরোধীদের পায়ের তলায় জমি নেই দেখেই তৃণমূলে যোগ দেওয়ার তালিকা লম্বা হচ্ছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Mukul Roy TMC Congress Rahul gandhi CPM
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE