ভোটের বাক্সে ঘাসফুলে বসন্ত। কিন্তু মুকুল ঝরে যাওয়ার দিকে এগোচ্ছেন কি না, জল্পনা সেটাই।
দল প্রতিষ্ঠার পর থেকে এত দিন যে কোনও ভোটে তৃণমূলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘নম্বর টু’ হয়ে মুকুল রায় এবং তাঁর বাহিনীকে সক্রিয় দেখা যেত। বনগাঁ লোকসভা এবং কৃষ্ণগঞ্জ বিধানসভার উপনির্বাচনে এ বার তার ব্যতিক্রম ঘটেছে। প্রচারের শেষ লগ্নে মুকুল বুড়ি ছোঁয়ার মতো করে বনগাঁয় গিয়েছেন। তাঁর বাহিনীও ছিল কার্যত অদৃশ্য। দলের অন্দরে আশঙ্কা ছিল, ভোটের দিন মুকুল-বাহিনী মেঘের (পড়ুন মধ্যমগ্রামের দলীয় দফতর) আড়াল থেকে কোনও ‘অর্ন্তঘাত’ করে বসবে না তো!
ভোটের ফল বেরোনোর পরে অবশ্য দেখা যাচ্ছে, সব আশঙ্কাই অমূলক। ক্ষমতার বৃত্তের বাইরে থাকলে মুকুলের প্রভাব কতটা বা দলে তাঁর ভূমিকাটি অপরিহার্য কি না, সেই প্রশ্নই বরং উঠতে শুরু করল এ দিনের পর। সোমবার দুপুরে পুরুলিয়া যাওয়ার আগে কলকাতায় তৃণমূলনেত্রী বনগাঁ ও কৃষ্ণগঞ্জে তৃণমূলের জয়কে ‘ঐতিহাসিক’ বলে অভিহিত করেছেন। উপনির্বাচন মিটলেও দলে অন্তর্ঘাতের আশঙ্কা থেকে যাচ্ছে কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন ফুৎকারে উড়িয়ে দিয়ে বলেছেন, “দলে কোনও বিভাজন নেই। ভেদাভেদ নেই। তৃণমূল কংগ্রেস ঐক্যবদ্ধ দল।” মুকুল শিবিরও আপাতত এইটুকু নিয়েই স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলছে। তাঁদের বিরুদ্ধে অন্তর্ঘাতের অভিযোগ ভোটের ফলে প্রমাণিত হয়নি বলেই এ দিন দাবি করেছেন মুকুল-ঘনিষ্ঠ একাধিক নেতা। উপনির্বাচনে তাঁর গা-ছাড়া মনোভাব নিয়ে যে প্রশ্ন উঠেছিল, তা নিয়ে এ দিন দিল্লিতে মুকুল বলেন, “যে যে ভাবে ব্যাখ্যা করবেন সে ভাবে ব্যাখ্যা হবে। নিশ্চিত ভাবে বলতে পারি, এই উপনির্বাচনেও আমার যথেষ্ট ভূমিকা ছিল। সেই ভূমিকা আমি যথাযথ ভাবে পালন করেছি।”