প্রতীকী ছবি
সন্ধ্যায় হঠাৎই যুবকের মোবাইল নম্বর থেকে ‘হোয়াটসঅ্যাপ’-এ দু’টি ভোটার কার্ডের অস্পষ্ট ছবি পেয়েছিলেন কয়েক জন বন্ধু। রাতে খবর আসে, দেহ মিলেছে গাড়িচালক ওই যুবকের।
শুক্রবার রাতে বর্ধমানের বেচারহাটে দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়ের পাশে হাওড়ার লিলুয়ার বাসিন্দা কুন্দন মহারাজের (২৪) রক্তাক্ত দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। সেখান থেকে প্রায় ১৫ কিলোমিটার দূরে বনেট ভাঙা অবস্থায় গাড়িটি পাওয়া যায়। পরিজন ও বন্ধুদের দাবি, হাওড়া থেকে বর্ধমানে যাওয়ার জন্য বিকেলে কুন্দনের গাড়ি ভাড়া নেয় কয়েকজন। সেটি ছিনতাইয়ের মতলবেই তাঁকে খুন করা হয়েছে বলে অভিযোগ। তবে ওই ভোটার কার্ডগুলি কাদের, কেন কুন্দন সেগুলি বন্ধুদের পাঠালেন, তা নিয়ে ধন্দ রয়েছে।
পরিবার সূত্রে জানা যায়, কুন্দনের গাড়ি ভাড়া দেওয়ার ব্যবসা রয়েছে। কখনও নিজে, কখনও অন্য চালক ভাড়া নিয়ে যান। তাঁর বন্ধুদের দাবি, শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৪টে নাগাদ হাওড়ার একটি হোটেলের সামনে থেকে বর্ধমানের একটি হোটেলে যাওয়ার জন্য গাড়ি ভাড়া নেয় চার জন। কুন্দন নিজেই গাড়ি নিয়ে বেরোন। তাঁর বন্ধু রোহিত নারায়ণ বলেন, “প্রতিদিন সন্ধ্যায় আড্ডা দিই। আসছে না দেখে ফোন করলে কুন্দন জানায়, বর্ধমানে যাত্রী পৌঁছতে যাচ্ছে। ফিরতে দেরি হচ্ছে দেখে আবার ফোন করি। আর ফোনে পাইনি।’’
রোহিতের দাবি, কুন্দনের ফোন থেকে ‘হোয়াটসঅ্যাপ’-এ দু’টি ভোটার কার্ডের ছবি মেলার পরে তাঁকে টানা ফোন করতে থাকেন তাঁরা। রাতে ফোন ধরে পুলিশ। তখনই ঘটনা জানা যায়। রাতেই বর্ধমানে পৌঁছন কুন্দনের বাড়ির লোকজন। তাঁর বাবা সুরেন্দ্র মহারাজ বর্ধমান থানায় গাড়ি ছিনতাইয়ের উদ্দেশ্যে খুন করে দেহ লোপাটের চেষ্টার অভিযোগ করেন। গাড়িটি নিয়ে পালানোর সময়ে কোনও দুর্ঘটনা ঘটায় আততায়ীরা তা ফেলে পালায় বলে তাঁদের ধারণা। যে ভোটার পরিচয়পত্রের ছবি কুন্দন পাঠিয়েছিলেন, সেগুলিও পুলিশকে দেন তাঁরা। কুন্দনের দাদা সুরজ বলেন, ‘‘বিপদ আসছে, তা বোধ হয় ভাই আঁচ করেছিল। তাই যাত্রীদের কাছ থেকে কোনও ছুতোয় পরিচয়পত্র নিয়ে ছবি তুলে পাঠায়।’’
পুলিশ জানায়, কুন্দনের দেহে তিন-চার জায়গায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। ভোটার কার্ডের ছবিগুলি পরিষ্কার নয়। সেগুলি পরীক্ষা করে তথ্য উদ্ধারের চেষ্টা হবে। বর্ধমানের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর) প্রিয়ব্রত রায় বলেন, ‘‘কেন এই খুন, এখনই বলা যাচ্ছে না। কয়েকটি সূত্র মিলেছে। তা ধরেই তদন্ত এগোচ্ছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy