Advertisement
০৬ মে ২০২৪
Duarey Sakar

Duarey Sarkar: ‘দুয়ারে সরকার’: লক্ষ্য আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি আদায়ও

আন্তর্জাতিক আঙিনায় এই প্রকল্পের সাফল্য তুলে ধরার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে কয়েক জন সিনিয়র অফিসারকে।

ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র।

চন্দ্রপ্রভ ভট্টাচার্য
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ০৭:০৩
Share: Save:

রাজ্য সরকারির দাবি, ‘কন্যাশ্রী’ প্রকল্পের জন্য স্বীকৃতি এসেছে ইউনিসেফের ঘর থেকে। এ বার ‘দুয়ারে সরকার’ প্রকল্পের জন্যও আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি আদায়কে পাখির চোখ করে কোমর বাঁধছে নবান্ন।

প্রশাসনিক সূত্রে খবর, এই লক্ষ্যে এক দিকে, প্রকল্পে সুবিধা পাওয়া সাধারণ মানুষের (উপভোক্তা) সার্বিক তথ্যভান্ডার তৈরির উপরে জোর দেওয়া হচ্ছে। অন্য দিকে, আন্তর্জাতিক আঙিনায় এই প্রকল্পের সাফল্য তুলে ধরার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে কয়েক জন সিনিয়র অফিসারকে। সূত্রের খবর, এই জোড়া প্রস্তুতির নির্দেশ গিয়েছে প্রশাসনের শীর্ষমহল থেকে।

কেন এমন উদ্যোগ?

প্রশাসনের অন্দরমহল জানাচ্ছে, সম্প্রতি বিশ্বব্যাঙ্ক জানিয়েছে, সামাজিক সুরক্ষার প্রকল্পগুলি আরও ভাল ভাবে চালাতে রাজ্যকে প্রায় এক হাজার কোটি টাকা ঋণ দেবে তারা। তবে বিশ্বব্যাঙ্কের সুপারিশ, সরকারি প্রকল্পগুলির যথাযথ প্রচার, সামাজিক অডিট (প্রকৃত উপভোক্তাদের কাছেই সুবিধা পৌঁছচ্ছে কি না, তা খতিয়ে দেখা), মেয়েদের কাজের ব্যবস্থা এবং প্রকল্পগুলির উপরে পর্যাপ্ত নজরদারি নিশ্চিত করতে হবে। সংশ্লিষ্ট মহলের দাবি, এই সব শর্তই মানা হয়েছে বলেই ঋণ দানে আগ্রহ। এর সঙ্গে বিশ্ব মানের স্বীকৃতি ঝুলিতে থাকলে, আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে সুলভে ঋণ কিংবা অনুদান পাওয়ার সুবিধা হয় বলে ধারণা অনেকের।

এর প্রস্তুতি হিসাবেই অন্যতম পদক্ষেপ তথ্যভান্ডার। ‘দুয়ারে সরকার’-এর শিবিরে আসা মানুষের সংখ্যা, তাঁদের পারিবারিক তথ্য, আর্থিক অবস্থা, লিঙ্গ বিন্যাস, জাতিগত পরিচিতির মতো বিভিন্ন তথ্য নথিবদ্ধ করতে হবে জেলা প্রশাসনগুলিকে। সব জেলা থেকে নেওয়া সেই তথ্য দিয়ে তৈরি হবে একটি সার্বিক তথ্যভান্ডার। প্রশাসনিক কর্তাদের একাংশ জানাচ্ছেন, এতে বোঝা যাবে, সমাজের কোন অংশের কত মানুষ প্রকল্পের সুবিধা পেতে আগ্রহী। যাঁদের জন্য প্রকল্প, তাঁরাই তা পাচ্ছেন কি না। এক কর্তার কথায়, “প্রকল্প বা কর্মসূচির আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পেতে এ ধরনের তথ্যভান্ডার প্রয়োজন। ঠিক যেমন হয়েছিল কন্যাশ্রীর ক্ষেত্রে।”

জেলা প্রশাসনগুলির একাংশের মতে, প্যান্ডেল, কম্পিউটার-প্রিন্টার ভাড়া করা, তথ্য নথিবদ্ধ করার কর্মীদের ভাতা ইত্যাদি খাতে খরচ গ্রাম পঞ্চায়েত পিছু খুব কম করে এক লক্ষ টাকা। রাজ্যে প্রায় ৩৫০০ গ্রাম পঞ্চায়েত রয়েছে। ফলে দুয়ারে সরকারের একটি দফায় কমবেশি ৩৫ কোটি টাকা খরচ হয়। গত বছর তিনটি দফায় দুয়ারে সরকার কর্মসূচি হয়েছে এবং চলতি মাসে এক দফায় এই কর্মসূচি হবে। ফলে চার দফা মিলিয়ে ওই হিসেবে মোট খরচ প্রায় দেড়শো কোটি টাকার মতো। আবার আর এক অংশের মতে, মোট খরচ ১০০ কোটি টাকার আশেপাশে।

তবে এক কর্তার বক্তব্য, “পরিষেবা প্রদান এবং উপযোগিতার নিরিখে এই খরচ কমই। শুধু লক্ষ্মীর ভান্ডার প্রকল্পেই এ পর্যন্ত প্রায় দেড় কোটি উপভোক্তাকে প্রায় ৪১০০ কোটি টাকার সুবিধা দেওয়া গিয়েছে। ফলে কর্মসূচির কার্যকারিতা দাবি করতেই পারে রাজ্য।” আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি মিললে, পরে ভোট-প্রচারেও যে তা অস্ত্র হতে পারে, সেই সম্ভাবনাও একেবারে উড়িয়ে দিচ্ছেন না অনেকে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Duarey Sakar
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE