E-Paper

‘আমার একমাত্র ভুল সিএ হওয়া’, আক্ষেপ অনুব্রতের হিসাবরক্ষক মণীশের, কেঁদে ভাসালেন তাঁর স্ত্রী

মঙ্গলবার সন্ধ্যায় দিল্লিতে ইডি-র সদর দফতরে দিনভর জিজ্ঞাসাবাদের পরে মণীশকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। বুধবার সকালে অনুব্রতের মেয়ে সুকন্যা মণ্ডলকে ইডি-র দফতরে ডেকে পাঠানো হয়েছিল।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৬ মার্চ ২০২৩ ০৭:২৫
Manish Kothari.

রাউস অ্যাভিনিউ কোর্ট মণীশ কোঠারিকে সোমবার পর্যন্ত ইডি-র হেফাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়ার পরে এজলাসের বাইরেই কান্নায় ভেঙে পড়লেন তাঁর স্ত্রী। কেঁদে ফেললেন মণীশও। বুধবার নয়াদিল্লিতে। নিজস্ব চিত্র

রাউস অ্যাভিনিউ কোর্টে এজলাস থেকে বেরোনোর পরেই মণীশ কোঠারির স্ত্রী তাঁকে জড়িয়ে ধরে ঝরঝর করে কেঁদে ফেলেছিলেন। জেলবন্দি তৃণমূল নেতা অনুব্রত মণ্ডলের হিসাবরক্ষক মণীশের চোখেও জল চলে এল। কান্না ভেজা গলায় বললেন, ‘‘আমি কিচ্ছু করিনি। কোনও ভুল করিনি। আমার একমাত্র ভুল চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট (সিএ) হওয়া।’’

মণীশের দাবি তিনি কোনও ভুল করেননি। কিন্তু এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি) মণীশকে গ্রেফতারের পরে আদালতে পেশ করে অভিযোগ করল, বীরভূমের তৃণমূলের জেলা সভাপতি অনুব্রতের হয়ে তিনিই গরু পাচারের কালো টাকা সাদা করেছেন।

মঙ্গলবার সন্ধ্যায় দিল্লিতে ইডি-র সদর দফতরে দিনভর জিজ্ঞাসাবাদের পরে মণীশকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। বুধবার সকালে অনুব্রতের মেয়ে সুকন্যা মণ্ডলকে ইডি-র দফতরে ডেকে পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু মণীশের গ্রেফতারির পরে সুকন্যা আজ ইডি-র সমন এড়িয়েছেন। আইনজীবী মারফত ইডি-র দফতরে ই-মেল করে হাজির না-হওয়ার কারণ জানান তিনি। ইডি সূত্রের খবর, শারীরিক অসুস্থতার কারণে তিনি আসতে পারছেন না বলে জানিয়েছেন সুকন্যা। তবে কয়েক দিনের মধ্যে ফের তাঁকে সমন পাঠানো হবে। অনুব্রত আগামী ২১ মার্চ পর্যন্ত ইডি-র হেফাজতে। এর মধ্যেই বাবা-মেয়েকে একসঙ্গে জিজ্ঞাসাবাদ করতে চায় তদন্তকারী সংস্থা। সূত্রের খবর, শক্তিগড়ে একটি রেস্তরাঁয় এক টেবিলে অনুব্রতের সঙ্গে দেখতে পাওয়া তৃণমূলকর্মী কৃপাময় ঘোষকেও দিল্লিতে তলব করেছে ইডি।

ইডি-র আইনজীবী নীতেশ রাণা আজ রাউস অ্যাভিনিউ কোর্টে দাবি করেছেন, অনুব্রত জিজ্ঞাসাবাদের সময় জানিয়েছেন, তাঁর টাকা-সম্পত্তি কোথায় কী ভাবে কাজে লাগানো হয়েছে, সবই মণীশ জানেন। তিনিই গরু পাচারের টাকা নিয়ে আর্থিক নয়ছয় করেছেন। তার জন্য দু’টি ভুঁইফোড় সংস্থা খুলেছিলেন মণীশ। সেখানে বাড়ির পরিচারক, অন্য কর্মীদের কাগজে-কলমে ডিরেক্টর করা হয়েছিল। অনুব্রতের পাশাপাশি, তাঁর দেহরক্ষী সেহগাল হোসেনের কালো টাকা-সম্পত্তিও মণীশই সাদা করতেন। কিন্তু জিজ্ঞাসাবাদের সময় উত্তর এড়িয়ে যাচ্ছেন। তাই সাত দিনের জন্য মণীশকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের প্রয়োজন। বিশেষ সিবিআই আদালতের বিচারক রঘুবীর সিংহ সোমবার পর্যন্ত তাঁকে ইডি-র হেফাজতে রাখার অনুমতি দেন।

মণীশের আইনজীবী রাজা চট্টোপাধ্যায় এবং সঞ্জীব দাঁ ইডি-র কেন গ্রেফতারির প্রয়োজন পড়ল, তা নিয়েই প্রশ্ন তুলেছেন। রাজা বলেন, ‘‘মণীশকে যত বার ডাকা হয়েছে, তত বারই তদন্তকারীদের মুখোমুখি হয়েছেন। প্রয়োজনে সব প্রশ্নের উত্তর দিতে তৈরি। তিনি শুধু চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। গরু পাচারকারীদের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক নেই।’’ রাজার অনুরোধে বিচারক সাত দিনের বদলে মণীশকে পাঁচ দিন ইডি-র হেফাজতের নির্দেশ দেন। তবে রবিবার পাঁচ দিনের হেফাজত শেষ হচ্ছে বলে সোমবার তাঁকে ফের আদালতে তোলা হবে। অনুব্রত কি তাঁর উপরেই সব দোষ চাপিয়ে দিতে চাইছেন? মণীশ এর কোনও উত্তর দেননি। ইডি-র ভুঁইফোড় সংস্থা বা ‘শেল কোম্পানি’ খোলার অভিযোগে তাঁর যুক্তি, ‘‘আইনে শেল কোম্পানি বলে কিছু হয় না।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Manish Kothari Anubrata Mondal

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy