Advertisement
E-Paper

তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ নেয়নি পুলিশ, নালিশ

এক যুবকের অস্বাভাবিক মৃত্যুর পরে তাঁকে খুন করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন তাঁর স্ত্রী। রবিবার সকালে কোচবিহারের মাথাভাঙায় গোপাল অধিকারী (৩৫) নামে ওই যুবক মারা যান। তাঁর স্ত্রী কণিকাদেবীর দাবি, গোপালবাবুকে তৃণমূলের স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্য ও তাঁর এক সঙ্গী শনিবার রাতে জোর করে বিষ খাইয়ে ছিলেন। তাঁর বক্তব্য, এ দিন মাথাভাঙা থানায় তিনি সেই অভিযোগ করতে গেলে পুলিশ তা নিতে চায়নি।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৫ জুন ২০১৫ ০৪:৩৫

এক যুবকের অস্বাভাবিক মৃত্যুর পরে তাঁকে খুন করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন তাঁর স্ত্রী। রবিবার সকালে কোচবিহারের মাথাভাঙায় গোপাল অধিকারী (৩৫) নামে ওই যুবক মারা যান। তাঁর স্ত্রী কণিকাদেবীর দাবি, গোপালবাবুকে তৃণমূলের স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্য ও তাঁর এক সঙ্গী শনিবার রাতে জোর করে বিষ খাইয়ে ছিলেন। তাঁর বক্তব্য, এ দিন মাথাভাঙা থানায় তিনি সেই অভিযোগ করতে গেলে পুলিশ তা নিতে চায়নি। পুলিশ একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করেছে। মাথাভাঙা মহকুমার পুলিশ আধিকারিক গণেশ বিশ্বাস বলেন, “তদন্ত চলছে। এ বার সেই মতো মামলায় ধারা যোগ করা হবে।”

এ দিন সকালে মাথাভাঙা মহকুমা হাসপাতালে মারা যান গোপালবাবু। তাঁর বাড়ি মাথাভাঙা থানার জোরপাটকির ভোরকুলডাঙায়। কণিকাদেবীর দাবি, ‘‘আমার স্বামী আত্মহত্যা করেননি। তাঁকে খুন করেছেন স্থানীয় তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্য ও তাঁর সঙ্গী এলাকার এক দাপুটে কর্মী।’’ স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই কর্মীর সঙ্গে গোপালবাবুর পরিবারের এক মহিলার সম্পর্ক তৈরি হয়। গোপালবাবু তার প্রতিবাদ করেন। তখন থেকেই গণ্ডগোল শুরু। ওই কর্মী সে সময় গোপালবাবু সহ তিন জনের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগও করেন। তারপর থেকেই বাড়ি ছাড়া ছিলেন গোপালবাবু। কিছু দিন আগে ওই মামলায় তাঁরা জামিনও নেন বলে দাবি। এরপরে তিনি বাড়ি ফিরলে তৃণমূলের গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্য অন্য কয়েকজনকে সঙ্গে নিয়ে সালিশি সভা বসান বলে অভিযোগ। সেখানে গোপালবাবুর এক আত্মীয়কে মারধরও করা হয় বলে দাবি। এরপরে গোপালবাবু ফের পালিয়ে যান।

স্ত্রীকে নিয়ে গোপালবাবু এই সময় তাঁর শ্বশুরবাড়ি খলিসামারিতে থাকতেন। কণিকাদেবীর দাবি, শনিবার রাতে গোপালবাবু ব্যক্তিগত কাজে ভোরকুলডাঙার দিকে যান। কণিকাদেবী বলেন, ‘‘রাতে আমার স্বামী ফোনে আমাকে জানায় যে, তাঁকে জোর করে বিষ খাইয়ে দেওয়া হয়েছে। কারা তাঁকে বিষ খাইয়েছে, তা-ও তিনি জানান। আমরা সে কথা শুনে গিয়ে দেখি খলিসামারি থেকে কিছু দূরে তিনি পড়ে রয়েছেন। তাঁর মুখ দিয়ে রক্ত বের হচ্ছিল।’’

গোপালবাবুকে মাথাভাঙা মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। সেখানেই ভোরে মারা যান তিনি। এরপরে হাসপাতালেই কণিকাদেবীর সঙ্গে প্রাথমিক কথাবার্তার পরে পুলিশ একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে। কণিকাদেবীর অভিযোগ, ‘‘তখন স্বামীর মৃত্যুতে বেসামাল ছিলাম। তাই সব কথা বলতে পারিনি। পরে থানায় গিয়ে লিখিত ভাবে খুনের মামলা রুজু করতে চেয়েছিলাম। নির্দিষ্ট করে অভিযুক্তদের নামও বলেছিলাম। কিন্তু পুলিশ অভিযোগ নিতে চায়নি।’’ পুলিশ জানিয়েছে, ময়নাতদন্তের রিপোর্টের জন্য অপেক্ষা করা হচ্ছে।

তৃণমূলের ওই পঞ্চায়েত সদস্যের বক্তব্য, ‘‘ওই পরিবারে একটা গোলমাল হলে আমাকে ডাকা হয়েছিল। আমি সকলকেই আইনের আশ্রয় নিতে বলেছিলাম। এর বাইরে কিছু জানি না।’’ সালিশির অভিযোগও তিনি অস্বীকার করেছেন। তাঁর কথায়, ষড়যন্ত্র করে তাঁকে ফাঁসানোর চেষ্টা হচ্ছে। তাঁর সঙ্গী তৃণমূল কর্মীর দাবি, ‘‘গোপাল আমাকে একবার মারধর করেছিল। তখন পুলিশে ওর বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছিলাম। এখন আমাকে অকারণে জড়ানো হচ্ছে।’’

তবে পুলিশ কেন শনিবার রাতেই হাসপাতালে গিয়ে গোপালবাবুর সঙ্গে কথা বলেনি, সে প্রশ্নও উঠেছে। সিপিএমের জেলা কমিটির সদস্য অরুণ চৌধুরীর অবশ্য বক্তব্য, ‘‘পুলিশ যে শাসক দলের স্বার্থের কথা ভেবেই কাজ করে তার নানা উদাহরণ রয়েছে। এ ক্ষেত্রেও তাই হচ্ছে কি না, তা খতিয়ে দেখা দরকার।’’ কোচবিহারের পুলিশ সুপার রাজেশ যাদব বলেন, “গোটা ঘটনাটিই খতিয়ে দেখা হবে।”

Murder Trinamool leader Gopal Adhikari cooch behar Mathabhanga Ganesh Biswas
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy